সিবিআই আধিকারিকদের উপরে হামলা। রবিবার বিহারের নওয়াদা জেলায়। ছবি: সংগৃহীত।
নেট কেলেঙ্কারির তদন্তে বিহারে গিয়ে আক্রান্ত হলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। রবিবার সে রাজ্যের নওয়াদা জেলার রাজৌলি এলাকায় গেলে হামলার মুখে পড়তে হয় আধিকারিকদের। ভাঙচুর করা হয় তাঁদের গাড়ি। অভিযোগ, প্রায় ২০০ জন গ্রামবাসী ঘিরে ধরেন সিবিআই আধিকারিকদের।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুরে নেট-এর প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত তদন্তে স্থানীয় কাসিয়াডি গ্রামে গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। ছিলেন চার জন তদন্তকারী এবং নওয়াদার একটি পুলিশ ফাঁড়়ির মহিলা কনস্টেবল। কিন্তু তাঁদের নকল আধিকারিক মনে করে চড়়াও হন বেশ কয়েক জন গ্রামবাসী। ভাঙচুর চালানো হয় গাড়িতে। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, কয়েক জন গ্রামবাসী রীতিমতো সিবিআই আধিকারিকদের হুমকি দিচ্ছেন। তার পরই তাঁরা চড়াও হচ্ছেন তদন্তকারীদের উপরে। যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার জন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই এই হামলা কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণার প্রবেশিকা পরীক্ষা ইউজিসি নেট হয়। কিন্তু প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে বুধবারই পরীক্ষাটি বাতিল করা হয়। আতান্তরে পড়েন পরীক্ষার্থীরা। কেন্দ্র জানিয়ে দেয়, নেট-এ অনিয়ম সংক্রান্ত তদন্তের ভার সিবিআই-কে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রক। পরীক্ষার এক দিন পর নেট বাতিল করে দেওয়া প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, “পরীক্ষার পরের দিন বিকেল ৩টে নাগাদ আমরা জানতে পারি, ডার্ক নেটে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছিল পরীক্ষার আগেই। মূল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা হয় এবং ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে তা মিলে যায়। এর পরেই আমরা পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টেলিগ্রামের মতো অ্যাপগুলির উপর নজরদারি চালানো কঠিন। প্রশ্নফাঁসে সেই ধরনের অ্যাপই ব্যবহৃত হয়েছে। স্বচ্ছতার সঙ্গে আমরা আপস করব না।’’
অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিক বার তদন্তের কাজে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের। গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালি এবং বনগাঁয় তল্লাশি অভিযানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। কিন্তু সেখানে গিয়ে শাহজাহানের ‘অনুগামীদের’ হাতে প্রহৃত হন ইডির পাঁচ আধিকারিক। মার খেয়ে তিন আধিকারিককে হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়। অভিযোগ ছিল, শুধু মারধরই নয়, ইডি আধিকারিকদের কাছে থাকা মোবাইল, ল্যাপটপ এবং নগদ টাকাও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এই একই মামলার তদন্তে ইডির আধিকারিকেরা যখন বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যকে গাড়িতে তুলছেন, সেই সময় আশপাশে অনেকে জড়ো হন। মহিলারাও ছিলেন সেই দলে। তাঁরা ইডির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ইডির তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা বিক্ষোভকারীদের আটকাতে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যান।
ইডির পর সিবিআইয়ের উপরে এই হামলা হওয়ার ঘটনাকে প্রায় বিরল বলেই মনে করা হচ্ছে। স্নাতক স্তরে ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-এ প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগেরও তদন্তভার রয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। সেই মামলার সূত্রেও বিহারে যাওয়ার কথা তদন্তকারীদের। তার আগেই বিহারে হামলা হল তদন্তকারীদের উপরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy