প্রতীকী ছবি।
অল্পবয়সী পড়ুয়াদের মধ্যে ব্লু হোয়েল গেম যে ভাবে ‘মহামারী’ হয়ে উঠেছে, তাতে উদ্বিগ্ন দিল্লির স্কুলগুলিও এ বার অভিভাবকদের সতর্ক করতে শুরু করে দিয়েছে। ওই মারাত্মক ব্লু হোয়েল গেম কী ভাবে শিশুমনে ছাপ ফেলছে, আর তার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তা নিয়ে অভিভাবকদের সবিস্তার চিঠি পাঠাতে শুরু করেছে দিল্লির স্কুলগুলি। অভিভাবকদের কী কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তা চিঠি দিয়ে সবিস্তার জানানো হচ্ছে। কী ভাবে ছেলেমেয়েদের ওপর নজর রাখবেন অভিভাবকরা, সেই গাইডলাইনও দেওয়া হচ্ছে স্কুলগুলির তরফে।
গত সপ্তাহেই উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর জেলায় পার্থ সিংহ নামে একটি ১৩ বছরের স্কুলপড়ুয়া গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশ ওই মৃতদেহের হাত থেকে তার বাবার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে। দেখা যায়, সেই মোবাইল ফোনে ব্লু হোয়েল গেম তখনও চালু ছিল।
আরও পড়ুন- হ্যাকারদের কবলে ৭১ কোটি ইমেল আইডি, আপনারটা সুরক্ষিত তো?
আরও পড়ুন- ভুতুড়ে কণার কীর্তি আবিষ্কার, ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি রহস্যে নতুন আলো
ওই ঘটনাটির খবর টেলিভিশনে দেখেই ভয় পেয়ে যান মর্ডার্ন দিল্লি পাবলিক স্কুলের প্রিন্সিপাল উদয় ভার্মা। তাঁর কথায়, ‘‘টিভি আর কাগজে ওই ঘটনা দেখে, পড়ে আমি এতটাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে, নিজেই উদ্যোগ নিয়ে আমার স্কুলের পড়ুয়াদের মা, বাবাকে চিঠি লিখে সাবধান করতে শুরু করি।’’
সব অভিভাবককে যত দ্রুত সম্ভব সতর্ক করার জন্য পরে প্রিন্সিপাল ভার্মার সেই চিঠির ৫ হাজার প্রিন্ট আউট অভিভাবকদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাতে অভিভাবকদের সচেতনতা বাড়ানোর ওপরে যেমন জোর দেওয়া হয়েছে, তেমনই বলা হয়েছে, তাঁদের সন্তানদের সব সময় চোখে চোখে রাখতে, যাতে তারা কোনও সময়েই একা বোধ না করে। শুধু তাই নয়, ওই গেমের কথা কানে এলেই যাতে পড়ুয়ারা ভয় পেয়ে যায়, সে জন্য ছাত্রছাত্রীদেরও সতর্ক করেছেন স্কুল-কর্তৃপক্ষ।
একই ভাবে তৎপর হয়েছে দিল্লির বসন্ত কুঞ্জের হেরিটেজ স্কুলও। ওই স্কুলের কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের হুঁশিয়ার করতে তিন পাতার চিঠি পাঠিয়েছেন। তাঁদের ফোন করে করে সতর্ক করতেও শুরু করে দিয়েছেন। সেখানে ব্লু হোয়েল গেম সম্পর্কে সতর্ক করার পাশাপাশি কী ভাবে অভিভাবকদের সন্তানদের ওপর নজর রাখা উচিত, সে সম্পর্কেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেই চিঠির প্রতিলিপি স্কুলের গেটেও ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া অভিভাবকদের সচেতন করার জন্য আলাদা ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ওই স্কুলে। স্কুলের প্রিন্সিপাল সুনীতা স্বরাজ বলেছেন, ‘‘এটা করতে হয়েছে এ জন্যই যে, অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ঘরের অভিভাবকরা খেলাটার বিন্দুবিসর্গও জানতেন না। তাঁরা জানতেনই না, তাঁদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে অবস্থাপন্ন ঘরের সহপাঠীদের কাছ থেকে এই খেলাটা শিখছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy