সিয়াচেনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেনাধ্যক্ষ জেনারেল দলবীর সিংহের সঙ্গে।
নজির এক) সিয়াচেনের বরফের স্তূপে দীর্ঘ ছ’দিন বন্দিদশা কাটিয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা জওয়ানকে দেখতে ছোটখাটো কনভয় নিয়েই হাসপাতালে ছুটে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লি পুলিশও আগেভাগে টের পেল না। প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ের সঙ্গে জ্যামার ও অ্যাম্বুল্যান্সও শেষ মুহূর্তে খবর পেয়ে ছুটল নাভিশ্বাসে।
নজির দুই) গতকাল বৃন্দাবনে এক মন্দির উদ্বোধনে গিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। পরে বাঁকেবিহারী মন্দিরে সস্ত্রীক পুজো দিতে গেলেন। চাইলে ভিআইপি সুবিধা নিয়ে সোজা পৌঁছে যেতে পারতেন গর্ভগৃহে। কিন্তু যাননি। অন্য ভক্তদের মতোই লাইন দিয়ে পুজো দিয়েছেন।
অনেকটা ‘আপনি আচরি ধর্ম পরের শিখাও’-এর মতো দলের নেতা-কর্মীদের ‘ভিআইপি সংস্কৃতি’ থেকে বেরিয়ে আসারই বার্তা দিচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সভাপতি হয়েই অমিত শাহ দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সফরের সময় চার্টার্ড বিমান যতটা সম্ভব এড়িয়ে যেতে হবে। বাণিজ্যিক বিমান কিংবা রেল বা সড়কপথেই যাতায়াতকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অমিত শাহ নিজেও স্থির করেছেন, তিনিও যখন বিভিন্ন রাজ্যে সফর করবেন, সেখানে বাণিজ্যিক বিমানেই চড়বেন। নিতিন গডকড়ী দলের সভাপতি থাকার সময় চার্টার্ড বিমানে চলাই পছন্দ করতেন। সারা বছরের জন্য সেটি বুক করে রাখতেন তিনি। কিন্তু দলকে ‘ভিআইপি সংস্কৃতি’ থেকে বের করে আনতে সেই রেওয়াজও এখন বদল করেছেন অমিত শাহ।
সাধারণত প্রধানমন্ত্রী যে রাস্তা দিয়ে চলেন, সেটি ঘণ্টাখানেক আগে বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাস্তার দু’পাশে থাকে কড়া নিরাপত্তা। এক বার অরুণ জেটলি যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, সন্ধ্যার ‘পিক অফিস আওয়ার’-এ তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। গোটা দক্ষিণ দিল্লি প্রায় মাঝরাত পর্যন্ত স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল। চণ্ডীগড়ে তাঁর এক সভার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল স্কুল, এমনকী, শ্মশানঘাটও। প্রধানমন্ত্রী তার জন্য ক্ষমাও চেয়েছিলেন। পরে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজি-কে গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি না হয়।
কিন্তু আজ প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভাবে প্রোটোকল ভেঙে হাসপাতালে সিয়াচেন থেকে জীবিত ফিরে আসা জওয়ানকে দেখতে চলে গেলেন, তাতে উল্লসিত বিজেপি শিবির। দলের নেতা শাহনওয়াজ হোসেন বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী দিনরাত নিরন্তর আম আদমির কথা ভেবে কাজ করেন। তাঁর সফরের জন্য যাতে আম আদমির ভোগান্তি না হয়, সেটিও খেয়াল রাখেন। তার জন্য তিনি মেট্রোতেও অনেক বার সফর করেছেন। অন্য কিছু দলের নেতারা নিজেদের আম আদমির ধারক-বাহক বলে দাবি করলেও কার্যত তাঁরাই সব থেকে বেশি ভিআইপি সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy