কাকা পশুপতি পারস (বাঁ দিকে) এবং ভাইপো চিরাগ পাসওয়ান (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের সম্পূর্ণ উল্টো ‘কৌশল’ বিহারে নিতে চলেছে বিজেপি। সে রাজ্যে রামবিলাস পাসওয়ানের দল এলজেপি-র দুই শিবিরকে মিলিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কেন্দ্রের শাসকদলের একটি সূত্র মারফত এই খবর পাওয়া গিয়েছে। রামবিলাসের মৃত্যুর পর এলজেপি-তে ভাঙন ধরে। দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে আরজেএলপি গঠন করেন রামবিলাসের ভাই পশুপতি পারস। দলের সংখ্যালঘু গোষ্ঠী এলজেপি (রামবিলাস)-এর প্রধান হলেন রামবিলাসের পুত্র তথা পশুপতির ভাইপো চিরাগ পাসওয়ান।
প্রায় তিন বছর ধরে বিহারের এই কাকা-ভাইপোর রাজনীতি ভিন্ন খাতে বইলেও এ বার তাঁদের মিলিয়ে দিতে সক্রিয় হয়েছে বিজেপি। এর নেপথ্যে বিজেপির ভোটের অঙ্কও দেখতে পাচ্ছেন কেউ কেউ। আর এখানেই অবধারিত ভাবে এসে পড়ছে মহারাষ্ট্রের তুলনাও। গত ২ জুলাই কাকা শরদ পওয়ারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে এনসিপির সিংহভাগ বিধায়ককে নিয়ে মহারাষ্ট্রের শিবসেনা-বিজেপি জোট সরকারে যোগ দেন অজিত পওয়ার। ভাইপো অজিতের এই বিদ্রোহের নেপথ্যে বিজেপিরই হাতযশ দেখেছিলেন অনেকে। বিরোধী দলগুলির তরফেও তেমনই অভিযোগ তোলা হয়েছিল। তবে অনেকেই রসিকতা করে বলছেন, বিহারে কাকা-ভাইপোর মধ্যে বিচ্ছেদ নয়, মিলন ঘটাতে চায় বিজেপি।
২০২০ সালের বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে তৎকালীন এনডিএ-র শরিক নীতীশ কুমারের প্রকাশ্য বিরোধিতা করেন একই জোটের শরিক চিরাগ। নীতীশ-বিরোধিতার কারণেই বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি পায় তাঁর। অন্য দিকে, এই সময় ভাইপোর বিরোধিতা করে বিজেপির ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন কাকা পশুপতি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁইও হয় তাঁর। দলের ছয় সাংসদের মধ্যে পাঁচ জন সাংসদই পশুপতির উপরে আস্থা রাখেন। বিজেপির একটি সূত্রের খবর, চিরাগকে প্রায় খরচের তালিকাতেই ধরে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর জনভিত্তি সম্পর্কে ‘সজাগ’ হয় বিজেপি। তিন বছর পর এনডিএ-তে ফেরার ইঙ্গিত দেন চিরাগও। বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা তাঁকে এনডিএ-র বৈঠকে আমন্ত্রণও জানান। ১৮ জুলাই নয়াদিল্লিতে সেই বৈঠক হওয়ার আগে এনডিএ যোগদানের শর্ত হিসাবে ছ’টি লোকসভা আসন এবং রাজ্যসভা আসন চেয়েছেন চিরাগ। এলজেপি সূত্রেই এই খবর মিলেছে।
বিজেপির একটি মহল মনে করছে, নীতীশ এনডিএ ছাড়ার সঙ্গে অনেক ছোট-বড় দলকেও নিজের সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন। ফলে নীতীশের কুর্মি ভোটের পাশাপাশি দলিত এবং অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ভোটও বিহারের মহাগঠবন্ধনের ঝুলিতে যেতে পারে। তা ছাড়া বিহারের শাসক জোটে লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি থাকায় যাদব এবং সংখ্যালঘু ভোটও তাদের পক্ষে যেতে পারে। জাতপাতের এই সমীকরণ মাথায় রেখেই দলিত নেতা রামবিলাসের দলকে সঙ্গে পেতে চাইছে বিজেপি। সে ক্ষেত্রে দলিত এবং মহাদলিত ভোটের একটা বড় অংশ তাদের ঝুলিতে আসতে পারে বলে মনে করছে বিজেপি। সে কারণেই পশুপতি এবং চিরাগের মধ্যেকার রাজনৈতিক সম্পর্কের শৈত্য কাটাতে বিজেপি উদ্যোগী হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy