রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের দাবি বিতর্কিত বিজেপি সাংসদ নিশিকান্তের। ফাইল চিত্র।
মাস ছ’য়েক আগে গায়ের জোরে দেওঘর বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের ঘরে সপুত্র ঢুকে পড়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর-ও করেছিলেন। ঝাড়খণ্ডের সেই বিতর্কিত বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এ বার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের দাবি তুললেন।
ব্রিটেন সফরে গিয়ে রাহুল ‘দেশকে অপমান’ করেছেন বলে বিজেপি শিবিরের অভিযোগ। তাঁর ‘নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা’র দাবিতে ৪ দিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় নজিরবিহীন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সরকার পক্ষের সাংসদেরা। এই পরিস্থিতিতে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার বিজেপি সাংসদের দাবি, ‘‘লন্ডনে গিয়ে রাহুল গান্ধী যে মন্তব্যগুলি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, তার সত্যতা যাচাই করতে একটি কমিটি গড়া হোক। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করা প্রয়োজন।’’
এ প্রসঙ্গে ২০০৫ সালে সংসদে প্রশ্ন-ঘুষকাণ্ডের প্রসঙ্গও টেনেছেন নিশিকান্ত। সে সময় নির্দিষ্ট ব্যক্তি এবং সংস্থার থেকে টাকা নিয়ে সংসদে কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে ১১ জন সাংসদকে বরখাস্ত করেছিলেন লোকসভার তৎকালীন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়।
বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে প্রথম বারের জন্য সংসদে এসে বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন, তিনি দেশবিরোধী কোনও মন্তব্য করেননি। এমনকি, স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে দেখা করে তিনি এ বিষয়ে অধিবেশনে বলার অনুমতি চেয়েছেন বলেও ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদের দাবি।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের গোড়ায় লন্ডনে গিয়ে ব্রিটিশ সাংসদ বীরেন্দ্র শর্মার আমন্ত্রণে সে দেশের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের সাংসদের একাংশের সঙ্গে আলোচনা সভায় যোগ দিয়েছিলেন রাহুল। কথা বলতে গিয়ে তিনি দেখেন মাইক খারাপ। রাহুল তখন বলেছিলেন, ‘‘ভারতীয় সংসদে কিন্তু মাইক খারাপ হয়নি। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিতর্কের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে।’’ বিদেশের মাটিতে তাঁর এই বক্তব্যকে ‘দেশের অপমান’ বলে চিহ্নিত করেছে বিজেপি।
লন্ডনে রাহুলের মন্তব্যের পরেই লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা বাহরাইন সফরে গিয়ে কোনও নাম না করে বলেন, ‘‘ভারতের সংসদে সব সাংসদেরই নিজেদের মতামত ব্যক্ত করার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।’’ ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার রাহুলের সংসদে ‘প্রত্যাবর্তনের’ দিনেই কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী স্পিকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, গত ৩ দিন ধরে তাঁর আসনের মাইকটি বন্ধ করা রয়েছে।
কংগ্রেসের অভিযোগ, হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ গৌতম আদানির বিরুদ্ধে তোলা শেয়ার জালিয়াতি থেকে নজর ঘোরাতেই জলঘোলা করছে বিজেপি। অতীতে প্রধানমন্ত্রী মোদীও অনেক বারই বিদেশসফরে গিয়ে ঘরোয়া রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলেছেন বলেও তাদের দাবি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এক বছর পরে, ২০১৫ সালের মে মাসে চিন এবং দক্ষিণ কোরিয়া সফরে গিয়েছিলেন মোদী। চিনে তিনি বলেন, ‘‘এক বছর আগেও ভারতীয় হিসাবে পরিচয় দিতে লজ্জা হত।’’ সে সময় কংগ্রেস, ন্যাশনাল কনফারেন্স-সহ একাধিক বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমাপ্রার্থনার দাবি তুললেও তাতে কর্ণপাত করেননি বিজেপি নেতৃত্ব।
অভিযোগ, সে বছরেরই অগস্ট মাসে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আয়োজিত বাণিজ্য সম্মেলেন প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর পূর্বসূরি মনমোহন সিংহকে খোঁচা দিয়ে মোদী বলেছিলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমি একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাহীন এবং অলস সরকারের উত্তরাধিকারী হয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy