Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

পুরুষরাও পীড়িত! তাই কি তাঁদের জন্য কমিশন?

বিজেপির সেই সাংসদ হরিনারায়ণ রাজভর আজ ফের বলেছেন, একটি পুরুষ কমিশন চাই। প্রধানমন্ত্রীর কাছেও তিনি সেই দাবি তুলতে চান। রাজভরের সুরে সুর মিলিয়ে এগিয়ে এসেছেন বিজেপিরই আর এক সাংসদ আনসুল বর্মা।

হরিনারায়ণ রাজভর।

হরিনারায়ণ রাজভর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১৮
Share: Save:

মহিলা কমিশন আছে, পুরুষ কমিশন নেই কেন? স্ত্রীর হাতে পুরুষেরা কী নিপীড়িত হন না?

সংসদে উত্তরপ্রদেশের বিজেপির এক সাংসদের এই মন্তব্যে সে দিন হো-হো করে হেসেছিলেন সাংসদরা।

কিন্তু এই দু’দিন আগেই তো বারাণসীর ঘাটে প্রাক্তন স্ত্রীদের ‘অন্ত্যেষ্টি’ করেছেন প্রায় জনা দেড়শো পুরুষ। গঙ্গায় পিণ্ডদান হয়েছে। যাঁদের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়েছে। ‘পিশাচিনী মুক্তি পুজো’ও করেছেন অনেকে।

বিজেপির সেই সাংসদ হরিনারায়ণ রাজভর আজ ফের বলেছেন, একটি পুরুষ কমিশন চাই। প্রধানমন্ত্রীর কাছেও তিনি সেই দাবি তুলতে চান। রাজভরের সুরে সুর মিলিয়ে এগিয়ে এসেছেন বিজেপিরই আর এক সাংসদ আনসুল বর্মা।

রাজভরের অবশ্য নিজের কোনও সমস্যা নেই। স্ত্রী, তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়েকে নিয়ে সুখের সংসার। কিন্তু চারপাশে পুরুষদের উপর অত্যাচারের ঘটনা দেখছেন নিরন্তর। তাই আজ ফের বলেছেন, ‘‘পুরুষদেরও একটি মঞ্চ দরকার। স্ত্রীর হাতে তাঁদেরও নিপীড়ন হয়। কেন তাঁরা ন্যায্য বিচার পাবেন না?’’

তাই বলে সব মহিলাই ভুল কিংবা সব পুরুষই ভুল, এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছাননি নরেন্দ্র মোদীর দলের সাংসদ। কিন্তু নিপীড়নের কোনও বৈষম্য থাকা উচিত নয়, সেই বিতর্কটিই তিনি উস্কে দিতে চাইছেন।

কিন্তু দেশজুড়ে ঘরে ও বাইরে যে ভাবে মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বাড়ছে, তাতে পুরুষদের জন্য পৃথক কমিশন গঠনের কোনও প্রয়োজনীয়তা দেখছে না জাতীয় মহিলা কমিশন। কমিশনের প্রধান রেখা শর্মার মতে, মহিলাদের ন্যায় দেওয়ার জন্য মহিলা কমিশন তৈরি হয়েছে। কেউ যদি পুরুষদের জন্য পৃথক কমিশনের দাবি তোলেন, সে অধিকার রয়েছে। কিন্তু এমন কোনও কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করি না।’’

বারাণসীর ঘাটে প্রাক্তন স্ত্রীদের অন্ত্যেষ্টি আয়োজনের পিছনে অনেক সংস্থার মধ্যে অন্যতম ‘সেভ ইন্ডিয়ান ফ্যামিলি ফাউন্ডেশন’। পুরুষদের উপর অত্যাচার নিয়ে তাঁরা এক দশকের বেশি সক্রিয়। সেই সংস্থারই সদস্য অনিল কুমার আজ জানালেন, ‘‘পুরুষরাও নিপীড়িত! শুনলেই যেন মনে হয় একটি ঠাট্টার বিষয়। কিন্তু আদপে তা নয়। নরেন্দ্র মোদী বা রাহুল গাঁধীর দল, কেউই এই বিষয়টি নিয়ে সচেতন নয়। পুরাণেও পুরুষদের উপর নিপীড়নের নজির আছে, কেউ সেটি নজরে আনতেই চায় না। আর পুরুষদের জন্য কমিশন? সে তো বড় বিষয়। তার আগে মৌলিক সমস্যাগুলি দূর করা প্রয়োজন।’’

কী ভাবে?

সংগঠনের মতে, মহিলাদের উপর অত্যাচার কেউ অস্বীকার করছে না। কিন্তু পণ নিয়ে মামলা ঠুকে স্বামী ও তাঁর পরিবারকে বিপদে ফেলার নজির ভুরিভুরি। অন্তত আইন করে কিছু তো সুরাহা দেওয়া হোক। তাঁদের আরও দাবি, কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার শিকার মহিলাদের মতো পুরুষদেরও হতে হয়। আইনে তারও সুরাহা হোক। পথে ঘাটে মহিলারাও যে পুরুষদের হেনস্থা করেন, তারই বা বিচার কোথায়? সব আইনই কেন শুধুই মহিলাদের পক্ষেই হবে?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE