ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার। ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের ভোটে খোদ প্রধানমন্ত্রীও প্রচারে গিয়ে ত্রিপুরার উদাহরণ তুলে ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকারের কথা বলছেন বারবার। কিন্তু খাস ত্রিপুরাতেই সরকারি চাকরির আউটসোর্সিং নিয়ে এ বার নিজেদের দলের বিধায়কদেরই তোপের মুখে পড়ল বিজেপি।
গত শুক্রবার বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে বিজেপির দুই বিধায়ক আশিস সাহা ও সুদীপ রায়বর্মন আউটসোর্সিং প্রশ্নে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন। সম্প্রতি বামপন্থী-সহ বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও সরকারি চাকরির আউটসোর্সিং বাতিলের দাবি তুলেছে। শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বিধানসভায় জানিয়েছেন, ত্রিপুরায় সরকারি দফতরে স্থায়ী পদে নিয়োগে আউটসোর্সিং করা হবে না। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। শেষে নিয়মিত পদে আউটসোর্সিং প্রথায় লোক নিয়োগ করা হবে না, বিধানসভায় এই মর্মে প্রস্তাব পাশ করা হয়।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জনশক্তি ও কর্মবিনিয়োগ দফতর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে লোক নিয়োগের জন্য পাঁচটি এজেন্সিকে টেন্ডার দেওয়ার কথা বলে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে পাঁচটি তালিকাভুক্ত এজেন্সিকে চিকিৎসক, স্টেনোগ্রাফার, খাদ্য পরিদর্শক এবং আইসিডিএস সুপারভাইজ়ার-সহ ৮৬টি বিভাগের কর্মী নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের পরেই রাজ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
শুক্রবার বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে বিধায়ক আশিসকুমার সাহা রাজ্য সরকার অনুমোদিত সরাসরি নিয়োগযোগ্য নিয়মিত বেতনক্রমের প্রতিটি শূন্য পদের নিযুক্তি প্রক্রিয়ায় গতি আনার পাশাপাশি এই সব শূন্য পদে এজেন্সির মাধ্যমে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় লোক নিয়োগ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে প্রস্তাব আনেন। প্রস্তাবকে সমর্থন করে বক্তব্যও রাখেন তিনি। পাশাপাশি, বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণ, রতন চক্রবর্তী, নির্মল বিশ্বাস এবং রঞ্জিত দাস বক্তব্য রাখেন। সকলেই সরকারি চাকরির আউটসোর্সিং প্রথার তীব্র বিরোধিতা করেন। বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণ আগের সরকার এবং বর্তমান সরকারের নিয়োগ সংক্রান্ত নানা তথ্য তুলে ধরেন। তিনি দাবি জানান, আউটসোর্সিং সংক্রান্ত ওই বিজ্ঞপ্তি বাতিল করা হোক। কারণ, তাতে প্রচুর ত্রুটি রয়েছে। বিজ্ঞপ্তিটি ত্রিপুরা সরকারের নিয়োগ নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশও লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে
জানান তিনি।
সুদীপবাবু বিধানসভায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী দাবি করছেন রাজ্য সরকার নাকি প্রায় ২৩ হাজার ব্যক্তিকে চাকরি দিয়েছেন। অথচ শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল আউটসোর্সিং-এর পক্ষে সওয়াল করে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার এই তিন বছরে ৭,৫৫১ জনকে চাকরি দিয়েছেন। একই মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রীর দু’রকম তথ্য দিচ্ছেন কেন?
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা সরকারি দফতরে স্থায়ী পদে নিয়োগে আউটসোর্সিং করছে না এবং আগামী দিনেও করবে না। অতীতে আউটসোর্সিং-এ যে প্রক্রিয়ায় নিয়োগ হয়েছে, সেই পদ্ধতিই জারি রয়েছে। শুধু নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনা হয়েছে। তিনি আশ্বস্ত করেন, ওই বিজ্ঞপ্তিতে সামান্য ত্রুটি ছিল। ইতিমধ্যে মুখ্যসচিবকে ত্রুটি সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, সম্পূর্ণ বিষয় না জেনেই ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy