Advertisement
E-Paper

নেহরুর সমালোচনা, বাংলাকে খোঁচা শাহের

দু’দিন ধরে আলোচনায় জম্মু-কাশ্মীরে দ্রুত বিধানসভা নির্বাচন করিয়ে দ্রুত রাজ্যের মর্যদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেন অধিকাংশ বিরোধী সাংসদ। শাহ জানিয়ে দেন, উপযুক্ত সময়ে সেখানে নির্বাচন হবে।

Amit Shah.

অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:১০
Share
Save

অতীতেও যখনই জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তখনই তাঁকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বিজেপি। আজও ব্যতিক্রম হল না সেই কৌশলের। আজ লোকসভায় জম্মু-কাশ্মীর সংশোধিত পুনর্গঠন বিল ও জম্মু-কাশ্মীর সংরক্ষণ বিল নিয়ে আলোচনাতেও ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর কাশ্মীর নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলল সরকার পক্ষ। বিল নিয়ে আলোচনায় কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য নেহরুর দু’টি ভুলকেই দায়ী করে আজ সরব হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

দু’দিন ধরে আলোচনায় জম্মু-কাশ্মীরে দ্রুত বিধানসভা নির্বাচন করিয়ে দ্রুত রাজ্যের মর্যদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেন অধিকাংশ বিরোধী সাংসদ। শাহ জানিয়ে দেন, উপযুক্ত সময়ে সেখানে নির্বাচন হবে। তাঁর দাবি, ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরেই উপত্যকায় পরিকাঠামোগত উন্নতি করা সম্ভব হয়েছে। তৈরি হয়েছে আইআইটি, আইআইএম, এমসের মতো প্রতিষ্ঠান। তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায়ের মন্তব্য, ‘‘সেই উন্নতি তো ৩৭০ ধারা থাকলেও করা যেত!’’ জবাবে শাহ বলেন, ‘‘এখন আপনি বুঝবেন না দাদা। যখন আমাদের সরকার বাংলায় হবে, তখন উন্নয়ন হবে। তখন বুঝতে পারবেন।’’ পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, ‘‘৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পরে জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি ফিরে আসে। সেই কারণে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ দ্রুত করা সম্ভব হয়েছে।’’

অমিত আজ বলেন, স্বাধীনতার পরে কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের যে লড়াই হয়, তাতে সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল ভারত। আর তিন দিন সময় পেলেই পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের জমি ভারতীয় ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত হত। শাহের অভিযোগ, ‘‘তা না করে নেহরু আচমকাই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে দেন। ফলে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জন্ম হয়। না হলে আজ ওই ভূখণ্ড ভারতের অধিকারে থাকত। দ্বিতীয় ভুল, কাশ্মীর সমস্যাকে রাষ্ট্রপুঞ্জের কোর্টে পাঠিয়ে দেওয়া।’’ শাহ বলেন, ‘‘ওই দু’টি সিদ্ধান্তকে নেহরুপন্থার বিপর্যয় হিসেবে বলা হয়, আমি তা সমর্থন করি। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, নেহরুর ওই ভুলগুলির কারণেই কাশ্মীরকে এত দীর্ঘ সময় ধরে ভুগতে হয়েছে।’’

নেহরুর নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে আক্রমণ শানানোয় আজ কক্ষত্যাগ করেন কংগ্রেসের নেতারা। যা দেখে বিজেডির সাংসদ ভ্রাতৃহরি মাহতাব কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আপনার তো নেহরুর ‘হিমালয়ান ব্লান্ডার’ নিয়েও বলা উচিত ছিল।’’ রাজনীতির অনেকের মতে, ওই কথা বলে নেহরুর চিন নীতির ব্যর্থতাকে খুঁচিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। শাহ হেসে বলেন, ‘‘দু’টি বিপর্যয়ের কথা বলাতেই কংগ্রেস সাংসদেরা ওয়াক আউট করেছেন। হিমালয়ান ব্লান্ডার নিয়ে মুখ খুললে ওঁরা তো সাংসদ পদ থেকেই ইস্তফা দিতেন।’’ কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি পরে বলেন, ‘‘নেহরুর যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত তথ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোথা থেকে পেয়েছেন জানি না। কিন্তু ইতিহাস বলে, নেহরু যা করেছিলেন তা সেনার পরামর্শ মেনে করেছিলেন।’’

গতকাল থেকে লোকসভায় শুরু হয়েছে জম্মু-কাশ্মীর সংক্রান্ত ওই দু’টি বিল নিয়ে আলোচনা। জম্মু-কাশ্মীর সংশোধিত পুনর্গঠন বিলে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার আসনসংখ্যা ৮৩ থেকে বাড়িয়ে ৯০ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিলে যাযাবর গোষ্ঠী থেকে দু’জন (যাঁদের এক জন মহিলা) ও পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন এমন এক জন—মোট তিন জন ব্যক্তিকে মনোনীত করবেন উপরাজ্যপাল। আর জম্মু-কাশ্মীর সংরক্ষণ বিলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মহিলা বিশেষ করে তফসিলি জাতি ও জনজাতির সমাজের নারীদের শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ দু’টি বিলই আজ পাশ হয়ে যায়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Amit Shah BJP

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}