মূল্যবৃদ্ধি, গন্ডার-হত্যা, বন্যা ও ভূমিক্ষয়ের ধাক্কা পুরো সামলানো যায়নি। শিক্ষকদের আন্দোলন, আত্মহত্যা চলছে। এইমস গড়া, তৈলক্ষেত্র নিলাম, বৃহৎ নদী বাঁধ তৈরি, বাংলাদেশি সমস্যা নিয়ে বিতর্ক প্রবল। এত কিছু সঙ্গী করেই আজ একশো দিনে পা দিল বিজেপি তথা সর্বানন্দ সোনোয়ালের সরকার। আর এর উপরে দাঁড়িয়েই দিসপুর ও দিল্লিতে চলছে মন্ত্রীদের কাজের সাফল্য-ব্যর্থতার পর্যালোচনা। অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর মতে, ১০০ দিনের মধ্যে আগের সরকারের তুলনায় অনেক ভাল ও ইতিবাচক কাজই করেছে বিজেপি সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী আজ জানান, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর, প্রথম বারের জন্য মাজুলিতে বসবে মন্ত্রিসভার বৈঠক। রাজ্য প্রশাসনের কোনও স্তরে সহ্য করা হবে না অপরাধ ও দুর্নীতি। পুরো প্রশাসনিক প্রক্রিয়া হবে স্বচ্ছ।
দূরদর্শনে একশো দিন পূরণ উপলক্ষে জনতার দরবারে হাজির হন সোনোয়াল। হিন্দু বাংলাদেশি সমস্যা ও এনআরসি নিয়ে সোনোয়াল জানান: বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্তান থেকে আসা অত্যাচারিত মানুষদের মানবিকতার স্বার্থেই আশ্রয় ও নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু তার জের নাগরিক পঞ্জি নবীকরণে পড়বে না। এনআরসির কাজ শেষ হলে ভূমিপুত্র, বহিরাগত ও বিদেশির বিভাজন তথা চিহ্নিতকরণ স্পষ্ট হয়ে যাবে। তখন বিদেশি শরণার্থীদের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের নিয়ম মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পশ্চিম সীমান্তের মতো ধুবুরি, কাছাড়, করিমগঞ্জে উন্নত প্রযুক্তির কাঁটাতারের বেড়া বসানোর জন্য সেনাবাহিনীকে অনুরোধও করা হয়েছে।
তৈলক্ষেত্র নিলাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান তৈলক্ষেত্রগুলি থেকে অয়েল ও ওএনজিসি মাত্র সাড়ে ৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল তোলে। কিন্তু শোধনাগারগুলিতে প্রয়োজন হয় সাত মিলিয়ন মেট্রিক টন তেল। তাই বাইরে থেকে তেল আনতে হয়। অতিরিক্ত তেল পেতেই তৈলক্ষেত্র নিলামে তোলা হচ্ছে।’’ মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তাঁর কথা, ‘‘দাম বাড়া রুখতে জেলাশাসকদের সরেজমিনে বাজার ঘোরা, খাদ্য দফতরকে বিভিন্ন পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অসমে তেমন মূল্যবৃদ্ধিও হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। তিনি জানান, গত একশো দিনে পঞ্চায়েত থেকে জেলাস্তর হয়ে দিসপুর পর্যন্ত একটা কার্যকর যোগসূত্র গড়ে উঠেছে। তার ফলেই বন্যার সময় সব দফতর সুসংহত ভাবে কাজ করেছে। দশ জনের মন্ত্রিসভা বরাক-ব্রহ্মপুত্রেরসার্বিক বিকাশে নিরলস কাজ করছে।
কিন্তু বিরোধী দল কংগ্রেস সরকারের দাবি উড়িয়ে জানায়, গত ১০০ দিনে ভ্যাট বাড়িয়ে ১৩২টি নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। অসম বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা হারিয়েছে। ২৩টি জেলার ১৩ লক্ষ মানুষ বন্যাক্রান্ত হলেও কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা পাত্তা দেননি। অন্যায় ভাবে রাজ্যের তৈলক্ষেত্র বহুজাতিক সংস্থার হাতে তুলে দিচ্ছে বিজেপি। টাকার অভাবে থমকে এনআরসির কাজ। হিন্দু বাংলাদেশিকে আশ্রয় দেওয়া ও সম্পত্তি ক্রয়ের অধিকার দিয়ে অসমবাসীকে প্রতারিত করছে বিজেপি। ডিটেনশন শিবির তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। বিদ্যালয় অধিগ্রহণ, শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ী করা, গন্ডার হত্যা রোধ, বিটিএডিকে বিশেষ প্যাকেজ দেওয়া-সহ সব বিভাগেই ব্যর্থ সরকার।
বরাকবাসীর মনেও বিস্তর ক্ষোভ বিজেপিকে নিয়ে। বরাকের প্রধান সমস্যা রাস্তার বেহাল দশা। বরাকের বিধায়ক পরিমল শুক্লবৈদ্যকে পূর্ত মন্ত্রী করায় আশাবাদী হয়ে ওঠেন বরাকবাসী। কিন্তু তাঁদের ক্ষোভ, ১৫ জন বিধায়ক, ২ সাংসদ, ডেপুটি স্পিকার ও খোদ পূর্তমন্ত্রী বরাকের প্রতিনিধিত্ব করলেও একশো দিনে বরাক তেমন ভাবে উন্নতির মুখ দেখেনি। পরিমলবাবু হাতে থাকা পূর্ত, মীন ও আবগারি দফতরের খতিয়ান তুলে ধরে দাবি করেন, বিভাগগুলিতে কাজের পরিবেশ ফিরেছে। খারাপ পথঘাটের মেরামতি শুরু হয়েছে। তিনটি বিভাগে দুর্নীতিগ্রস্ত কর্তা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। হাতে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন প্রকল্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy