Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

রাষ্ট্রপতির কনভয়ের দিকে হাত তুলে পুরস্কার

গত শনিবারের এই ঘটনা হয়তো আর সকলের অগোচরেই থেকে যেত। ডিজিটাল যুগে ভিভিআইপি সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার এই ঘটনা সকলের নজরে চলে আসে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে। দ্রুত বেঙ্গালুরুবাসীর হৃদয় জিতে নেন নিজলিঙ্গাপ্পারা। ভিআইপি সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে নরেন্দ্র মোদী সরকার গাড়িতে লালবাতির ব্যবহারে ইতি টেনেছেন।

এমএল নিজলিঙ্গাপ্পা

এমএল নিজলিঙ্গাপ্পা

সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ০৩:৩৪
Share: Save:

বিমানবন্দর থেকে রাজভবনের দিকে যাবে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কনভয়। ব্যস্ত রাস্তায় মসৃণ ভাবে পথ করে দিতে হবে। সে ভাবেই প্রস্তুত ছিলেন এমএল নিজলিঙ্গাপ্পা ও বিশ্বনাথ রাও। কনভয়ের পাইলট কার তখন চলে এসেছে কয়েকশো মিটারের মধ্যে। এরই মধ্যে ভিড়ের রাস্তায় পথ করে নিয়ে কাছের হাসপাতালটিতে পৌঁছতে চাইছে একটি অ্যম্বুল্যান্স। ৩৮ বছরের অভিজ্ঞতা। পুরোটা দেখে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কয়েক মুহূর্তের বেশি নেননি প্রবীণ ট্রাফিক সাব-ইনস্পেক্টর নিজলিঙ্গাপ্পা। দ্রুত হাত তুলে দেন পাইলট কারের দিকে! পাশে দাঁড়ানো নবীন সহকর্মী, ট্রাফিক কনস্টেবল বিশ্বনাথ রাও-ও বাড়িয়ে দেন সহযোগিতার হাত। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেখান দিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যায় অ্যাম্বুল্যান্সটি। থামতে হয়নি রাষ্ট্রপতির কনভয়কেও।

গত শনিবারের এই ঘটনা হয়তো আর সকলের অগোচরেই থেকে যেত। ডিজিটাল যুগে ভিভিআইপি সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার এই ঘটনা সকলের নজরে চলে আসে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে। দ্রুত বেঙ্গালুরুবাসীর হৃদয় জিতে নেন নিজলিঙ্গাপ্পারা। ভিআইপি সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে নরেন্দ্র মোদী সরকার গাড়িতে লালবাতির ব্যবহারে ইতি টেনেছেন। কিন্তু গোটা দেশের মানসিকতা যে রাতারাতি বদলে গিয়েছে, এমনটা নয়। এরই মধ্যে, ঠিক দিশায় পদক্ষেপ করার জন্য ওই দু’জন ট্রাফিক পুলিশের প্রশংসায় টুইটার-ফেসবুকে উচ্ছ্বসিত বহু মানুষ।

আরও পড়ুন: পাশে শিবসেনাও, নিশ্চিন্ত রামনাথ

সকলেরই এক রায়, ঠিক সময়ে ঠিক কাজটিই করেছেন এঁরা। কেউ লিখেছেন, ‘ভারতের মতো দেশে এটা এক বিশাল সিদ্ধান্ত।’ কারও টুইটে প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রতিধ্বনি, ‘প্রত্যেক ভারতীয়ই ভিআইপি।’ অনেকে মনে করিয়ে দেন, ভিআইপি-র কনভয়ে আটকে অতীতে রোগীর মৃত্যুও হয়েছে। ঠিক আচরণের জন্য পুরস্কৃত করা উচিত এই দু’জনকে।

জনতার রায়কে মর্যাদা দিতে দেরি করেননি বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার প্রবীণ সুদ। জানিয়েছেন, এমন ডিউটিতে সাধারণত উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদেরই রাখা হয়। সে দিন তার সুযোগ ছিল না। কিন্তু নিজলিঙ্গাপ্পা ও রাও ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। এবং সময় মতো কর্তৃপক্ষকে সব জানিয়েছেন। পুলিশ কমিশনারের কথায়, ‘‘আমরা ওঁদের কাজের প্রশংসাই শুধু করছি না, তাঁদের নগদ পুরস্কারও দেওয়া হচ্ছে। এতে গোটা বাহিনীর কাছে এই বার্তা যাবে যে, এটা ঠিক কাজ।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE