অযোধ্যা মামলায় নয়া মোড়। —ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণা বাকি এখনও। তার আগেই অন্য মোড় নিল অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলা। জমির দাবি ছাড়ার প্রস্তাবে একেবারেই সায় নেই বলে এ বার জানিয়ে দিল অযোধ্যা মামলায় মুসলিম পক্ষের একাংশ। তাদের দাবি, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড যে প্রস্তাব দিয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে, তাতে হতবাক তারা।
মুসলিম পক্ষের প্রতিনিধিদের দাবি, শীর্ষ আদালত নিযুক্ত মধ্যস্থতাকারী কমিটির সঙ্গে তাঁদের কোনও সমঝোতাই হয়নি। যদি হয়ে থাকে তা একমাত্র সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের সঙ্গে। কিন্তু শর্তসাপেক্ষে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বোর্ডের কোনও সমঝোতা হলেও, তা সংবাদমাধ্যমে কীভাবে ফাঁস হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। ইচ্ছাকৃত ভাবেই বিষয়টি ফাঁস করা হয়ে থাকতে পারে বলে দাবি তাঁদের।
এর আগে, বুধবার বন্ধ খামে একটি রিপোর্ট জমা দেয় সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত মধ্যস্থতা কমিটি। ওই রিপোর্টে বিতর্কিত জমির দাবি ছাড়তে রাজি হয়েছে সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড। মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে অন্যতম শ্রীরাম পঞ্চুর মাধ্যমে একটি চিঠি দিয়ে নিজেদের মতামত জানিয়েছে তারা। কিন্তু এ দিন একটি বিবৃতি প্রকাশ করে সেই দাবি খারিজ করেন অযোধ্যা মামলায় মুসলিম পক্ষের আবেদনকারী এম সিদ্দিকের আইনজীবী এজাজ মকবুল। তিনি বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া রিপোর্টে সমঝোতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই ধরনের কোনও প্রস্তাবে আমরা রাজি নই। যে পদ্ধতিতে মধ্যস্থতা হয়েছে এবং মীমাংসার মাধ্যমে জমির দাবি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাতেও তাতেও একমত নই আমরা।’’
আরও পড়ুন: গেরুয়া শিবিরে উচ্ছ্বাস শুরু, অযোধ্যায় মোদীর হাতে রামমন্দিরের শিলান্যাস চান ‘আশাবাদী’ সাধুরা
এজাজ মকবুলের দাবি, ‘‘কোনওরকম সমঝোতায় যেতে রাজি নয় বলে মামলায় প্রধান হিন্দুপক্ষ আগেই জানিয়ে দিয়েছিল। মুসলিম আবেদনকারীরাও মীমাংসায় রাজি হননি। একমাত্র ব্যতিক্রম সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। এমন পরিস্থিতিতে কোনওরকম সমঝোতার প্রস্তাব গ্রহণ করাই সম্ভব নয়।’’
সমঝোতার খবর ইচ্ছাকৃত ভাবে সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করা হয়েছে বলেও দাবি করেন এজাজ মকুবল। তাঁর কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশের সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড জমির দাবি তুলে নিতে রাজি হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। এই সমঝোতার বিষয়টি জানাজানি হল কী ভাবে? কারণ সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি চলাকালীনই সমঝোতা প্রক্রিয়া শুরু হয়ে থাকবে। সে ক্ষেত্রে নির্বাণী আখড়ার ধর্ম দাস, সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের জাফর ফারুকি এবং হিন্দু মহাসভার চক্রপাণি-সহ হাতেগোনা কয়েক জনের উপস্থিতিতে আলোচনা হয়েছে। তাই হয় মধ্যস্থতাকারী কমিটিই বিষয়টি ফাঁস করেছে, নয়ত বা নির্বাণী আখড়া।’’ মামলার শুনানির ঠিক শেষ দিনে ওই রিপোর্ট জমা পড়া এবং তা ফাঁস হওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ধ্বংসস্তূপের উপরই রবিদাস মন্দিরের পুনর্নির্মাণ, সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র
এ ব্যাপারে জাফর ফারুকি এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য না করলেও, বৃহস্পতিবার একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন বোর্ডের আইনজীবী শহিদ রিজভি। তিনি জানান, মধ্যস্থতাকারীদের নিজেদের মতামত জানিয়েছে বোর্ড। বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। তাই এখনই এ নিয়ে মন্তব্য করা উচিত হবে না। তবে মধ্যস্থতাকারী কমিটির রিপোর্টে হিন্দু-মুসলিম দু’পক্ষই খুশি হবে বলে দাবি করেন তিনি। কিন্তু মামলায় মুসলিম পক্ষের একাংশ ওয়াকফ বোর্ডের সঙ্গে একমত না হওয়ায়, অযোধ্যা মামলার নিষ্পত্তি আদৌ সম্ভব কি না, নতুন করে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy