প্রতীকী ছবি।
সচেতনতা কিছুটা বেড়েছে, তবুও ঘাটতি রয়ে গিয়েছে বেশ খানিকটা। দেশের প্রায় ৩০ শতাংশের কাছাকাছি বাবা-মা চান না তাঁদের সন্তান কোনও এইচআইভি-আক্রান্ত পড়ুয়ার সঙ্গে ক্লাস করুক। তেমনি, অন্তত ৩৫ শতাংশ মহিলা-পুরুষের আপত্তি রয়েছে, এইচআইভি-আক্রান্ত কোনও আনাজ বিক্রেতার কাছ থেকে জিনিসপত্র কেনায়। প্রশ্নটি যেখানে সচেতনতার, সেখানে ওই রোগ সম্পর্কে দেশের মাত্র ৩০ শতাংশ পুরুষ বিস্তারিত ভাবে জানেন। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি আরও খারাপ। সমীক্ষা বলছে, রাজ্যের মাত্র ১৫ শতাংশ পুরুষের এইচআইভি সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে। ওই রোগ সম্পর্কে এ রাজ্যের পুরুষদের তুলনায় বঙ্গ-নারীদের কাছে তথ্য অনেক বেশি।
জাতীয় স্বাস্থ্য পরিবার সমীক্ষা অনুযায়ী, আগের চেয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পেলেও এইচআইভি-আক্রান্তকে নিয়ে সমাজে ও পরিবারে নানা ধরনের ভুল ধারণা রয়েই গিয়েছে। যেমন, মশার কামড়ের মাধ্যমে এইচআইভি ছড়ায় এমন কথা বিশ্বাস করেন গ্রামীণ ভারতের প্রায় ৫১ শতাংশ মহিলা এবং অন্তত ৪০ শতাংশ পুরুষ। শহরে এই ধারণা মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩৭ শতাংশ ও পুরুষদের ক্ষেত্রে ২৮ শতাংশের কাছাকাছি।
ওই সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, সন্তানদের এইচআইভি আক্রান্ত শিশুর সঙ্গে ক্লাস করতে দেওয়ার প্রশ্নে ৩২ শতাংশ মায়ের ও ২৭ শতাংশ বাবার আপত্তি রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, সমীক্ষায় উঠে আসে বাবা-মায়েদের বক্তব্য— তাঁরা মনে করেন একই শ্রেণিতে বসে ক্লাস করলে তাঁদের শিশুও ওই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তেমনই, এইচআইভি-আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে আনাজ কেনার প্রশ্নে পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩১ শতাংশ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশের আপত্তি রয়েছে। সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, ওই বৈষম্য দেখা যাচ্ছে কর্মক্ষেত্রেও। সমীক্ষায় একই হাসপাতালে সাধারণ রোগীর সঙ্গে এইচআইভি রোগীর চিকিৎসা হওয়া উচিত কি না, কাজের জায়গায় এইচআইভি সহকর্মীর উপস্থিতি থাকা সঠিক কি না, স্কুলে এইচভি আক্রান্ত ছাত্র বা শিক্ষিকার উপস্থিতি সঠিক কি না—এ ধরনের সাতটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, শহর ও গ্রামে মহিলাদের মধ্যে যথাক্রমে ২৪.৭ শতাংশ ও ২২.১ শতাংশ সাতটি ক্ষেত্রেই ইতিবাচক উত্তর দেন। অন্য দিকে, শহরে ইতিবাচক উত্তর দিয়েছেন ২৫.৯ শতাংশ পুরষ ও গ্রামে ২৩.৪ শতাংশ পুরুষ। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে সমাজের একটি অংশের মধ্যে ভুল ধারণা রয়ে গিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকদের মতে, ওই ভুল ধারণা দূর করার অন্যতম হাতিয়ার হল সচেতনতা। কিন্তু সচেতনার প্রশ্নে অনেক কাজ করা বাকি রয়েছে বলেই মত মন্ত্রকের। বিশেষ করে দেশের প্রায় গড়ে ৯০ শতাংশ মহিলা ও পুরুষ এডস-এর নাম শুনলেও, ওই রোগ কী ভাবে হয়, কী ভাবে তা ছড়িয়ে পড়ে, আক্রান্ত হওয়ার পরে চিকিৎসা কী— সেই বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে দেশের মাত্র ২১.৬ শতাংশ মহিলা অবহিত। পুরুষদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটি কিছুটা বেশি, ৩০.৭ শতাংশ। ওই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার প্রশ্নে জাতীয় গড়ের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এ রাজ্যে মাত্র ১৮.৫ শতাংশ মহিলার ওই রোগ সম্পর্কে তথ্য রয়েছে। সেখানে পুরুষদের সংখ্যা জাতীয় গড়ের প্রায় অর্ধেক। রাজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ পুরুষ ওই রোগ সম্পর্কে শুনলেও বিস্তারিত ভাবে জানেন মাত্র ১৫ শতাংশ পুরুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy