কাঁচা দুধ খেলে কী ক্ষতি হতে পারে? ছবি: ফ্রিপিক।
ডেয়ারি থেকে আনা দুধ না ফুটিয়ে কখনওই খাওয়াতেন না মা-ঠাকুমারা। সরাসরি খাটাল থেকে নিয়ে আসা দুধও ভাল করে জ্বাল দিয়ে তবেই খাওয়া হত। কিন্তু এখন প্যাকেট দুধের রমরমা। প্লাস্টিক প্যাকেট বা পাউচের দুধের পাশাপাশি টেট্রা প্যাকের দুধও কেনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, যে, প্যাকেটের দুধ কিনছেন, তা পাস্তুরাইজ়ড। বিশেষ পদ্ধতিতে উচ্চ তাপমাত্রায় পাস্তরাইজ়েশন করা হয় যাতে রোগজীবাণু ধ্বংস হয়। অনেকে বলেন, পাস্তরাইজ়েশন পদ্ধতিতে জীবাণুমুক্ত করে বাজারে আসছে যে দুধ, তা ফোটানোর কোনও দরকার নেই। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, দুধ সরাসরি খাটাল থেকে আসুক বা প্যাকেটের, সব সময়েই ফুটিয়ে খাওয়া উচিত। কাঁচা দুধ কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন গবেষকেরা।
কাঁচা দুধ খেতে কেন বারণ করা হচ্ছে?
আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা দাবি করেছেন, কাঁচা দুধে ফ্লু ভাইরাস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস জন্মায়। সমীক্ষা চালিয়ে গবেষকেরা দেখেছেন, কাঁচা দুধে প্রচুর পরিমাণে এইচ১এন১ ফ্লু ভাইরাস জন্মায়, যা কম করেও পাঁচ দিন অবধি বেঁচে থাকতে পারে। সে দুধ যতই ফ্রিজে রাখা হোক না কেন, ভাইরাস খুব দ্রুত তার বিভাজন ঘটিয়ে সংখ্যায় বাড়তে থাকে। সেই দুধ খেলে শরীরের নানা ক্ষতি হতে পারে। দুধ ফোটালে উচ্চ তাপমাত্রায় সেই সব জীবাণু মরে যায়।
স্ট্যানফোর্ডের গবেষক আলেকজ়ান্দ্রিয়া বোহেমের কথায়, প্যাকেটের দুধও ফুটিয়ে খাওয়াই ভাল। কারণ, পাস্তরাইজ়েশন পদ্ধতিতে দুধ সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব নয়। এমনও দেখা গিয়েছে, প্যাকেটের দুধে ই-কোলাই, সালমোনেল্লার মতো ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়ার পাশাপাশি অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাসও বাসা বেঁধেছে। গত কয়েক মাসে নিউ ইয়র্কের বেশ কয়েকটি গোশালায় গরুর দুধেও বার্ড ফ্লু ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। শুধু নিউ ইয়র্ক নয়, টেক্সাস এবং মেক্সিকোর বেশ কয়েকটি পশুপালন কেন্দ্রের গরুর দেহে বার্ড ফ্লু রোগের ভাইরাস ছড়িয়েছে। গবেষক আলেকজান্দ্রিয়ার কথায়, আমেরিকার মানুষজন প্যাকেটের বা বোতলের দুধ কিনে তা না ফুটিয়েই খান। ফলে সেখান থেকেই শরীরে বাসা বাঁধছে ভাইরাস।
ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি-র গবেষকেরাও এই বিষয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাঁদের দাবি, কাঁচা দুধ তো বটেই, এমনকি পাস্তরাইজড দুধেও নানা রকম মাইক্রোব্যাক্টেরিয়ার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে, সিউডোমোনাস, মাইক্রোকক্কাস, এনটারোব্যাক্টর, ব্যাসিলাস, ফ্ল্যাভোব্যাক্টর। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, দুধ সব সময়েই ফুটিয়ে খাওয়া উচিত। পাউচের দুধও না ফুটিয়ে খাবেন না। প্রয়োজনে দুধ বারে বারেই ফোটানো যায়, তাতে তার পুষ্টিগুণ নষ্ট হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy