জম্মুর জনসভায় অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা আইন ছিল বৈষম্যমূলক। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্যক্তিগত উদ্যোগে সেই আইন বাতিল করেন। স্বপ্ন পূরণ করেন জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের। রবিবার জম্মুতে একটি জনসভায় এমনই দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মোদী সরকারের দাবি ছিল, ওই আইন প্রত্যাহারের পরে জঙ্গি সমস্যা কমবে উপত্যকায়। কিন্তু তা হয়নি। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে কাশ্মীরে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। এ সব নিয়ে অবশ্য এ দিন কোনও কথাই বলেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
দু’বছর আগে মোদী সরকার ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করার পরে এই প্রথম জম্মু-কাশ্মীর গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার নিয়ে তিনি নিজের কাশ্মীর সফরে বাক্য খরচ না করলেও আজ জম্মুতে একটি জনসভায় ওই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, ‘‘অনুচ্ছেদ ৩৭০ বৈষম্যমূলক আইন ছিল। দীর্ঘ সময় ধরে ওই আইন প্রত্যাহারের দাবি উঠেছে। কিন্তু এই সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওই আইন বাতিল করেন। এর ফলে জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নের পথ খুলে গিয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে স্থানীয় মানুষ যে বঞ্চনার শিকার হয়েছিলেন, সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছেন তাঁরা।’’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের দাবি, ওই আইন প্রত্যাহারের ফলে শিখ, মহাজন, ক্ষত্রি শ্রেণির মানুষেরা কাশ্মীর উপত্যকায় জমি কেনার অধিকার পেয়েছেন। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসা শরণার্থীরা, গোর্খা, বাল্মিকীরা নাগরিকত্ব ও অন্যান্য একাধিক অধিকার পেয়েছেন। গুর্জ্জর ও পণ্ডিতেরা তাঁদের সংরক্ষণের অধিকার ফিরে পেয়েছেন। ওই আইন প্রত্যাহারের ফলে উপত্যকার নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান অমিত শাহ। শুধু তাই নয়, ওই সিদ্ধান্তের ফলে জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কাশ্মীরকে দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে জোড়ার যে স্বপ্ন, তা পূরণ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রত্যাহার ও জম্মু-কাশ্মীরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। শাহ এ দিন জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যে কেউ মন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। এত দিন কাশ্মীরের পণ্ডিতদের নিয়ে রাজনীতি হয়েছে। কিন্তু রাজনীতিতে কখনই তাদের যথেষ্ট প্রতিনিধিত্ব ছিল না। এমন কি, ছিল না মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগও। যে সুযোগ এখন তৈরি হয়েছে।
এ দিকে, অমিত শাহ ওই দাবি করলেও বিরোধী কংগ্রেসের বক্তব্য অন্য। কংগ্রেসের দাবি, শাহ মন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর কথা বলছেন, কিন্তু তার আগে তো ভোট করাতে হবে। কেন্দ্রের তো উপত্যকায় ভোট করানোর কোনও ইচ্ছাই নেই। সরকার চাইছে দিল্লি থেকে কাশ্মীরকে নিয়ন্ত্রণ করতে। কবে জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হবে, তা স্পষ্ট করে জানাক কেন্দ্র। এ ছাড়া, আজকের জনসভায় সন্ত্রাস প্রসঙ্গে শাহের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। সম্প্রতি জঙ্গিরা উপতক্যায় সংখ্যালঘু শিখ-হিন্দুদের হত্যা করার কৌশল নিয়েছে। বেড়ে গিয়েছে জঙ্গি-সেনা সংঘর্ষও। তা সত্ত্বেও জঙ্গি সন্ত্রাস নিয়ে শাহ নীরব কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলগুলি। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে সম্ভবত নিজের ব্যর্থতা ঢাকতেই সন্ত্রাস প্রশ্নে এ ভাবে নীরব ছিলেন তিনি। কারণ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে উপত্যকায় কোনও সন্ত্রাস হলে কোনও ভাবেই নিজের দায় এড়াতে পারেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy