মণিপুর হিংসায় বহু মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফাইল চিত্র।
১০০, ২০০ নয়। ১২০০ জনের থিকথিকে ভিড়। নেতৃত্বে মহিলারা। মণিপুরে এমনই একটি দল সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি ১২ জন ‘বিদ্রোহী’কে ছাড়িয়ে নিয়ে গেল। চাপের মুখে সকলকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হল সেনা। ওই ১২ জনকে শনিবার সকালেই আটক করা হয়েছিল। অভিযোগ, তাঁরা মেইতেই জঙ্গিগোষ্ঠী কাঙলেই ইয়ায়ুল কান্না লুপ (কেওয়াইকেএল)-এর সদস্য। অতীতে সেনার উপর বহু হামলায় নাম জড়িয়েছিল এই গোষ্ঠীর।
শনিবার সকাল থেকে স্থানীয় ‘বিদ্রোহী’দের সঙ্গে সেনা জওয়ানদের সংঘর্ষ চলেছে। ১২ জনকে সেনা বন্দি করতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু বহু মানুষ একত্রিত হয়ে বন্দিদের মুক্তির দাবি করেন। অন্তত ১২০০ জন ছিলেন ওই দলটিতে। যার নেতৃত্বে ছিলেন মহিলারা। প্রাণহানির সম্ভাবনা এড়াতেই দিনের শেষে নতিস্বীকার করে নেয় সেনা। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, ‘‘পরিস্থিতি স্পর্শকাতর। তার গুরুত্ব বুঝেই বন্দিদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মহিলা পরিচালিত বিশাল বিক্ষুব্ধ জনতার বিরুদ্ধে বাহিনী শক্তি প্রয়োগ করলে বহু প্রাণহানি হতে পারত।’’
সেনার তরফে একে ‘পরিণত সিদ্ধান্ত’ বলে মনে করা হচ্ছে। কমান্ডার ইন চিফকে উপরমহল থেকে এই পরিস্থিতিতে পরিণত সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, যাতে সেনার মানবিক দিকটি প্রাধান্য পায়।
শনিবার সারা দিন মহিলা পরিচালিত জনতার সঙ্গে সেনার সংঘর্ষ চলেছে। সেনাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়েছিল। কিছুতেই তাদের এগোতে দেওয়া হচ্ছিল না। তার পরেই বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে গোষ্ঠীর সদস্যদের ছেড়ে দিতে হয়েছে, তাঁরা ২০১৫ সালে ৬ ডোগরা ইউনিটের হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁদের ধরার চেষ্টা চলছিল।
মণিপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বিক্ষোভে মহিলাদের ভূমিকা আলাদা করে নজর কাড়ছে বার বার। এর আগে মহিলাদের প্রতিরোধের মুখে কখনও আটকা পড়েছে সেনাবাহিনীর গাড়ি, কখনও ফিরে আসতে হয়েছে সিবিআইয়ের তদন্তকারী দলকে। সেনার গাড়ির সামনে কয়েকশো মহিলা বসে পড়ে তাদের আটকে দিয়েছেন কিছু দিন আগেই। অস্ত্র লুটের তদন্তে যাওয়া সিবিআইয়ের দলকে একই ভাবে মণিপুর পুলিশ ট্রেনিং কলেজে ঢুকতে দেননি প্রায় দু’হাজার মহিলা। এ বার সেনাকে ঘিরে তাদের হাত থেকে বন্দিদের ছাড়িয়ে আনলেন সেই মহিলারাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy