কাশ্মীরে অমিত শাহ ছবি পিটিআই।
কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যদি কথা বলে তা হলে বলবে কাশ্মীরের আমজনতার সঙ্গে, বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়ের সঙ্গে। আজ কাশ্মীরে এক জনসভায় দাঁড়িয়ে সরকারের মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ডাল লেকের ধারের সমাবেশে অমিত-ভাষণের একটা বড় অংশ জুড়ে ছিল যুব সম্প্রদায়ের প্রসঙ্গ। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরে কার্ফু জারি ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হোক বা এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রশাসনের তৎপরতা— সবই যে যুবকদের কথা ভেবে তা বারবার উল্লেখ করেছেন অমিত।
অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের দু’বছর পর প্রথম বার কাশ্মীরের মাটিতে পা রাখা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উপত্যকাবাসীকে বোঝাতে চেয়েছেন ‘আমি তোমাদেরই লোক’। সেই চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখেননি তিনি। এমনকি, শের-ই-কনভেনশন সেন্টারে বক্তৃতার আগে পোডিয়ামে লাগানো বুলেটপ্রুফ কাচের ঘেরাটোপটিও (বুলেটপ্রুফ শিল্ড) সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আর বক্তৃতার সময় বলেছেন, ‘‘আজ আপনাদের কাছে এসেছি খোলামেলা কথা বলতে। আমি বহু নিন্দিত। আমাকে ব্যঙ্গও করা হয়। দেখুন, আমি সরাসরি আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি। এখানে বুলেটপ্রুফ শিল্ড নেই, পাশে নেই কোনও নিরাপত্তারক্ষী। আমি আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।’’ সমাবেশের পরে আমজনতার সঙ্গে হাতে মেলাতে একেবারে ব্যারিকেডের সামনে চলে যান কাশ্মীরের ঐতিহ্যশালী পোশাক ফেরহান পরিহিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বক্তৃতাটি আগাগোড়া চড়া সুরেই বেঁধে রেখেছিলেন অমিত। সম্প্রতি ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুখ আবদুল্লা বলেছিলেন, কেন্দ্রের উচিত পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলা। আজ ফারুখের বক্তব্যকে উড়িয়ে দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি যদি কথা বলি, তা হলে বলব কাশ্মীরের মানুষের সঙ্গে। কথা বলব উপত্যকার যুবকদের সঙ্গে। অন্য কারও সঙ্গে নয়।’’
২০১৯ সালের ৫ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর দীর্ঘ সময় উপত্যকায় জারি ছিল কার্ফু। বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। জনজীবন কার্যত স্তব্ধ হয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকারের সিদ্ধান্তে। তা নিয়ে আজ অমিতের যুক্তি, যুব সম্প্রদায়ের জীবন বাঁচাতেই নাকি কার্ফু-ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘আজ সব প্রশ্নের উত্তর দিতে চাই, কার্ফু জারি হয়েছিল কাশ্মীরি যুবকদের বাঁচাতে। কারণ, কায়েমি স্বার্থ নিয়ে চলা লোকেরা এবং যারা অশান্তি চায় তারা ওই সময় পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যুবকদের বুলেটের সামনে ঠেলে দিত।’’ অমিতের দাবি, গত দু’বছরে উপত্যকায় ২০ হাজার কর্মসংস্থান হয়েছে। অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের পরে বাইরের কোনও লোক কাশ্মীরের মানুষের থেকে জমি কেড়ে নিতে পারেননি।
কাশ্মীরের দুই রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং পিডিপি-র সমালোচনা করে অমিত বলেন, ‘‘এই দুই দলের আমলে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতি ছাড়া কিছুই হয়নি। উপত্যকায় চলতি মাসে নিরীহ মানুষের রক্ত কম ঝরেনি। সে ব্যাপারে বিশেষ কিছু না বললেও অমিত বলেছেন, ‘‘রক্তপাতের দিন শেষ। আগামী দিন উন্নয়নের।’’ তিনি জানিয়েছেন, কাশ্মীরে উন্নয়নের পথে হেঁটে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘উপত্যকায় বাড়ছে পড়াশোনার হার। কলম দিয়ে আমরা বন্দুককে সরিয়ে দিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy