অমিত শাহ। —ফাইল ছবি।
বিক্ষুব্ধ কিংবা গোঁজ প্রার্থীদের গোড়া থেকেই সামলানোর জন্য মহারাষ্ট্রের নেতাদের কড়া নির্দেশ দিলেন অমিত শাহ।
মাস পেরোলেই মহারাষ্ট্রে নির্বাচন। মহাজোটের রণকৌশল ঠিক করতে তাই গত কাল নিজের বাড়িতে ওই রাজ্যের বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস, শিবসেনার শিন্দে গোষ্ঠীর নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দে ও এনসিপি-র অজিত পওয়ার গোষ্ঠীর অজিতের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন শাহ। তাৎপর্যপূর্ণ হল, শরদ পওয়ারের এনসিপি আগাগোড়া বিজেপির বিরুদ্ধে লড়লেও সেই দলের বিধায়কদের ভাঙিয়ে ভাইপো অজিত এখন বিজেপির সঙ্গী। এই প্রথম বার বিধানসভায় এনসিপি-র এই গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে চলেছে বিজেপি। সূত্রের মতে, গত কাল অমিত শাহ মহাজোটের নেতাদের জানিয়ে দেন, একাধিক কেন্দ্রে একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে লড়তে চাইবেন। কিন্তু সবাইকে টিকিট দেওয়া সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে যাঁরা টিকিট পাবেন না, তাঁদের নির্দল বা গোঁজ প্রার্থী হিসেবে মহাজোটের বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এমন প্রবণতা অতীতে হিমাচল প্রদেশ, কর্নাটক কিংবা হরিয়ানায় দেখা গিয়েছে। বৈঠকে শাহ বলেন, ওই বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের ভোট কাটার ফলে প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই একাধিক কেন্দ্রে গেরুয়া জোটের প্রার্থীর নিশ্চিত জয় হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। তার পুনরাবৃত্তি মহারাষ্ট্রে হোক, এমন মোটেই চাইছেন না শাহ। কারণ মরাঠাভূমে লোকসভা নির্বাচনে এ বার মাত্র ১৭টি আসনে জিতেছে বিজেপি-শিন্দে-অজিত গোষ্ঠীর জোট। বিরোধী শিবির যে ভাবে লোকসভায় টেক্কা দিয়েছে, তাতে রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখা যে কঠিন, তা বিলক্ষণ জানেন অমিত শাহেরা। যাতে কোনও ভাবেই এনডিএ ভোট বিভক্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতে মহারাষ্ট্রে বিক্ষুব্ধদের গোড়া থেকেই বুঝিয়ে ভোটে নামার প্রশ্নে নিরস্ত করার জন্য মহাজোটের তিন নেতাকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন শাহ।
মহারাষ্ট্রের ২৮৮টি আসনের মধ্যে ইতিমধ্যেই ৯৯টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। যার মধ্যে মুম্বইয়ের ওরলি কেন্দ্র থেকে এ বার শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরের ছেলে আদিত্যের বিরুদ্ধে লড়তে দেখা যাবে প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ তথা বর্তমান শিবসেনা (শিন্দে গোষ্ঠী) নেতা মিলিন্দ দেওরাকে। শিবসেনা প্রভাবিত ওই আসনে গত বার জিতেছিলেন আদিত্য। এ বার তাঁকে হারাতে তাই মিলিন্দের উপরে ভরসা রাখছে গেরুয়া শিবির। ওরলি কেন্দ্রের ওই হাই-প্রোফাইল লড়াই দুই তরুণ নেতার জন্য সম্মানের লড়াই হতে চলেছে বলেই মনে করছেন রাজনীতিকেরা।
গত কাল জোট সঙ্গীদের নিয়ে ম্যারাথন বৈঠক করলেও রাজ্যের সব ক’টি আসন নিয়ে শরিকদের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছতে ব্যর্থ হন শাহ। রাজ্যের ২৮৮টি আসনের মধ্যে বিজেপির লক্ষ্য হল অন্তত ১৫৫-১৬০টি আসনে লড়া। যাতে ভোটের পরে বৃহত্তর দল হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি জানাতে পারে বিজেপি। অন্য দিকে, একনাথ শিন্দের শিবসেনা ৯০টি আসনে লড়ার পক্ষপাতী। কারণ শিন্দে শিবির খুব ভাল করেই বুঝতে পারছে, যত বেশি আসনে দল জিতবে, ভোটের পরে দর কষাকষির রাস্তা তত খোলা থাকবে।
অন্য দিকে, অজিত পওয়ারের এনসিপি চাইছে ৫০টি আসনে লড়তে। সূত্রের মতে, বিজেপি নেতৃত্ব কোনও ভাবেই একনাথ শিন্দেকে ৭৫টি আসনের বেশি ছাড়তে রাজি নয়। দলের বক্তব্য, ছোট শরিকদের প্রতি বিজেপির দায়বদ্ধতা রয়েছে। শিন্দেকে না দেওয়া আসনগুলি রামদাস অঠওয়ালের মতো ছোট ছোট দলগুলিকে দেওয়ার পক্ষপাতী বিজেপি। যে দলগুলির নিজেদের এলাকায় প্রভাব রয়েছে। সম্ভাবনা রয়েছে জয়ের।
বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, ‘‘সব মিলিয়ে মহারাষ্ট্রে গোটা ১৫ আসন নিয়ে মতভেদ রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, দ্রুত সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy