Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
CAA

‘সিএএ আসলে মোদীর গ্যারান্টির বাস্তবায়ন’, প্রশংসায় শাহ, বিরোধীদের দাবি, সবই ভোটের জন্য!

বিরোধীদের দাবি, ভোটের মুখে সিএএ জারির সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক চমক বই আর কিছু নয়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল বিজেপির সমালোচনায় মুখর।

image of Narendra Modi

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৪ ২৩:১১
Share: Save:

আইনে পরিণত হয়েছিল চার বছর আগে। লোকসভার ভোটের প্রাক্কালে ‘আচমকা’ সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন জারি করার কথা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। আর তার পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, এটাই ‘মোদী কি গ্যারান্টি’। অন্য দিকে, বিরোধীদের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের দামামা বাজতেই সিএএ দিয়ে ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছে বিজেপি। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে ভোটের আগে মোদী সরকারের ‘ছলনা’ এবং ‘প্রতারণা’ বলে কটাক্ষ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বস্তুত, দেশে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাশ করিয়েছিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। ওই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান, তা হলে তা দেবে ভারত। সংসদের দু’কক্ষে পাশ হওয়ার পরে দেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও অনুমোদন দেন সিএএ বিলে। কিন্তু এত দিন ধরে সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অবশ্য কিছু দিন আগে জানিয়েছিলেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগেই দেশে সিএএ কার্যকর হবে। সোমবার কেন্দ্র সিএএ চালু হওয়ার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) লেখেন, ‘‘এই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি আরও একটি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলেন। এ বার পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশে ধর্মীয় নিপীড়িতরা এ দেশের নাগরিক হতে পারবেন।’’

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দাবি, সিএএ জারির সিদ্ধান্ত ‘ঐতিহাসিক।’ তিনি সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘মানবতার কল্যাণে নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত ঐতিহাসিক। এই আইন পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সম্মানজনক জীবনের পথ তৈরি করল।’’ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মার দাবি, মোদীর গ্যারান্টি মানেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। সিএএকে মানবতার আইন বলে মন্তব্য করেছেন ভজনলাল। একই কথা বলছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তিনি জানান, সিএএ ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইন।

বিরোধীদের অবশ্য দাবি, ভোটের মুখে সিএএ জারির সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক চমক বই আর কিছু নয়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন এ নিয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘সাহস থাকলে (সিএএ) আগে করতেন। লোকসভা ভোটের আগেই করতে হল কেন?’’ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, যাঁদের ভোটে সরকার তৈরি হয়েছে, তাঁদের নাগরিকত্ব নিয়ে কী ভাবে প্রশ্ন তুলতে পারে কেন্দ্র। প্রায় একই কথা বলছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। তাঁর কটাক্ষ, ১০ বছর দেশ শাসন করার পরে ঠিক আর একটি নির্বাচনের দোরগড়ায় এসে সিএএ কার্যকর করছে মোদী সরকার। আর সেটা এমন একটা সময়ে যখন মূল্যস্ফীতির কবলে দেশের গরিব এবং মধ্যবিত্তেরা জর্জরিত। বেকার যুবক-যুবতীরা কর্মসংস্থানের জন্য সংগ্রাম করছেন।

কেজরীর দাবি, ‘‘আসল সমস্যাগুলোর সমাধানের পরিবর্তে সিএএ উপহার দিল বিজেপি।’’ তিনি এই সিদ্ধান্ত ভোট-ব্যাঙ্ক রাজনীতির বড় উদাহরণ বলে উল্লেখ করেছেন। কর্নাটক সরকারের তরফে বিবৃতি দিয়ে সিএএ জারির তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব থেকে মিম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি— সবার সুর মোটামুটি এক। যদিও বিজেপির দাবি, রামমন্দির হোক বা সিএএ, প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশবাসীকে যে প্রতিশ্রুতি দেন, তা কার্যকর করেই ছাড়েন।

এর মধ্যে দেশের নানা প্রান্তে ‘উৎসবের ছবি’ দেখা গিয়েছে। বাংলায় মতুয়া অধ্যুষিত উত্তর ২৪ পরগানর ঠাকুরনগরেও এক দৃশ্য। অন্য দিকে, অমিত শাহের মন্ত্রকের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশ রাজধানীতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। তাদের মাথায় রয়েছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর এবং ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের কথা।

অন্য বিষয়গুলি:

CAA PM Narendra Modi Modi Government Lok Sabha Election 2024
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy