Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Citizenship Amendment Act

সিএএ জারি হয়ে গেল দেশ জুড়ে! লোকসভা ভোট ঘোষণার আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিল কেন্দ্র

২০১৯ সালে সংসদের দু’কক্ষে পাশ হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতিও অনুমোদন দিয়েছিলেন সিএএ বিলে। কিন্তু এত দিন ধরে সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। চার বছর পরে চালু হল সিএএ।

CAA now effective, Central govt said by a gazette notification on Monday

নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিকে) এবং অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৪ ১৮:১১
Share: Save:

লোকসভা ভোটের আগে গোটা দেশে চালু হয়ে গেল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)। একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিএএ চালু হওয়ার কথা জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। বিল পাশ হওয়ার পর চার বছর পর চালু হল হল সিএএ।

আইনে পরিণত হলেও প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে সিএএ-র ধারা-উপধারা যুক্ত হয়নি। ফলে বাস্তবে এই আইন কার্যকরও হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি সই করার ছয় মাসের মধ্যে আইনের নির্দিষ্ট ধারা-উপধারা যুক্ত করতে হয়। অন্যথায় লোকসভা কিংবা রাজ্যসভার নির্দিষ্ট কমিটিগুলির কাছে বিশেষ অনুমতি নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০২০ সাল থেকে আইন কার্যকর করার সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে আসছিল। এই বিলম্ব নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কটাক্ষও করছিল বিরোধী দলগুলি।

দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাশ করিয়েছিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। ওই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান, তা হলে তা দেবে ভারত। সংসদের দু’কক্ষে পাশ হওয়ার পরে দেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও অনুমোদন দিয়েছিলেন সিএএ বিলে। কিন্তু এত দিন ধরে সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগেই দেশে সিএএ কার্যকর হবে। শুধু তা-ই নয়, শাহ এ-ও বলেছিলেন, শীঘ্রই সিএএ কার্যকরের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাবে।

তবে মতুয়া অধ্যুষিত নদিয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনার সভায় এসে সিএএ নিয়ে মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেছিলেন, ‘‘ভোটের আগে সিএএ কার্যকর হচ্ছেই। ভোট ঘোষণার এক-দু’দিন বা তিন দিন আগে হলেও সিএএ কার্যকর হবে। এমনকি, নির্বাচন বিধি চালু হওয়ার এক ঘণ্টা আগেও সিএএ কার্যকর হতে পারে।’’ বিরোধী তৃণমূল অবশ্য বিষয়টিকে ‘উদ্বাস্তু মানুষদের ভাঁওতা দেওয়ার চেষ্টা’ বলে কটাক্ষ করে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএএ-কে ‘ক্যা ক্যা’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। তৃণমূল নেতৃত্ব বরাবরই সিএএ প্রসঙ্গে দাবি করে আসছেন, যে নাগরিকেরা ভোট দেন, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড আছে, তাঁরাই এ দেশের নাগরিক। তাই তাঁদের নতুন করে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

গত মাসেই সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে কর্মরত এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন, সিএএ কার্যকরের বিজ্ঞপ্তি লোকসভা নির্বাচনের অনেক আগেই জারি হয়ে যাবে। এই আইনের নিয়ম বা ধারা তৈরি হয়ে গিয়েছে। নাম নথিভুক্তকরণের জন্য অনলাইন পোর্টালও প্রস্তুত। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘‘সিএএ-র গোটা প্রক্রিয়াই অনলাইনে হবে। সেখানে আবেদনকারীদের শুধু জানাতে হবে তাঁরা কবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।’’

সিএএ কার্যকর করা নিয়ে দীর্ঘ দিন কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যেই টালবাহানা চলছিল। অন্য দিকে, করোনা পর্বের আগে থেকেই দেশের নানা প্রান্তে সিএএ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। সারা দেশে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে প্রাণ যায় প্রায় ১০০ জনের। বিজেপি বিরোধী দলগুলিই এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল। পশ্চিমবঙ্গের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে সিএএ কার্যকরের বিরোধী। এখনও পর্যন্ত লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। তার আগেই গোটা দেশে চালু হয়ে গেল সিএএ।

অন্য বিষয়গুলি:

CAA Narendra Modi Citizenship Amendment Act
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE