ছবি: এএফপি।
গত কাল সারা রাত আইনজীবীদের সঙ্গে বসে আগাম জামিনের আবেদনের কাগজপত্র তৈরি করেছেন। আজ সুপ্রিম কোর্টে তাঁর হয়ে যখন লড়াই চালাচ্ছেন কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিরা, তখন গোপন ডেরা থেকে খবর নিয়েছেন ঘড়ি ঘড়ি। কিন্তু দিনভর তদ্বিরে কোনও ফল হয়নি। আজ পি চিদম্বরমের আর্জি শোনেনি সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, আগামী শুক্রবারের আগে তাঁর আর্জি শোনা সম্ভব হবে না। এ দিন রাতে সিবিআই প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীকে গ্রেফতার করার পরে সেই আর্জির অবশ্য আর কোনও মূল্য রইল না। এ বার নিয়মিত জামিনের জন্য আবেদন জানাতে হবে তাঁকে।
গত কাল আইএনএক্স মিডিয়া আর্থিক কেলেঙ্কারি মামলায় দিল্লি হাইকোর্ট চিদম্বরমের আগাম জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়ে জানায়, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে ওই মামলার কিংপিন হলেন চিদম্বরম। কালই আগাম জামিনের আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁর আইনজীবীরা। ঠিক হয় আজ সকালে শুনানি হবে। সিবিআই সূত্রের দাবি, হাইকোর্টের রায় আসার পরেই গা ঢাকা দেন চিদম্বরম। তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর মোবাইলও বন্ধ ছিল। চিদম্বরম যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারেন, সে জন্য আজ সকালে প্রথমে ইডি ও পরে সিবিআই দু’টি পৃথক লুক আউট নোটিস জারি করে অভিবাসন দফতরকে সতর্ক করে দেয়। চিদম্বরম অবশ্য সাংবাদিক বৈঠকে পাল্টা দাবি করেন, ‘‘আমি আদৌ লুকিয়ে ছিলাম না। যাতে ন্যায়বিচার পাই সে জন্য সারা রাত ধরে আইনজীবীদের সঙ্গে কাগজপত্র তৈরি করছিলাম।’’
গত কাল সন্ধ্যায় এক বার এবং রাত সাড়ে বারোটায় আরও এক বার চিদম্বরমের বাড়িতে গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। চিদম্বরমকে না পেয়ে নোটিস দিয়ে বলে আসেন আগামী দু’ঘণ্টার মধ্যে সিবিআইয়ের ডেপুটি সুপার আর পার্থসারথির সঙ্গে দেখা করতে হবে। আজ সকাল সাড়ে আটটায় ফের হানা দেন তাঁরা। সূত্রের খবর, চিদম্বরমের দিল্লিতে অন্যান্য যে ডেরা রয়েছে সেখানেও ঘাঁটি গাড়েন তাঁরা। সুপ্রিম কোর্টে যাতে একতরফা চিদম্বরমের বক্তব্য শোনা না হয়, সে জন্য ক্যাভিয়েট ফাইল করে দুই তদন্তকারী সংস্থা।
“আমি আদৌ লুকিয়ে ছিলাম না। যাতে ন্যায়বিচার পাই, সেই জন্য কাল সারা রাত ধরে আইনজীবীদের সঙ্গে কাগজপত্র তৈরি করছিলাম। আমার নামে বা আমার পরিবারের নামে অভিযোগ নেই। তা সত্ত্বেও ধারণা ছড়ানো হয়েছে যে, আমরা অপরাধ করেছি।”
পি চিদম্বরম
আইএনএক্স মামলা কী?
ইউপিএ জমানায় আইএনএক্স মিডিয়া ৩০৫ কোটি টাকার বিদেশি লগ্নি আনে। যদিও ৪.৬২ কোটি টাকা লগ্নির অনুমতি ছিল। অভিযোগ, ঘুরপথে বাড়তি লগ্নি আনার পথ বাতলানোর বিনিময়ে চিদম্বরম ছেলে কার্তির সংস্থাকে সাহায্য করতে বলেন। কার্তিকে সাড়ে তিন কোটি টাকা ঘুষ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
অযোধ্যা মামলার মধ্যে কী ভাবে আর্জি শুনবেন প্রধান বিচারপতি?
আপাতত ঠিক হয়েছে, চিদম্বরম মামলার শুনানি হবে শুক্রবার। কার বেঞ্চে শুনানি হবে, তা পরে ঠিক হবে। প্রধান বিচারপতি চাইলে তাঁর এজলাসেও শুনানি হতে পারে— রাম মন্দির মামলার শুনানির আগে বা পরে। সম্প্রতি দু’টি মামলায় তা-ই হয়েছে।
অযোধ্যা মামলার শুনানিতে দিনভর ব্যস্ত প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তাই আজ সকালে চিদম্বরমের আগাম জামিনের মামলাটি ওঠে বিচারপতি এন ভি রমানার এজলাসে। কিন্তু তিনি মামলাটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতির এজলাসে শুনানির তালিকায় জরুরি ভিত্তিতে মামলাটি নথিভুক্ত না হওয়ায় ফের বিচারপতি রমানার দ্বারস্থ হন চিদম্বরমের আইনজীবী কপিল সিব্বল, ইন্দিরা জয়সিংহেরা। তাঁরা বলেন, যে ভাবে চিদম্বরমের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি হয়েছে যাতে মনে হচ্ছে তিনি পালিয়ে যেতে পারেন। অথচ, শুরু থেকেই তদন্তে সহযোগিতা করে এসেছেন চিদম্বরম। তিনি যে পালাবেন না, প্রয়োজনে সেই লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতেও তিনি রাজি। আজই শুনানির জন্য ক্রমাগত চাপ দিয়ে যান সিব্বলরা। তদন্তকারী সংস্থার তরফে আপত্তি জানান সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। এর পরেই রমানার বেঞ্চ জানায়, চিদম্বরমের আবেদনে পদ্ধতিগত ত্রুটি আছে। দ্রুত সেই ত্রুটি শুধরে পুনরায় আবেদন করা হয়।
একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতির এজলাসেও যান সিব্বলরা। উদ্দেশ্য ছিল কোনও ভাবে বিষয়টি তাঁর সামনে তোলা। যদিও সেই সুযোগ মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy