১৭ রাজ্যের ৫৯টি রাজ্যসভা আসনে গত কাল নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই চর্চাটা হয়ে চলেছে। অঙ্কের জোর বেশি, না সমঝোতার?
বিরোধীদের দাবি, রাজ্যসভায় আসন বাড়িয়ে, এমনকী শরিকদের সঙ্গে নিয়েও সংখ্যাগরিষ্ঠতা কিছুতেই ছুঁতে পারবে না বিজেপি। উল্টে বিরোধীরাই আরও আক্রমণাত্মক হবে সংসদের উচ্চকক্ষে। কিন্তু বিজেপির দাবি, বেঙ্কাইয়া নায়ডুর চেয়ারম্যান হওয়া এবং অমিত শাহ রাজ্যসভায় আসার পরে উচ্চকক্ষের মেজাজটাই বদলে গিয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের আসন আরও কমবে।
হিসেব বলছে, লোকসভার আগে এটাই রাজ্যসভার শেষ বড় নির্বাচন। এর পরে জুনে একটি, জুলাইয়ে তিনটি আসনে ভোট হবে। তাতেও বড় হেরফের হবে না। রাজ্যসভার মোট ২৪৫টি আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য চাই ১২৩টি। এই মুহূর্তে রাজ্যসভায় কংগ্রেসের ৫৪ জন ও বিজেপির ৫৮ জন সদস্য। কিন্তু শরিকদের নিয়ে বিরোধীদের শক্তিই বেশি। ইউপিএ প্রায় ১২০ জনের মতো, সেখানে এনডিএ একশোর কোঠাও পেরোয়নি। সামনের নির্বাচনে কংগ্রেস আরও ৭টির মতো আসন, বিজেপি কমপক্ষে ১৫টি আসন জেতার আশা করছে। কিন্তু তাতেও ১২৩ দূর অস্ত্। অর্থাৎ লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যসভার কাঁটাও দূর হচ্ছে না নরেন্দ্র মোদীর। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে রাজ্যসভায় বিল পাশের সময়ে এনডিএ শরিকদের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বিজেডি, এডিএমকে-র মতো দলের ভূমিকা।
অনেকের মতে, সেই কারণেই মোদী এখন তামিলনাডুতে ‘আম্মা-স্কুটার’ চালু করতে ছুটছেন। তবে কংগ্রেসের এক নেতার মন্তব্য, ‘‘বিষয়টি অঙ্কের নয়, সমীকরণের। বিরোধীরা একজোট হয়ে হল্লা শুরু করলে হাজার অমিত শাহকে এনেও লাভ নেই। বাস্তবেই বিজেপির এখন হিমশিম অবস্থা। সংসদেও তারই প্রতিফলন ঘটবে।’’ বিজেপির প্রশ্ন, বিরোধীরা একজোট কোথায়? নীরব মোদী নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের ব্যাপারে কংগ্রেসের প্রস্তাবেই তো বাদ সেধেছে তৃণমূল। মায়াবতীর মতো অনেকেই এখনও খোলাখুলি বিরোধী জোটে সামিল হননি।
বিজেপির এক মন্ত্রী বলেন, ‘‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা হবে না, সে তো জানা কথাই। তা সত্ত্বেও কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশের আগে বিরোধীদের সঙ্গে নানা ধরনের সমঝোতা হয়। সব বিরোধী একই সঙ্গে একই অবস্থান নেয় না। অনেকে বয়কট করেও এক ঢিলে দুই পাখি মারে। প্রতিবাদও হয়, বিলে প্রচ্ছন্ন সমর্থনও হয়। অনেকে হুইপও জারি করে না।’’ বিজেপির আর এক নেতার আশা, তাঁরা যদি ২০টির মতো আসনও পান, যদি মনোনীত সদস্যদের কাছে টানা যায়, সে ক্ষেত্রে শরিক এবং এডিএমকে-বিজেডির মতো দলগুলিকে নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতাও ছুঁয়ে ফেলা সম্ভব। তৃণমূলের এক সাংসদের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘লড়াই জোরদার হবে রাজ্যসভায়। সংসদের বাইরে কিংবা ভিতরে, কোথাও ছেড়ে দেওয়া হবে না সরকারকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy