Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
National news

৩ বছরের শিশু, ১০০ কোটির সম্পত্তি ছেড়ে সন্ন্যাসী হচ্ছেন এঁরা!

৩৫ বছরের সুমিত রাঠৌর এবং তাঁর ৩৪ বছরের স্ত্রী অনামিকা। ধনী পরিবারের এই দম্পতির বছর চারেক বিয়ে হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের নিমাচের বাসিন্দা তাঁরা।

সুমিত, অনামিকা এবং তাঁদের শিশুকন্যা। ছবি ফেসবুক থেকে।

সুমিত, অনামিকা এবং তাঁদের শিশুকন্যা। ছবি ফেসবুক থেকে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১০:০২
Share: Save:

১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি, মাত্র ৩ বছরের শিশুকন্যা, সব ছেড়ে সন্ন্যাস নিতে চলেছেন মধ্যপ্রদেশের এক জৈন দম্পতি। তাঁদের এই সিদ্ধান্তে শুধু পরিবার নয়, হতবাক গোটা সম্প্রদায়। ২৩ সেপ্টেম্বর সুধামার্গি জৈন আচার্য রামলাল মহারাজের কাছে তাঁরা দীক্ষা নেবেন। সন্ন্যাসী হওয়ার এটাই প্রথম ধাপ।

৩৫ বছরের সুমিত রাঠৌর এবং তাঁর ৩৪ বছরের স্ত্রী অনামিকা। ধনী পরিবারের এই দম্পতির বছর চারেক বিয়ে হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের নিমাচের বাসিন্দা তাঁরা। অনামিকা হলেন নিমাচের প্রথম গোল্ড মেডালিস্ট। অষ্টম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় তিনি এই সম্মান পান। পরে রাজস্থানের মোদী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাস করে হিন্দুস্তান জিঙ্কে কাজ শুরু করেন। অন্য দিকে সুমিত লন্ডন থেকে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ম্যানেজমেন্টে ডিপ্লোমা করেছেন। সেখানেই দু’বছর থাকার পর পারিবারিক ব্যবসা সামলাতে নিমাচে ফিরে আসেন।

২২ অগস্ট সুমিত ও তাঁর পরিবার সুরাতে জৈন আচার্য রামলালের এক অনুষ্ঠানে যান। সেখানেই সুমিত তাঁর সিদ্ধান্তের কথা আচার্যকে জানান। আচার্য রামলাল স্ত্রীর অনুমতি চাইতে বললে অনামিকা জানান, তিনিও সন্ন্যাসী হতে চান। সুমিত বা অনামিকা অবশ্য তাঁদের পরিবারের কাছে আগেই সন্ন্যাসী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই তাঁরা সন্ন্যাসী হওয়ার প্রস্তুতি শুরুও করে দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: বোর্ডের পরীক্ষায় ৯৯.৯ শতাংশ পেয়ে সন্ন্যাসী হতে চান বর্ষিল

অনামিকার বাবা অশোক চান্ডালিয়া যিনি এক সময়ে বিজেপির নিমাচ জেলা সভাপতি ছিলেন জানান, অনামিকা-সুমিতের মেয়ে ইভিয়া যখন মাত্র ৮ মাসের, তখন থেকে তাঁরা এই পথে হাঁটার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। তখন থেকেই আলাদা থাকতে শুরু করেন। দু’জনের পরিবারই আপ্রাণ চেষ্টা করে তাঁদের বোঝানোর, কোনও লাভ হয়নি।

কী হবে তাঁদের ৩ বছরের ওই শিশুর? নাতনির সমস্ত দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন অনামিকার বাবা অশোক চান্ডালিয়া।

নিমাচের জৈন সম্প্রদায়ের সদস্য এবং সাধুমার্গি জৈন সেবক সঙ্ঘের সম্পাদক প্রকাশ ভান্ডারী তাঁদের এই সিদ্ধান্তে হতভম্ব। তাঁর মতে, ‘‘সন্ন্যাস নেওয়ার ঘটনা আমাদের সম্প্রদায়ে খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এত কম বয়সে কোনও দম্পতি সব ছেড়ে সন্ন্যাসী হতে চলেছেন, এমন ঘটনা এই প্রথম ঘটতে চলেছে।”

সুমিতদের এই সিদ্ধান্ত মনে করাচ্ছে বর্ষিলের কথা। চলতি বছরের জুন মাসে যা দেশজুড়ে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। সেই সময়ে বর্ষিল শাহ নামে ১৭ বছরের এক কিশোর সন্ন্যাসী হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে। বর্ষিল তাঁর দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৯.৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হন। দ্বাদশ শ্রেণির ফল প্রকাশ হওয়ার তাঁর সহপাঠীরা যখন ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বা গবেষক হওয়ার কথা ভাবছেন, তখন সব ছেড়ে বর্ষিল জৈন সন্ন্যাসী হওয়ার পথ বেছে নেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE