ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন কর্মীর স্ত্রী হেবে বেঞ্জামিন। ছবি: সংগৃহীত।
স্বামীর পেনশনের টাকাতেই সংসার চলত। কিন্তু, তাঁর মৃত্যুর পর সেই পেনশনও আচমকা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিদেশ বিভুঁইয়ে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে যেন আকুল পাথারে পড়েছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন কর্মীর স্ত্রী হেবে বেঞ্জামিন।
পেনশনের জন্য সরকারের কাছে বার বার দরবার করেও কোনও সুরাহা হয়নি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন তিনি। শেষমেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপে পারিবারিক পেনশন পাবেন ৯৪ বছরের বৃদ্ধা হেবে। ২৯ বছরেরও বেশি সময় ধরে জমে থাকা সেই বকেয়া পেনশনের হিসাবে ৭৫ লক্ষ টাকা পাবেন তিনি। সেই সঙ্গে বেতন কমিশনের ধার্য করা নানা নিয়মের ফলে সুদ ও অন্যান্য বকেয়া বাবদ ওই টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি টাকা। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সে টাকা পাবেন হেবে।
হেবের প্রয়াত স্বামী কর্নেল জর্জ বেঞ্জামিন সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন ১৯৬৬ সালে। এর পর তিনি সপরিবার ইজরায়েলে বসবাস করতে শুরু করেন। ১৯৯০-তে সেখানেই মারা যান কর্নেল বেঞ্জামিন। সে সময় থেকেই তাঁর পরিবারিক পেনশন বন্ধ হয়ে যায়। স্বামীর পেনশন ছাড়া হেবের আর কোনও আয়ও ছিল না। তখন সেনার শীর্ষ কর্তাদের কাছে চিঠিপত্রের মারফত পেনশনের আবেদন করেন হেবে। কিন্তু তাতে বিশেষ কোনও লাভ হনি বলে জানান হেবে। বেঞ্জামিনদের এক পরিবারিক বন্ধু মনপ্রীত কান্ত বলেন, “১৯৯৮ সালে ইলাহাবাদের প্রিন্সিপাল কন্ট্রোলার অব ডিফেন্স অ্যাকাউন্টস (পেনশন)-এর তরফ থেকে একটি চিঠি পান হেবে। তাতে জানানো হয়েছিল, এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের পরেই পেনশন পেতে পারেন তিনি। এর পর গোটা বিষয় নিয়ে আর কোনও উচ্চবাচ্য করেনি সেনা।”
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে সরকার গড়তেই প্রিয়ঙ্কা: রাহুল
কর্নেল জর্জ বেঞ্জামিনের সঙ্গে বিয়ের দিনে হেবে বেঞ্জামিন। ছবি: সংগৃহীত।
মনপ্রীত জানিয়েছেন, গোটা ঘটনায় বেশ ভেঙে পড়েছিলেন হেবে। তবে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়লেও লড়াই ছাড়েননি। ইজরায়েলে ভারতীয় দূতাবাসের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। গত বছরের ২৪ জুলাই পর্যন্ত সরকারি যে সমস্ত চিঠিপত্র পেয়েছেন তাতে সদর্থক কোনও কথাই লেখা ছিল না। মনপ্রীত বলেন, “কোনও আশা না পেয়ে শেষমেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়তের কাছে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নেন হেবে। চিঠিতে ওই তিন জনের ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের আবেদন করেন তিনি।”
আরও পড়ুন: চিনকে সমর্থন, প্রজাতন্ত্র দিবস বয়কটের ডাক দিল মিজোরাম
হেবের চিঠি মিলতেই কাজ হয়। প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বিষয়টি প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে জানানো হয়। মন্ত্রকের তরফে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই বিষয়টি মিটমাট করতে নির্দেশ দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট বিভাগকে। এর পরেই সবুজ সঙ্কেত মেলে সেনার তরফে।
২৯ বছরেরও বেশি সময়ের পেনশনের সঙ্গে পঞ্চম, ষষ্ঠ এবং সপ্তন বেতন কমিশনের নির্ধারিত সুদ ও অন্যান্য বকেয়া মিলে হেবে এখন ১ কোটি টাকা পাবেন। মনপ্রীত জানিয়েছেন, চলতি মাসের মধ্যেই পেনশনের সমস্ত টাকা পাওয়ার আশা করছেন হেবে।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদেরদেশবিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy