ক্ষমতার অলিন্দে দাপিয়ে বেড়ান যাঁরা, যে দলেরই হোন না কেন, তাঁদের ভিতরে মিলমিশ অনেক। মন্ত্রী, আমলা, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, ফিল্মিতারকা সব মিলিয়ে সুখী পারিবারিক ছবি। সেই সুখের ঘরে আতঙ্কও নেমে আসে মাঝে মাঝে। দুর্নীতির এক-একটা মামলায় রাজা হয় ভিখারি।
আর যাঁর বিধ্বংসী স্পিন বোলিংয়ে এ দেশে বছর বছর ধরে দুর্নীতিগ্রস্ত বড়বড় রাজনীতিকদের পায়ের তলার জমি সরে যাচ্ছে, তিনি জননেতা নন, আইন ও অর্থনীতির তুখোড় জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষিণের এক রাজনীতিক। ওয়ান-ম্যান-আর্মি, সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। সুখী পরিবারে সকলেই তাঁকে আড়চোখে দেখেন। লোকটাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা সর্বত্র। হবে না-ই বা কেন, লোকটা তো মূর্তিমান একটা আতঙ্ক!
না হলে জয়ললিতার সুখের সংসার ছারখার করে দিতে পারেন! ১৮ বছর আগে আয় বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় জয়াকে আদালতে টেনে নিয়ে যান তিনি। যার রায়ে রাজনীতির ফিল গুড বাতাবরণেও সহচরী শশীকলার সঙ্গেই জেলে ঢুকলেন আম্মা। আর এই দিনটা দেখার জন্যই এত বছর ধরে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন স্বামী। আদালতে জয়ার উইকেট পড়তেই তাই তাঁর মন্তব্য, লড়াইটা সহজ ছিল না। উনি শুধু প্রভাবশালী নন, বিরাট ধনী। বড় আইনজীবী দিয়ে মামলা দীর্ঘায়িত করেছেন, কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
স্বামীর সামনে টিঁকে থাকাটা যে কত কঠিন, টের পাচ্ছেন জয়ার প্রধান প্রতিপক্ষ ডিএমকে নেতা করুণানিধিও। টু-জি মামলা দেশের সর্বোচ্চ আদালতে টেনে নিয়ে যান স্বামী। যার জেরে তৎকালীন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজা, করুণানিধি-কন্যা কানিমোঝি জেলে যান। আর সে সবের ধাক্কায় লোকসভা ভোটে ধুয়ে মুছে গিয়েছে ডিএমকে।
জাতীয় দলগুলিকেও দীর্ঘদিন ধরে বেগ দিয়ে আসছেন স্বামী। কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রামকৃষ্ণ হেগড়ের বিরুদ্ধে ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ এনেছিলেন। ১৯৮৮ সালে ইস্তফা দেন হেগড়ে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও, গডম্যান চন্দ্রস্বামীকে নিয়েও সক্রিয় ছিলেন তিনি। সনিয়া গাঁধীও তাঁর অভিযোগ থেকে রেহাই পাননি। ২০০৪-এ নির্বাচন কমিশনে সনিয়ার হলফনামায় ভুল ডিগ্রির অভিযোগ আনেন স্বামী। পরে দুঃখপ্রকাশ করতে হয় সনিয়াকে। সনিয়া, রাহুলকে জড়িয়ে ন্যাশনাল হেরাল্ডের শেষ মামলাটিও তাঁরই অবদান।
প্রাক্তন আইনমন্ত্রী স্বামী অতীতে হার্ভার্ড-এ অর্থনীতি পড়াতেন। দিল্লি আইআইটি-তেও পড়িয়েছেন। সেই সঙ্গে রাজনীতি। তাঁর জনতা পার্টি বিজেপিতে মিশেছে। তবে তাঁকে নিয়ে কৌতুহল একটাই এ বার নিশানায় কে? কার ঘর ভাঙতে চলেছেন তিনি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy