Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

বয়স নিয়ে তোপ আডবাণীর, অস্বস্তিতে মোদী

ক্ষোভ জমা হচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। আজ তা অসন্তোষের আকারে প্রকাশ করে নরেন্দ্র মোদীর অস্বস্তি বাড়িয়ে তুললেন প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী। নিছক বয়সের কারণে নরেন্দ্র মোদী সরকারে ঠাঁই পাননি। তা নিয়ে বিতর্ক হওয়ায় একটি পথপ্রদর্শক কমিটিতে আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীদের সামিল করা হয়েছে। আজ পর্যন্ত যে কমিটির একটিও বৈঠক হয়নি। মোদী আসার পর দলের মধ্যে এমন ‘অপ্রাসঙ্গিক’ হয়ে পড়া আডবাণী আজ বলেন, “যুবকদের অবশ্যই সুযোগ দেওয়া উচিত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫০
Share: Save:

ক্ষোভ জমা হচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। আজ তা অসন্তোষের আকারে প্রকাশ করে নরেন্দ্র মোদীর অস্বস্তি বাড়িয়ে তুললেন প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী।

নিছক বয়সের কারণে নরেন্দ্র মোদী সরকারে ঠাঁই পাননি। তা নিয়ে বিতর্ক হওয়ায় একটি পথপ্রদর্শক কমিটিতে আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীদের সামিল করা হয়েছে। আজ পর্যন্ত যে কমিটির একটিও বৈঠক হয়নি। মোদী আসার পর দলের মধ্যে এমন ‘অপ্রাসঙ্গিক’ হয়ে পড়া আডবাণী আজ বলেন, “যুবকদের অবশ্যই সুযোগ দেওয়া উচিত। কিন্তু বয়স নিয়ে এত মাতামাতি উচিত নয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতাও তৈরি হয়। যাঁর বয়স হয়েছে, তিনি কাজের নন, এই ভাবনার সঙ্গে আমি একমত নই।”

সংসদে বিরোধীদের সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে। তার মধ্যেই আডবাণীর এই বিস্ফোরণ মোদী সরকারকে আরও বেকায়দায় ফেলল। বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, মোদী ও অমিত শাহ উভয়েই আডবাণীর এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ। তাঁরা অবশ্য মনে করছেন, আডবাণীর মতো নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। তাই আপাতত এই মন্তব্যকে উপেক্ষা করারই কৌশল নিচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব।

আর তিন দিন পর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন। তাই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বাজপেয়ী প্রসঙ্গে অতীতের নানা ঘটনা বর্ণনা করছেন আডবাণী। তখনই নানা প্রশ্নে বেরিয়ে আসছে মোদী প্রসঙ্গে তাঁর ক্ষোভের কথা। গত কাল এমন এক সাক্ষাৎকারে আডবাণী মন্তব্য করেছিলেন, ভবিষ্যতে ফের জোট সরকারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিজেপি একার ক্ষমতায় সরকার গড়া নিয়ে এখন ঢাক পেটাচ্ছে। বিভিন্ন রাজ্যেও একার ক্ষমতায় মসনদ দখলের কথা বলছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তখন আডবাণীর এই মন্তব্য মোদী শিবিরের যে বিশেষ পছন্দ হয়নি, তা বলাই বাহুল্য। আজ আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে বয়সের কারণে পদ থেকে বাদ পড়ার সমীকরণটাই প্রকাশ্যে খারিজ করে দিলেন আডবাণী।

আডবাণী ঘনিষ্ঠ এক নেতা অবশ্য বলেন, “এটি মোদীর বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য নয়। আরএসএসও প্রবীণদের সরানোর চিত্রনাট্য তৈরি করেছিল প্রথমে। কিন্তু মন্ত্রিসভা গঠনের সময়ও সেটি যে নরেন্দ্র মোদীও কার্যকর করবেন, এটা ভাবা যায়নি।” ওই নেতার কথায় “অটল ও আডবাণীর জন্যই আজ বিজেপি এই জায়গায়। যদি এমন এক প্রবীণ নেতার অভিজ্ঞতাকে কোনও ভাবেই কাজে লাগানো না হয়, সেটি অনভিপ্রেত।”

আডবাণী আজ বলেই ফেলেন, “অনেকে বলেন, অটল-আডবাণী যুগের অবসান হয়েছে। কিন্তু অটলজির তো শরীর ঠিক নেই। আমার তো স্বাস্থ্যের দিক থেকে কোনও চিন্তা নেই।” আডবাণী আজ এ-ও স্মরণ করিয়ে দিতে ভোলেননি, গুজরাত দাঙ্গার পরে যখন বাজপেয়ী মোদীকে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরাতে চেয়েছিলেন, সেই সময় তিনি কী ভাবে মোদীর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন।

বিজেপি সূত্রের মতে, মোদীকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করানোর সময় থেকেই প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছিলেন আডবাণী। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে মোদী বিপুল সংখ্যা নিয়ে জিতে আসার পর বিজেপিতে এখন বেসুরো গাওয়ার রেওয়াজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার মানে এই নয়, তাঁর সমস্ত সিদ্ধান্তে সকলের সায় রয়েছে। এখন সংসদে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় সরকার কিছুটা বিপাকে। তাই বিজেপিতে মোদীর বিরোধী স্বরগুলিও বেরোতে শুরু করেছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE