Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

জমি ফেরাতে দলকে পথে চান রাহুল

যন্তর-মন্তরে আজ ধর্নায় বসেছে জনতা পরিবার। সংসদের গাঁধী মূর্তির তলায় তৃণমূল। কিন্তু কংগ্রেস কোথায়? সংসদে না আছে সংখ্যার জোর, বাইরে না আছে মনোবল। প্রাসঙ্গিকতার বিচারেও দল তলানিতে। কংগ্রেসের এই ভাঙা হাটে আন্দোলনের আঁচ ফেরাতে চান রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সহসভাপতির নির্দেশ, বড়দিনের উৎসব শেষেই আম আদমির সঙ্গে মোদী সরকারের ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ বিষয়গুলি নিয়ে রাজ্যে-রাজ্যে পথে নামতে হবে কংগ্রেসকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৪৮
Share: Save:

যন্তর-মন্তরে আজ ধর্নায় বসেছে জনতা পরিবার। সংসদের গাঁধী মূর্তির তলায় তৃণমূল। কিন্তু কংগ্রেস কোথায়?

সংসদে না আছে সংখ্যার জোর, বাইরে না আছে মনোবল। প্রাসঙ্গিকতার বিচারেও দল তলানিতে। কংগ্রেসের এই ভাঙা হাটে আন্দোলনের আঁচ ফেরাতে চান রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সহসভাপতির নির্দেশ, বড়দিনের উৎসব শেষেই আম আদমির সঙ্গে মোদী সরকারের ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ বিষয়গুলি নিয়ে রাজ্যে-রাজ্যে পথে নামতে হবে কংগ্রেসকে। রাহুলের মতে, বাকি বিরোধীরা নিজ নিজ লক্ষ্যে চলছে। জনতার সমস্যার কথা কেউ বলছে না। বলছে না সরকারের বিশ্বাসঘাতকতার কথা। কংগ্রেস সেই বিষয়গুলি তুলে ধরবে।

দলীয় সূত্র জানাচ্ছে, তিনটি বিষয়ে জোর দিচ্ছেন রাহুল। এক, একশো দিনের প্রকল্প-সহ বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে কেন্দ্রের বরাদ্দ ছাঁটাই। দুই, নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি দিলেও মধ্যবিত্তকে আর্থিক সুরাহা না দেওয়া। কংগ্রেসের দাবি, আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম যতটা কমেছে, তাতে পেট্রোলের দাম কমে লিটার প্রতি ৩৪ টাকা হওয়া উচিত। নেমে আসা উচিত ডিজেলের দামও। কর চাপিয়ে সরকার তা হতে দেয়নি। কমায়নি গৃহঋণে সুদের হার। তিন, কৃষিপণ্যের সরকারি সহায়ক মূল্য বাড়ানোর দাবি। লোকসভার নির্বাচনী ইস্তাহারে বিজেপি ঘোষণা করেছিল, কেন্দ্রে সরকার গড়লে এমন ভাবে কৃষিপণ্যের সহায়ক মূল্য দেওয়া হবে যাতে উৎপাদনের খরচের ওপর অন্তত ৫০% মুনাফা থাকে। কিন্তু চাল-গমে কুইন্টাল প্রতি সহায়ক মূল্য বেড়েছে মাত্র ৫০ টাকা। কেন্দ্রের এই ‘বঞ্চনাকেই’ অস্ত্র করতে বলছেন রাহুল। সংসদে অধিবেশনের একেবারে শেষ বাজারে আজ লোকসভায় জ্বলে উঠেছিল কংগ্রেস। অন্য বিরোধী দলগুলির তুলনায় ঢের বেশি আক্রমণাত্মক ছিল মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। তবে রাহুল-ঘনিষ্ঠ দলের এক নেতা বলেন, সংসদে হট্টগোল করা বড় বিষয় নয়। সম্প্রতি দলের শীর্ষ নেতাদের সংসদীয় কৌশল নির্ধারণে আলোচনায় বসেন রাহুল। সেখানে আলোচনা হয়, সারদা-কাণ্ডে কোণঠাসা তৃণমূল পিঠ বাঁচাতে সংসদে তোলপাড় করছে। বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখতে তৎপর জনতা পরিবারের কুশীলবরা। এর জেরে সরকারের কাজ পণ্ড হওয়ায় কংগ্রেসের সুবিধা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু কংগ্রেস নিজে কী করছে? রাহুলের বক্তব্য, আদমির সমস্যার কথা কথা বলছে না কেউ। সেই পরিসরটাই দখল করতে পথে নামতে হবে কংগ্রেসকে। আনুষ্ঠানিক ভাবে রাহুল পথে নামবেন ৪ জানুয়ারি। ওই দিন অসমে সভা করবেন তিনি। অসমের নতুন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অঞ্জন দত্তের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, কেরলের নেতাদের সঙ্গেও ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নিয়ে কথা বলেছেন রাহুল। গত সপ্তাহের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের ঝগড়াঝাঁটি দেখে বিরক্ত রাহুল তাঁদের মিলেমিশে একটি দিশা নথির খসড়া তৈরির ‘হোম টাস্ক’ দিয়েছিলেন। রাজ্যে কংগ্রেসকে ঘুরে দাঁড় করানোর লক্ষ্যে ওই ‘দিশা নথি’র একটি খসড়া রাজ্য নেতৃত্ব তৈরি করে ফেলেছেন। আগামী কাল ফের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন রাহুল। সেখানেই ওই খসড়া চূড়ান্ত হওয়ার কথা। ওই দিশা নথিতে বলা হবে, পুরসভাগুলির নির্বাচন ও ২০১৬-র বিধানসভা ভোটকে মাথা রেখে কংগ্রেস কী রণকৌশল নেবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE