ভেগান ডায়েট দীর্ঘ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি সরবরাহ করতে যথেষ্ট শক্তিশালী। ছবি: শাটারস্টক।
ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে ‘ভেগান’ খাদ্যাভ্যাস। স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ— উভয়ের জন্যই এই খাদ্যাভ্যাস ভাল, এমন দাবি করা হচ্ছে নানা মহলেই। প্রাণীদের থেকে পাওয়া সব রকমের উপাদান পরিত্যাগ করা হয় এই খাদ্যাভ্যাসে। মাংস তো বটেই, ডিম বা দুগ্ধজাত কোনও খাবারই এই খাদ্যাভ্যাসের অন্তর্ভুক্ত নয়।
পুষ্টিবিদদের মতে এই ডায়েট মেনে চলা মোটেই সহজ নয়। সঠিক নিয়ম মেনে এই ডায়েট না করলে শরীরে ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি ১২, জিঙ্ক, ক্যালশিয়াম, আয়রন ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো পুষ্টিগুণের মারাত্মক অভাব হয়। তবে এই খাদ্যাভাসে অভ্যস্ত হয়ে গেলে শরীরের পক্ষে দারুণ উপকারী। ঠিক কী কী উপকার পাওয়া যায়?
বেশ কিছু গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, ভেগান খাবার পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফোলেট এবং ভিটামিন এ, সি এবং ই সমৃদ্ধ। এ ছাড়াও ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং উপকারী উদ্ভিদ যৌগগুলি বেশি পরিমাণে থাকে এই ডায়েটে। এই কারণেই ভেগান ডায়েট দীর্ঘ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি সরবরাহ করতে যথেষ্ট শক্তিশালী। এই খাদ্যাভাসের সুফল কী?
১) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে জানা গিয়েছে যে, শাকসব্জি, ফলে থাকা বিভিন্ন ফাইটোকেমিক্যালস (উদ্ভিদে থাকা বিশেষ প্রাকৃতিক রাসায়নিক যা বিভিন্ন রং ও গন্ধ সৃষ্টি করে, বিভিন্ন ফল ও সব্জিতে প্রায় ৪,০০০ ফাইটোকেমিক্যালস পাওয়া যায় যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী, যেমন টোম্যাটো, তরমুজ, গাজর, আম, জাম, পালং শাক ইত্যাদি) শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এই ডায়েট কিন্তু উচ্চ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ। সে কারণেই আমেরিকা, ইউরোপের মানুষদের মধ্যে ভেগান ডায়েট ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে। ভারতেও এর প্রভাব পড়েছে যথেষ্ট।
২) ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমে: পুষ্টিবিদদের মতে এই খাদ্যাভাস কিন্তু দীর্ঘ দিন মেনে চললে টাইপ-২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমে। এই জীবনধারা রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ভেগান ডায়েট ওজন ধরাতে সাহায্য করে। স্থূলতাও কিন্তু ডায়াবিটিসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এই ডায়েটে রক্তে এইচবি১সির ভারসাম্য বজায় থাকে।
৩) ক্যানসারের ঝুঁকি কমে: এই ডায়েট কিন্তু ক্যানসারের মতো মারণ রোগের ঝুঁকি কমায়। পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরীর মতে স্তন ক্যানসার, যোনি ক্যানসার, কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে।
৪) হৃদ্রোগের প্রবণতা কমে: ভেগান ডায়েটে তাজা শাকসব্জি, ডাল এবং ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার বেশি মাত্রায় রাখা হয়। এই সব খাবার কিন্তু হার্টের পক্ষে বেশ ভাল। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যাঁরা মাংসাশী বা নিরামিষাশী তাঁদের তুলনায় যাঁরা ভেগান তাঁদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ৭৫ শতাংশ কম হয়।
৫) অ্যালঝাইমার্সের ঝুঁকি কমে: এ খাদ্যাভাস অ্যালঝাইমার্স রোগের ঝুঁকি কমায়। কোভিড পরবর্তী সময়ে কমবয়সিদের মধ্যেও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। আর বেশি বয়সে তো এই রোগে অনেকেই আক্রান্ত হন। এই খাদ্যাভ্যাস সেই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy