Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Reasons Behind Silent Heart Attack

কোভিডের পর কমবয়সিদের মধ্যে বেড়েছে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি! কোন অভ্যাস ঠেলে দিচ্ছে মারণরোগের দিকে

রোজের রুটিনের বেশ কিছু ভুল আমাদের ঠেলে দিচ্ছে হৃদ্‌রোগের দিকে। কিছু ভুল আমরা জেনেবুঝে করছি, কিছু অভ্যাসের কুপ্রভাব অজান্তেই মারণরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।

আপনার অজান্তেই কোন অভ্যাস হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে?

আপনার অজান্তেই কোন অভ্যাস হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে? ছবি: শাটারস্টক।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:০১
Share: Save:

জীবনযাত্রায় নানা অনিয়ম, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চায় অনীহা— শরীরে ডেকে আনে নানা রোগবালাই। চিকিৎসকদের মতে, যত বেশি প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়ছি আমরা, ততই নানাবিধ অসুখ কামড় বসাচ্ছে শরীরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সমীক্ষা অনুযায়ী, ওবেসিটি, কোলেস্টেরল, থাইরয়েডের মতো সমস্যা বাড়ছে বিশ্ব জুড়ে। আর সেই সব রোগের হাত ধরে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সংবাদমাধ্যমে চোখ রাখলেই আচমকা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর। ১৮ থেকে ৬০— সব বয়সিদেরই কাবু করছে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক বা সাইলেন্ট অ্যাকিউট মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (এসএএমআই)।

রোজের রুটিনের বেশ কিছু ভুল আমাদের ঠেলে দিচ্ছে হৃদ্‌রোগের দিকে। কিছু ভুল আমরা জেনেবুঝে করছি, কিছু অভ্যাসের কুপ্রভাব অজান্তেই মারণরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। বিভিন্ন সমীক্ষায় ধরা পড়েছে যে কোভিড মহামারি আসার পর থেকে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হার্টের যাবতীয় অসুখবিসুখকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় কার্ডিয়োভাসকুলার ডিজ়িজ়। এই রোগের ঝুঁকি যাঁদের বেশি, তাঁদের দু’ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। প্রথম ভাগ হল ‘নন-মডিফায়েড রিস্ক ফ্যাক্টর’ অর্থাৎ, চাইলেই আমরা পরিবর্তন করতে পারব না। এ ক্ষেত্রে যাঁদের বাবা-মা কিংবা পূর্বপুরুষদের হৃদ্‌রোগের ইতিহাস রয়েছে, যাঁদের বয়স বেশি— তাঁদের ক্ষেত্রে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও বেশি। চাইলেই এই ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব নয়। দ্বিতীয় ভাগ হল ‘মডিফায়েড রিস্ক ফ্যাক্টর’ অর্থাৎ, যা চাইলে পরিবর্তন করা যায়। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি এড়াতে কোন নিয়মগুলি মেনে চলা জরুরি?

১) হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি এড়াতে সবার আগে ধূমপান ছাড়তে হবে। ধূমপান ও তামাকজাত যে কোনও দ্রব্য হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ। এর পাশাপাশি মদ্যপানেও লাগাম টানা জরুরি। পরিমিত মদ্যপানে সমস্যা নেই, তবে রোজ রোজ মদ খেলে হৃদ্‌রোগ বাসা বাঁধার আশঙ্কাও বাড়বে।

২) যাঁর যত ওজন বেশি, তাঁর হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন কত হওয়া উচিত, তা জেনে নিন। ওবেসিটির সমস্যা থাকলেই সতর্ক হোন। ওজন কমানোর জন্য ডায়েটের উপর নজর দিতে হবে। কার্বোহাইড্রেট খাওয়া কমাতে হবে, খেলেও রিফাইন্ড কার্বোহাইট্রেট অর্থাৎ, সাধারণ পাউরুটির বদলে ব্রাউন ব্রেড, ময়দার রুটির বদলে আটার রুটি খেতে পারেন। ডায়েটে বেশি করে শাকসব্জি ও ফল রাখতে হবে। অল্প অল্প করে বার বার খান। বাইরের খাবার নয়, বাড়িতে তৈরি খাবার খান। ভাজাভুজি, প্রক্রিয়াজাত খাবার, রেডমিট এড়িয়ে চলুন। খাবারে নুন ও চিনির পরিমাণ কমিয়ে আনুন।

৩) সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন শরীরচর্চা করতেই হবে। ৭ দিন করতে পারলে খুব ভাল। ভারী শরীরচর্চা না করলেও রোজ অন্তত পক্ষে আধ ঘণ্টা দ্রুত গতিতে হাঁটতে পারেন। সঙ্গে কিছু হালকা ব্যায়াম কিংবা যোগাসন করলেও হবে।

৪) পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণে নানা বিষয় নিয়েই আমরা অত্যধিক চাপে থাকি। ফলে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি তো বাড়েই, সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, বেশি খাওয়া, ধূমপান, ঘুমের সমস্যা, ক্লান্তি দেখা দেয়। সেই জন্য কোনও ধরনের মানসিক চাপ বা উদ্বেগকে প্রশ্রয় না দেওয়ার চেষ্টা করুন। মনঃসংযোগ বাড়াতে ধ্যান করতে পারেন। বই পড়া কিংবা গান শোনার অভ্যাস থাকলে, সেগুলিও চাপমুক্ত করতে সহায়তা করে। কাজের সময় বেঁধে দিন। অফিসের কাজ বাড়ি বয়ে আনবেন না। অবসরে নিজের পছন্দের কাজ যেমন ঘুরতে যাওয়া, ছবি তোলা, সিনেমা দেখা, পরিবার কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর উপর জোর দিতে পারেন।

৫) রাতে ঠিক মতো ঘুম না হলে কিন্তু হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ে। নিয়মিত যদি ঠিক মতো ঘুম না হয়, তা হলে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ ভাল মতো হয় না। কাজেই শরীর তখন স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণ ঘটায়, যার ফলে হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা থাকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Heart Attack Risk Silent Heart Attack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy