সহজেই ওজন কমবে, যদি নিয়ম মেনে হাঁটাহাঁটি করেন। ছবি: শাটারস্টক।
সুস্থ থাকতে হাঁটার যে কোনও বিকল্প নেই, সে কথা চিকিৎসকরা একবাক্যে স্বীকার করেন। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, ওজন কমানো— সব সমস্যার একটাই সমাধান। ঠিক কী ভাবে কত ক্ষণ হাঁটলে কতটা উপকার পাবেন, ওজন কমাতে পারবেন তার কিছু বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে এই ধারণা প্রচলিত যে, দিনে দশ হাজার পা হাঁটাই আদতে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি।
সম্প্রতি ক্রনিক ওবেসিটি থেকে কী ভাবে রেহাই পাওয়া সম্ভব, তাই নিয়ে একটি সমীক্ষা করা হয়েছে। ‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত সেই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, দিনে আট হাজার ছ’শো পা হাঁটলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব। যাঁরা ইতিমধ্যেই ওবেসিটিতে আক্রান্ত, তাঁদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য দিনে এগারো হাজার কদম হাঁটতে হবে।
মোট ছ’শো জনকে নিয়ে চার বছর ধরে করা এই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কেবল ওজন ঝরাতেই নয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে, ডায়াবিটিস কমাতে এমনকি মানসিক অবসাদ কমাতেও হাঁটাহাঁটির জুড়ি মেলা ভার।
কিন্তু কী ভাবে হাঁটলে, দিনে কতটা হাঁটলে তা ওজন ঝরাতে সাহায্য করে, এটা না জানলে পণ্ডশ্রম! বাজার-দোকান, অফিস, কেনাকাটা ইত্যাদিতে হেঁটে গেলেই উপকার পাবেন, না কি ঘণ্টার পর ঘণ্টা শরীরকে কষ্ট দিয়ে হাঁটলে তবেই মিলবে সুফল? কত ক্ষণ ধরে হাঁটবেন বা কখন হাঁটবেন, হাঁটার এ সব নিয়মনীতি না জেনেই পথে নেমে পড়লে কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তাই সচেতন হোন এখন থেকেই।
অনেকটা হাঁটলে বেশি মেদ ঝরবে, আর কম হাঁটলে সে সুফল পাবেন না, এমন সরল ভাবনা অনেকের মধ্যেই আছে। এ ভাবনা খুব ভুল নয়, কিন্তু শরীরকে কষ্ট দিয়ে জোর করে অনেকটা হাঁটতে গিয়ে অসুখ ডেকে আনাও কোনও কাজের কথা নয়। তার চেয়ে নিয়ম মানুন। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, একটানা হাঁটাতেই লুকিয়ে সুফল। টুকটাক খুচরো হাঁটায় শরীরের কলকব্জা ভাল থাকে ঠিকই, কিন্তু তাতে ওজনের হেরফের হয় না। হাঁটা না হয় শুরু করলেন, কিন্তু কেমন গতিতে হাঁটবেন? ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, লক্ষ্য রাখতে হবে সেকেন্ডে দু’টি স্টেপ। অত হিসাব কষতে না পারলে অন্তত ১৫-২০ মিনিটে দেড় কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পারলে ভাল।
কিছু নিয়মবিধি
পোষ্যকে সঙ্গে করে বা দলবেঁধে গল্প করতে করতে না হাঁটাই ভাল। এতে হাঁটার গতি শ্লথ হয়ে পড়ে। মোবাইল কানে নিয়ে হাঁটলে হাঁটার উপকারিতা আসে না, কথা বলতে গিয়ে হাঁপিয়ে গিয়ে বেশি হাঁটা যায় না। মাথায় একগাদা চিন্তা নিয়ে হাঁটবেন না। হাঁটা একটা নেশা। অভ্যাসের মতো রুটিনে ঢুকিয়ে নিয়ে দেখুন, মন্দ লাগবে না। কিন্তু প্রথম প্রথম একঘেয়ে লাগলে মোবাইলের হেডফোন কানে লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে হাঁটুন। এতে এমন কিছু হরমোন ক্ষরিত হবে, যা দুশ্চিন্তা কমায়। তবে বড় রাস্তায় হাঁটলে হেডফোন গুঁজে হাঁটার সময় সচেতন থাকুন। হাঁটার সময় পরার জন্য জুতো খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পায়ে আরাম দেয়, এমন জুতো পরে হাঁটুন। হাতে বা পিঠে খুব বেশি ভার বইবেন না তখন, এতে ক্লান্ত হবেন তাড়াতাড়ি। অনেকের নানা রকম হাড়ের অসুখ থাকে, তাঁদের হাঁটাহাঁটিও নিয়ন্ত্রণে থাকে। এমন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই হাঁটুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy