Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Tips to Fight Diabetes

ভারত মধুমেহ রাজধানী! খাদ্যাভ্যাসই কারণ, বলছেন চিকিৎসকেরা, কোন কোন খাবারে লুকিয়ে ‘বিষ’?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানাচ্ছে, আঠারোর্ধ্ব ভারতীয়দের মধ্যে ৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাইপ টু ডায়াবিটিসে আক্রান্ত। ৫০ শতাংশ মানুষ জানেনই না, তাঁদের শরীরে বাসা বেঁধেছে মধুমেহ রোগ।

গ্রাফিক— আনন্দবাজার অনলাইন

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৫৪
Share: Save:

ভারতে মধুমেহ রোগ বাড়ছে! কিন্তু, কতটা বাড়ছে? কিছু পরিসংখ্যান জানালে বোঝা যাবে। এ দেশে ৫ বছরের শিশুরাও প্রায়ই আক্রান্ত হচ্ছে ডায়াবিটিসে। বছর নয়েক আগের একটি সমীক্ষা বলছে, ভারতের ৬৬.১১ শতাংশ শিশুর শরীরে অস্বাভাবিক মাত্রায় শর্করার উপস্থিতি দেখা গিয়েছিল। ওই সমীক্ষাতে এ-ও জানা গিয়েছিল যে, দেশে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৯৭ হাজার ভারতীয় শিশুর টাইপ ওয়ান ডায়াবিটিস ছিল। একই সময়ে শিশুদের মধ্যে টাইপ টু ডায়াবিটিসের প্রবণতাও বেড়েছিল উল্লেখযোগ্য হারে। এই সবই ২০১৫ সালের হিসাব। যা দেখার পরে সতর্ক করেছিলেন দেশের স্বাস্থ্যবিদেরা। এর ঠিক চার বছর পর ২০১৯ সালের একটি সমীক্ষার ফলে দেখা যাচ্ছে, পরিস্থিতি বদলায়নি। বরং পৃথিবীর ২০৪টি দেশের মধ্যে ভারতেই সবচেয়ে বেশি শিশু ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হয়েছে। ২০১৯ সালের সমীক্ষায় আরও জানা যাচ্ছে, ভারতেই ডায়াবিটিস সংক্রান্ত কারণে শিশুর মৃত্যু হয়েছে সবচেয়ে বেশি!

শিশুদেরই যখন এই অবস্থা, তখন বড়দের মধ্যে ওই রোগের প্রভাব কতটা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানাচ্ছে, আঠারোর্ধ্ব ভারতীয়দের মধ্যে ৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাইপ টু ডায়াবিটিসে আক্রান্ত। আড়াই কোটি ভারতীয় প্রিডায়াবেটিক। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে তাঁদের ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ডায়াবিটিসে আক্রান্ত ৫০ শতাংশ মানুষ জানেনই না, তাঁদের শরীরে বাসা বেঁধেছে মধুমেহ রোগ।

কেক-কুকিজ় খাওয়া বেড়েছে ভারতে।

কেক-কুকিজ় খাওয়া বেড়েছে ভারতে। ছবি: সংগৃহীত

ভারত মধুমেহ রাজধানী

চিকিৎসকেরা বলছেন, গত কয়েক বছরে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। পরিস্থিতি এমনই যে ভারতকে 'বিশ্বের মধুমেহ রাজধানী' বলা হচ্ছে। এর কারণ কী, তা জানতে একটি যৌথ গবেষণা চালিয়েছিল আইসিএমআর এবং মাদ্রাজ় ডায়াবিটিস রিসার্চ ফাউন্ডেশন। তাতে উঠে আসা একটি তথ্য বলছে, চিপস- জাতীয় ভাজাভুজি খাবার, কেক-কুকিজ় এবং মেয়োনিজ় ভারতীয়দের ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ।

চিপস বা ভাজাভুজি খাবারে রয়েছে বেশি এজিইজ়।

চিপস বা ভাজাভুজি খাবারে রয়েছে বেশি এজিইজ়। ছবি: সংগৃহীত

কেন বাড়ছে ডায়াবিটিস?

গবেষণালব্ধ তথ্যে এ-ও বলা হচ্ছে যে, ভারতীয়দের জীবনযাপনের সঙ্গে ভীষণ ভাবেই জড়িয়ে গিয়েছে ওই সমস্ত খাবার। আর এর প্রত্যকটিই আলট্রা প্রসেসড ফুড বা অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার। যাতে ভরা থাকে ‘এজিইজ়’ বা অ্যাডভান্সড গ্লাইকেশন এন্ড প্রডাক্টস। এজিইজ় থাকা খাবার সরাসরি অগ্ন্যাশয়ের ক্ষতি করে। বাড়িয়ে তোলে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতাও।

কারণ খুঁজতে গিয়ে ভারতীয়দের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনকেই দায়ী করছেন চিকিৎসকেরা। যে সমস্ত চিকিৎসক ওই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁরা বলছেন, ভারতের খাদ্যাভ্যাসে নানা রকম বদল এসেছে গত কয়েক বছরে। কী কী বদল? চিকিৎসকেরা বলছেন, ভারতীয়েরা এখন অনেক বেশি শর্করা, স্নেহ পদার্থ, নোনতা খাবার, মিষ্টি খাবার এবং প্রাণীজ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাচ্ছেন। এর পাশাপাশি ব্যস্ত জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় শরীরচর্চাও করছেন না। এই সব কিছুই ডায়াবিটিসের হার বৃদ্ধির কারণ।

চিকিৎসকেরা বলছেন, ভারতীয়েরা এখন অনেক বেশি শর্করা, স্নেহ পদার্থ, নোনতা খাবার, মিষ্টি খাবার এবং প্রক্রিয়াজাত প্রাণীজ প্রোটিন খাচ্ছেন।

চিকিৎসকেরা বলছেন, ভারতীয়েরা এখন অনেক বেশি শর্করা, স্নেহ পদার্থ, নোনতা খাবার, মিষ্টি খাবার এবং প্রক্রিয়াজাত প্রাণীজ প্রোটিন খাচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত

খাবারে ‘এজিইজ়’ কম রাখবেন কী ভাবে?

ভারতীয়দের দৈনন্দিন খাবারে ‘এজিইজ়’-এর মাত্রা বেড়েই চলেছে। যা ডায়াবিটিসের একটা বড় কারণ। অথচ, চাইলে এজিইজ় এড়ানো যায়। যে কোনও রকমের তেলে ভাজা, রোস্ট করা বা গ্রিল করা খাবার থেকে দূরে থাকুন। খাবার সিদ্ধ করার পরে ভাজলে বা রোস্ট করলে বা গ্রিল করলে এজিইজ় তৈরি হয়। প্রচুর তেল বা ঘি খাওয়া এড়িয়ে চলুন। বদলে বেশি ফল খান, শাক-সব্জি খান, দানাশস্য বা ডাল খান। শুকনো ফল, রোস্ট করা আখরোট, ভাজা মাংস বা প্রক্রিয়াজাত মাংস এড়িয়ে চলুন।

অন্য বিষয়গুলি:

Diabetes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy