টাকা খরচ নেই, জিনিসপত্রের প্রয়োজন নেই। দরকার কেবল এক জোড়া জুতো। ব্যস। এই দিয়েই আপনি উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবিটিসের ঝুঁকি এবং ওজন কমাতে পারেন। পেশি এবং হাড়ও মজবুত হতে পারে। করণীয় বলতে একটিই, জুতো গলিয়ে কয়েক পা হেঁটে এলেই উপকার পেতে পারেন। কিন্তু কোনও কিছুই অতিরিক্ত ভাল নয়। তা ছাড়া সকলের জন্য বলা যায় না, ‘‘যত ইচ্ছা হাঁটুন’’। এ ক্ষেত্রেও পরিমিতিবোধ থাকা দরকার।
বোস্টনের নিউ ইংল্যান্ড ব্যাপটিস্ট হাসপাতালের স্পোর্টস মেডিসিন বিভাগের সহ-প্রধান, সরভ শাহ জানাচ্ছেন, আপনি যদি হাঁটতে ভালবাসেন, এবং হাঁটার সময়ে কিলোমিটার নিয়ে চিন্তা করতে না চান, তা হলে আপনাকে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, বয়স, ফিটনেস, গাঁটের জোর এবং পরিবেশগত পরিস্থিতি (যেমন আবহাওয়া এবং হাঁটার উপযুক্ত জায়গা)।
খুব বেশি হাঁটলে কিসের ঝুঁকি বাড়ে?
অতিরিক্ত হাঁটাহাঁটি করলে গাঁটের ব্যথা বাড়তে পারে, পায়ের পেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে বয়স্করা সঠিক জুতো পরেন না বলে ঝুঁকি বেড়ে যায়। সঠিক জুতো না পরার ফলে এবং ভঙ্গি সঠিক না থাকায় কোমরে, হাঁটুতে এবং পশ্চাৎদেশে ব্যথা হতে পারে। তাই শরীরে অসুবিধা হলেই বিরতি নেওয়া উচিত। জোর করে হেঁটে গেলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি।

সঠিক জুতো না পরার ফলে এবং ভঙ্গি সঠিক না থাকায় কোমরে, হাঁটুতে এবং পশ্চাৎদেশে ব্যথা হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
খুব বেশি হাঁটার ব্যাপারে কাদের সতর্ক থাকা উচিত?
হাঁটার যে হাজারো উপকার, তা অধিকাংশ চিকিৎসকই মানেন। কিন্তু অতিরিক্ত হাঁটার ফলে যে সমস্যা দেখা দেয়, সে বিষয়েও বলা হল। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে আরও বেশি করে সতর্ক থাকা উচিত অতিরিক্ত হাঁটার ব্যাপারে।
নিউইয়র্কের অস্থিরোগ সার্জন এবং স্পোর্টস মেডিসিনের চিকিৎসক র্যান্ডি কোহন বলেন, ‘‘উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদ্রোগের মতো সমস্যায় ভুগছেন যাঁরা, তাঁদের বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে হবে। দীর্ঘ ক্ষণ হাঁটাচলা করার ফলে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়। যদি তাঁর চিকিৎসক তাঁকে হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলে থাকেন, তা হলে যে কোনও ব্যায়াম করার সময়েই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে খুঁটিনাটি জেনে নিতে হবে। সেই মতো পরিকল্পনা করতে হবে।
আরও পড়ুন:
যদি আগে থেকেই পায়ের পেশি এবং গাঁটে ব্যথার সমস্যা থাকে, তা হলেও বেশি হাঁটা উচিত নয়। চিকিৎসকের বক্তব্য, ‘‘যাঁদের পা এবং শরীরের নিম্নাঙ্গে সমস্যা রয়েছে, যেমন আর্থ্রাইটিস বা নির্দিষ্ট কোনও বাত, তাঁরা যদি হিসেব করে না হাঁটেন, তা হলে এই সমস্যাগুলি আরও বৃদ্ধি পাবে।’’
চিকিৎসক সরভ শাহের পরামর্শ, হাঁপানি বা সিওপিডি-র মতো শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও অতিরিক্ত পরিশ্রম থেকে দূরে থাকা উচিত।