দৌড়নোর উপকার কতটা। ছবি: সংগৃহীত।
করোনার সময় আলসেমি করে দিন কেটেছে। শরীরচর্চায় ইতি টেনেছিলেন অনেকেই। এখন আবার পুরোদমে কাজকর্ম শুরু হয়ে গিয়েছে।
আলস্য ছেড়ে যাঁরা শরীরচর্চা শুরু করবেন ভাবছেন, তাঁরা হয়তো ঠিক করতে পারছেন না, হাঁটবেন না কি দৌড়বেন?
চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রতি দিন নিয়ম মেনে হাঁটাও যেমন খুবই উপকারী, তেমনই দিনে সময় বার করে যদি মিনিট দশেক দৌড়নো যায়, তা হলে সারা শরীরের ব্যায়াম হয়।
জিমে গিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি নাড়াচাড়া করে শরীরচর্চা করার সময় নেই যাঁদের, অথচ দ্রুত মেদ ঝরাতে চান, তাঁদের জন্য দৌড়নোর চেয়ে ভাল ব্যায়াম আর নেই। তবে দৌড়লেই হল না, তারও একটা নিয়ম, গতি ও সময় আছে।
তা হলে জেনে নিন, কতক্ষণ ও কী ভাবে দৌড়বেন? দৌড়লে শরীরের কী কী উপকার হবে?
নিয়ম মেনে দৌড়ন
শুরুতেই গতি বাড়িয়ে দৌড়তে শুরু করবেন না। ধীরে শুরু করুন। তার পর সময় নিয়ে গতি বাড়ান। দৌড়নোর সময় শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার ব্যাপারটা খুব জরুরি।
পা ফেলার সঙ্গে তাল মিলিয়ে শ্বাস নিন এবং শ্বাস ছাড়ুন। এই পদ্ধতি মেনে চললে শরীরচর্চার সময় দেহে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের ঘাটতি হবে না। দৌড়নোর সময় মেরুদণ্ড সোজা রাখার চেষ্টা করুন, সামনের দিকে তাকান। কাঁধ শক্ত করে রাখবেন না। পেশি যত শিথিল থাকবে, ততই অক্সিজেন সারা শরীরে পৌঁছবে।
দৌড়নোর উপকারিতা কী কী?
১. সারা দিনে অন্তত দশ মিনিট দৌড়লে হার্ট ভাল থাকবে। ‘আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিয়োলজি’-র তথ্য বলছে, প্রতি দিন নিয়ম মেনে দৌড়লে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন খুব ভাল ভাবে হবে। রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা কমবে। হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যাবে।
২. শরীরের পাশাপাশি মনও থাকবে চনমনে। ‘জ়ামা সাইকিয়াট্রি’ বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন বলছে, দৌড়লে এন্ডরফিন নামক ‘সুখী হরমোন’-এর নিঃসরণ বেড়ে যাবে। ফলে মনমেজাজ ভাল থাকবে। অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা, উদ্বেগ ভোগাবে না।
৩. দৌড়লে মেদ ঝরবে খুব তাড়াতাড়ি। ‘হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল’-এর গবেষকেরা দাবি করেছেন, ১০ মিনিট দৌড়লে অন্তত ১০০ ক্যালোরি ‘পুড়বে’। কম সময়ে দ্রুত মেদ ঝরাতে চাইলে দৌড়ের কোনও বিকল্প নেই।
৪. অনিদ্রার সমস্যা দূর হবে। ‘স্লিপ মেডিসিন’ নামে চিকিৎসা সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, দৌড়লে সারা শরীরের পেশির ব্যায়াম হয়। অক্সিজেন কোষে কোষে গিয়ে পৌঁছয়। তাই ঘুমের সমস্যা থাকলে তা চটজলদি দূর হয়।
৫. দৌড়লে পেশির জোর বাড়বে, অস্থিসন্ধিগুলিও মজবুত হবে। হাত-পায়ে ব্যথা-বেদনা থাকলে তা-ও দূর হবে। হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে শরীরে। রোগ প্রতিরোধ শক্তিও বাড়বে। তবে প্রতি দিন একটা নির্দিষ্ট গতিতেই দৌড়তে হবে। ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড় নয়। হাঁপিয়ে গেলে বিশ্রাম নিয়ে তার পর দৌড়ন। সকলের ক্ষেত্রে দৌড়নোর গতি এক না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ফিটনেস প্রশিক্ষকের পরামর্শ নেওয়া খুব জরুরি।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। যদি হৃদরোগ থাকে বা হার্টে অস্ত্রোপচার হয়ে থাকে বা অস্থিসন্ধিতে ব্যথা থাকে, তা হলে দৌড়নো ঠিক হবে কি না, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy