কিডনির জটিল রোগের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। ক্রনিক কিডনি ডিজ়িজ় নিয়ে উদ্বেগ কম নয়। কমবয়সিরাও ভুগছে এই রোগে। দূষিত বা রেচন পদার্থ যদি শরীর থেকে বেরিয়ে না যায়, তা হলে তা জমতে থাকে অভ্যন্তরেই। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শরীরের বাকি সমস্ত অঙ্গ। কিডনির কাজ হল এই দূষিত পদার্থগুলিকেই ছেঁকে বার করে দেওয়া। শরীরকে সার্বিক ভাবে সুস্থ রাখার জন্য কিডনি ততটাই গুরুত্বপূর্ণ, যতটা গুরুত্ব রয়েছে মস্তিষ্ক, হার্টের মতো অঙ্গগুলির।
রোজের বেশ কিছু অভ্যাস কিডনি ভাল রাখবে। জেনে নিন সেগুলি কী কী।
পর্যাপ্ত জল খেতেই হবে। ওজন ও শরীরের অবস্থা বুঝে দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার জল খাওয়াই বাঞ্ছনীয়।
কাঁচা নুন কম খাওয়াই ভাল। বেশি ঝাল-মশলা দেওয়া খাবার বা অতিরিক্ত নুন আছে এমন খাবার কম খাবেন। এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানিয়েছেন, কিডনির রোগীদের খাদ্যতালিকা বানাতে হবে কিছু নির্দিষ্ট খাবার দিয়ে। মনে রাখতে হবে, শরীরের টক্সিন ও বর্জ্য যত কম তৈরি হয়, এমন খাবার বাছতে হবে। ব্লু বেরি, স্ট্রবেরি, ক্র্যানবেরিজ়, কালো আঙুর, অলিভ অয়েল, বাঁধাকপি, ডিমের সাদা অংশ খাওয়া যেতে পারে। ভাত বা রুটির বদলে ডালিয়া, কিনোয়া, গ্লুটেন-মুক্ত শস্য খেতে পারেন। প্রোটিনজাতীয় খাবার যে একেবারে খাওয়া যাবে না, তা নয়। তবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে হবে।
দিনে মাছ কিংবা মাংস খেলে রাতে আর কোনও প্রোটিন খাওয়া যাবে না। ডাল, দুধ, পনিরও বেশি না খাওয়াই ভাল। পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করাও জরুরি। না হলে কিডনির রোগের পাশাপাশি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন:
সোডিয়াম আর ফসফরাস-সমৃদ্ধ খাবার বেশি না খাওয়াই ভাল। বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবারে এ ধরনের উপাদান অনেক বেশি থাকে। ফলে প্যাকেটজাত খাবার বেশি না খাওয়াই ভাল। প্রোটিন ও দুগ্ধজাত খাবারের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বেশি করে খেতে হবে সবুজ শাকসব্জি।
নিয়মিত শরীরচর্চা করলে গোটা শরীরই ভাল থাকে। তার সঙ্গে সুস্থ থাকে কিডনিও। হাঁটাহাঁটি, সাইকেল চালানো, সাঁতার, জগিং বা যোগাসন নিয়মিত করতে পারলে কিডনির জটিল রোগের ঝুঁকি কমবে।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। কিডনির রোগ ধরা পড়লে অথবা উপসর্গ দেখা দিলে কী কী খাবেন আর কী নয়, তা চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল। নিজে থেকে কোনও ওষুধ খাওয়া বা ডায়েট মেনে চলা ঠিক হবে না।