জিনগত ভাবে কী ভাবে হাঁপানি চিহ্নিত করা যাবে? ফাইল চিত্র।
মুখ দিয়ে বেশির ভাগ সময়েই শ্বাস নেয় শিশু? ঘুমোতে গেলে শ্বাসকষ্ট হয়? সাধারণ সর্দিকাশি হলে শ্বাসনালিতে মিউকাস জমে হালকা শ্বাসের সমস্যা হতে পারে। কিন্তু শ্বাসকষ্টের এই সমস্যা যদি লাগাতার হতে থাকে, এবং গভীর ভাবে শ্বাস নেওয়ার সময়ে টান ওঠে বা বুকে ব্যথা হয়, তা হলে বুঝতে হবে হাঁপানির লক্ষণ দেখা দিয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ, বাতাসে দূষণ-সহ আরও নানা কারণে হাঁপানি হতে পারে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, হাঁপানির নেপথ্যেও রয়েছে জিনের কারসাজি। ঠিক কোন জিনের কারণে হাঁপানি বা শ্বাসের সমস্যা হচ্ছে, তা সাধারণ পরীক্ষায় চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। নতুন পরীক্ষাই সেই অসাধ্যসাধন করবে বলে দাবি।
আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ পিট্সবার্গের বিজ্ঞানীরা নতুন এক রকম ‘ন্যাজ়াল সোয়াব টেস্ট’ তৈরি করেছেন, যা শিশুর নাক থেকে নেওয়া নমুনার জিনগত বিশ্লেষণ করে হাঁপানির সঠিক কারণ ধরে দেবে। চিকিৎসাও হবে সেই কারণ অনুসারে।
‘জামা’ বিজ্ঞানপত্রিকায় এই গবেষণার খবর ছাপা হয়েছে। গবেষক হুয়ান সেলেড জানিয়েছেন, এত দিন হাঁপানি পরীক্ষা করার জন্য কেবল ব্রঙ্কোস্কোপি করা হত। এতে ফুসফুসে সংক্রমণ রয়েছে কি না, তা ধরা পড়ত। কিন্তু ঠিক কী কারণে হাঁপানি হচ্ছে, সে কারণ অধরাই থেকে যেত। গবেষকের মতে, শরীরে দু’টি জিনের অবস্থানের তারতম্যের কারণে হাঁপানি হতে পারে— টি২-হাই এবং টি২-লো। এই টি২-হাই জিনটি যদি বেশি সক্রিয় হয়, তা হলে হাঁপানি বা ফুসফুসের সংক্রমণ মারাত্মক পর্যায়ে যেতে পারে। আবার টি২-লো জিনটির প্রকারভেদ রয়েছে। এর একটি প্রকার হল টি১৭। সেটি যদি অধিক সক্রিয় থাকে, তা হলে ফুসফুসে প্রদাহ বেশি হবে। সে ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টও বেশি হবে। এই জিনের আধিক্যে সিওপিডি-র সমস্যাও দেখা দিতে পারে। আপাতত ৪৫৯ জন শিশুর উপর পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। তাতে ২৩-২৯ শতাংশের মধ্যে টি২ জিন ধরা পড়েছে, ৪৭ শতাংশের মধ্যে টি১৭ জিন চিহ্নিত করা গিয়েছে।
পিট্সবার্গ ইউনিভার্সিটির গবেষকদের বক্তব্য, কোন জিনের কারণে হাঁপানির সমস্যা দেখা দিয়েছে বা তার তীব্রতা বাড়ছে তা সঠিক ভাবে চিহ্নিত করা গেলে কী ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োজন, তা বোঝা যাবে। এত দিন তা হত না। সে কারণে হাঁপানিও সারত না। কেবল তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত। শিশুদের ক্ষেত্রে যদি গোড়া থেকেই সেই জিনটিকে চিহ্নিত করা যায়, তা হলে সঠিক চিকিৎসায় হাঁপানি নির্মূল করা সম্ভব হবে বলেই দাবি গবেষকদের। নতুন পরীক্ষা জিনগত বিন্যাস থেকে হাঁপানির সঠিক কারণ শনাক্ত করতে পারবে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy