বাড়িতে কী কী ডিটক্স পানীয় বানাবেন, জেনে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।
শরীরকে ‘ডিটক্স’ করার কথা সব পুষ্টিবিদেরাই বলেন। কিন্তু ডিটক্স করা ঠিক কাকে বলে? আসলে পরিবেশ, খাবার ইত্যাদি থেকে প্রতি দিনই কিছু বিষাক্ত পদার্থ আমাদের শরীরে ঢোকে। সুস্থ থাকার জন্য এই সব টক্সিন বা বিষ শরীর থেকে বার করা প্রয়োজন। তা না হলে বিভিন্ন রকম সংক্রামক রোগ বাসা বাঁধবে শরীরে। রোগ প্রতিরোধ শক্তিও কমবে। শরীরকে বিষ থেকে মুক্ত করাই হল ‘ডিটক্স’।
দিনভর ব্যস্ততায় ঠিকমতো খাওয়ার সময় নেই। বাড়ি থেকে নাকেমুখে কিছু গুঁজেই অফিসের জন্য দৌড়। যে দিন বাড়ির খাবার আনছেন না, সে দিন বাইরের খাবারেই পেট ভরাতে হচ্ছে। বাড়ি ফিরে হয় অনলাইনে অর্ডার দিচ্ছেন, অথবা রাস্তা থেকেই রোল-চাউমিন কিনে খেয়ে ফেলছেন। রোজের এ সব অভ্যাসও শরীরে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ জমা করছে। তাই দেখবেন, ওষুধ খেয়েও গ্যাস-অম্বলের সমস্যা কমছেই না। শরীর ও মনে ক্লান্তি ভাব। কাজে উৎসাহই পাচ্ছেন না। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ঘরেই এমন কিছু পানীয় আমরা বানাতে পারি, যা শরীরকে পুরোপুরি ‘ডিটক্স’ করবে। চলুন জেনে নিই, কী কী সে সব পানীয়।
১. বড় মুখের একটি জার বা কাচের বোতল নেবেন। এ বার সেটি জল দিয়ে ভর্তি করে, তাতে খোসা সমেত ছোট ছোট টুকরো করে কাটা ফল ফেলে দেবেন। মরসুমি যে কোনও ফল নিতে পারেন। এ বার জলে কয়েকটি পুদিনা পাতা দিয়ে জারের মুখ বন্ধ করে ফ্রিজে রেখে দিন। সারা রাত ফ্রিজে রেখে দিলে ভাল। পর দিন সেই জলই অল্প অল্প করে খান।
উপকারিতা: ফলের রস ও ফাইবার সমৃদ্ধ এই জল খেতেও সুস্বাদু এবং বার বার চা-কফি কিংবা প্যাকেটবন্দি ফলের রস বা নরম পানীয়ের থেকে অনেক বেশি উপকারী ও স্বাস্থ্যকর। হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমায়, মেদ ঝরায়, তা ছাড়া এর মধ্যে থাকা ভিটামিন ও খনিজ উপাদান শরীরে পুষ্টি জোগায়।
২. বানাতে পারেন শশার ‘ডিটক্স’ ওয়াটার। একটি কাচের বোতলে তিন থেকে চার টুকরো শশার টুকরো নিন। তার পর তাতে যোগ করুন লেবুর রস এবং পুদিনা পাতা। শেষে পরিমাণমতো জল দিয়ে বোতলের মুখ আটকে নিন। ভাল করে ঝাঁকিয়ে তুলে রাখুন ফ্রিজে। কয়েক ঘণ্টা পরে পান করুন।
উপকারিতা: এই পানীয় শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখে, মেদ ঝরাতেও উপকারী। নিয়মিত খেলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও দূর হবে।
৩. ডাবের জল দিয়েও বানাতে পারেন ‘ডিটক্স’ পানীয়। এই পানীয় তৈরি করতে আপনার প্রয়োজন পড়বে ১ গ্লাস ডাবের জল, ১ চামচ লেবুর রস এবং পুদিনা পাতা। এ ক্ষেত্রে একটি গ্লাসে ডাবের জল নিয়ে তাতে যোগ করুন লেবুর রস ও পুদিনা পাতা। এই তিন উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে কাচের বোতলে ঢেলে রাখুন। তার পর ফ্রিজে রেখে দিন। ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বাদে ফ্রিজ থেকে বের করে খেতে পারেন।
উপকারিতা: এই পানীয় শরীর আর্দ্র রাখবে এবং জমে থাকা টক্সিনও বার করে দেবে। নিয়মিত খেলে হজমের সমস্যা কমবে। শরীর ও মনের ক্লান্তি দূর হবে।
৪. তরমুজের ‘ডিটক্স’ পানীয়ও খুব উপকারী। পানীয় বানাতে প্রয়োজন ৬-৭ টুকরো তরমুজ, লেবুর রস। একটি কাচের জারে তরমুজের ওই ৬/৭টি টুকরো, লেবুর রস যোগ করে তাতে পরিমাণমতো জল ঢালুন। পুদিনা পাতাও মেশাতে পারেন। তার পর সেই পানীয় ফ্রিজে রেখে দিন কয়েক ঘণ্টা। ফ্রিজ থেকে বের করে ঠান্ডা ঠান্ডা পান করলেই আরাম পাবেন।
উপকারিতা: গরমের দিনে শরীর ঠান্ডা রাখবে তরমুজের ‘ডিটক্স’ পানীয়। তরমুজের ভিতরের যে লালচে রং, তার উৎস হল লাইকোপেন, যা আসলে একটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই লাইকোপেনের প্রভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। শুধু তা-ই নয়, কিছু ক্ষেত্রে ক্যানসার প্রতিরোধী হিসাবেও কাজ করে এই যৌগ।
৫. জিরে-ধনে-মৌরির জল
একদম ঘরোয়া এই ‘ডিটক্স’ পানীয় বাঙালি বাড়িতে বেশ জনপ্রিয়। পানীয়টি বানাতে হলে পরিমাণমতো জলে এক চামচ গোটা জিরে, ধনে এবং মৌরি মেশান। এ বার এই মিশ্রণ রেখে দিন সারা রাত। সকালে ঘুম থেকে উঠে জল ছেঁকে নিয়ে পান করুন।
উপকারিতা:এই পানীয় নিয়মিত খেলে পেট ঠান্ডা থাকবে, সেই সঙ্গে ত্বকের একাধিক সমস্যাও দূর হবে। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থাকলে, তা কমে যাবে।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। সকলের শরীর সমান নয়। অনেক খাবারেও বিধিনিষেধ থাকে। তাই ডিটক্স পানীয় খাওয়ার আগে একবার অবশ্যই পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy