দুধ খেলে ‘পিসিওএস’-এর সমস্যা হবে? ছবি: সংগৃহীত।
ছোট থেকে তন্বীকে দুধ খাওয়ানোর জন্য অনেক সাধ্যসাধনা করতে হয়েছে ওর মাকে। কখনও গল্প বলে, কখনও দুধের মধ্যে তন্বীর পছন্দের চকোলেট মিশিয়ে ভুলিয়ে মুখের সামনে ধরতে হয়েছে। কারণ, দুধ না খেলে শরীরে ক্যালশিয়ামের অভাব হবে। তাতে হাড়ও দুর্বল হয়ে পড়বে। দুধ না খেলে ছলেবলে তাকে ছানা, পনির কিংবা সন্দেশও খাওয়ানো হত। কিন্তু বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে মায়ের ভোল পুরো পাল্টে যেতে দেখে তন্বী তো একেবারে হতবাক! এখন দুধের জিনিস বেশি খেতে দেখলেই ওর মা বকাবকি করেন। কারণ, ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার পর পরই তন্বী ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত হয়। তন্বীর মা শ্রমণা বলেন, “পিসিওএস-এর জন্য ওর পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হয়। তাই দুধ খেতে বারণ করি। ইনস্টাগ্রামে বিভিন্ন পুষ্টিবিদের করা ‘রিল’ দেখেছি। তাঁদের পরামর্শ পিসিওএস-এর ক্ষেত্রে দারুণ কাজ করে।”
তবে চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ সকলেই এ বিষয়ে একমত যে, ‘পিসিওএস’ নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম’ (পিসিওএস) হল একটি সাধারণ হরমোনজনিত ব্যাধি। বয়ঃসন্ধির সময়ে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। জীবনযাপন এবং খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনতে পারলে এই রোগের প্রকোপ ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব। কিন্তু, দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার বেশি খেলে কি সত্যিই সমস্যা বেড়ে যেতে পারে? এ প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদ পম্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এ বিষয়ে তেমন তথ্যপ্রমাণ না থাকলেও দেশ-বিদেশে বিভিন্ন রকম গবেষণাপত্র রয়েছে। দুধ বা দুগ্ধজাত খাবারের মধ্যে ল্যাক্টোজ় রয়েছে। অন্যান্য ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’-এর মতো ওভারির মধ্যে থাকা সিস্টের বাড়বৃদ্ধির আরও একটি কারণ হল ‘ল্যাক্টোজ়’। তাই অতিরিক্ত দুধ, ছানা বা দুগ্ধজাত খাবার খেলে সমস্যা হতে পারে।”
দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার না খেলে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে কী করে?
পুষ্টিবিদেরা কিন্তু দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেন না। পম্পিতাও এ বিষয়ে সহমত। তিনি বলেন, “দুধ না খেলে শরীরে নানা খনিজের অভাব হবে। তাই একেবারে বন্ধ না করে দিনে ১০০ থেকে ১৬০ মিলিগ্রাম দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেতে বলি। এ ক্ষেত্রে দই খাওয়াও নিরাপদ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy