কম বয়সের ছবি দেখলে চেনাই যায় না বছর চল্লিশের সুমিতাকে। একেবারে কঞ্চির মতো ছিপছিপে রোগা ছিলেন তিনি। তবে বিয়ের পর থেকেই একটু একটু করে ফুলতে শুরু করেন। আত্মীয়-বন্ধুদের মধ্যে তা নিয়ে হাসাহাসি, কানাঘুষো চলে। অনেকেই কম খাওয়ার পরামর্শ দেন, শরীরচর্চা করতে বলেন। কিন্তু সুমিতা কিছুতেই বুঝতে পারেন না, গোটা শরীর থাকতে শুধু পেট, কোমরের কাছে মেদ জমার পরিমাণ বাড়ছে কেন? ডায়েট, শরীরচর্চা করে দেহের অন্যান্য অংশের হাড় বেরিয়ে গেলেও পেটের মেদ ঝরছে না। গন্ডগোলটা হচ্ছে কোথায়?
আরও পড়ুন:
চিকিৎসকেরা বলছেন, বিয়ে, স্থান বা জল পরিবর্তনের চেয়েও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল হরমোনের পরিবর্তন। তা যে কোনও কারণেই হতে পারে। হরমোনের ঘাটতি বা আধিক্য, কোনওটিই শরীরের জন্য ভাল নয়। পেট, কোমরে অতিরিক্ত মেদ জমার পিছনে টাইপ-২ ডায়াবিটিস, প্রদাহজনিত সমস্যার ভূমিকা রয়েছে। এই ধরনের সমস্যার মূল কারণ কিন্তু হরমোনের সমতা নষ্ট হওয়া।
পেট, কোমরের মেদের সঙ্গে কোন কোন হরমোনের যোগ রয়েছে?
১) রজোনিবৃত্তি এবং ইস্ট্রোজেন:
রজোনিবৃত্তি বা মেনোপজ়ের সময় হলে ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমাণ কমতে শুরু করে। সারা শরীরে স্নেহপদার্থের বণ্টনে সাহায্য করে এই হরমোনটি। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এই হরমোনের পরিমাণ কমতে থাকলে মেদ জমার প্রবণতাও বাড়তে থাকে।
আরও পড়ুন:
২) মানসিক চাপ এবং কর্টিসল:
মানসিক চাপ বশে না রাখতে পারলে কিন্তু কোমর, পেটে মেদ জমার পরিমাণ বাড়তে থাকে। কারণ, মানসিক চাপ বাড়তে থাকলে শরীরে কর্টিসল হরমোনের পরিমাণও বাড়তে থাকে। যা দেহের নিম্নাংশে মেদ জমার পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে।
৩) ইনসুলিন হরমোনের সমতা:
রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা নষ্ট হয়। শরীরচর্চা না করলে কিংবা খাদ্যাভাসের উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ না থাকলেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। যার ফলে কোমর, পেটে মেদ জমে। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, ইনসুলিন হরমোনের সমতা নষ্ট হওয়ার পিছনে জিনেরও ভূমিকা রয়েছে।