এড্সের মতো মারণরোগ কী ভাবে সারানো যাবে, তা নিয়ে গবেষণা চলছে বিশ্ব জুড়েই। ওষুধ, ইঞ্জেকশন-সহ নানা রকম চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তবে চিকিৎসা শুরুর আগে জরুরি রোগ সঠিক ভাবে চিহ্নিত করা। বেশির ভাগ সময়েই এড্স হয়েছে কি না, তা নির্ভুল ভাবে চিহ্নিত করাই যায় না। তাই রোগ চিহ্নিত করার পদ্ধতি নিয়েও গবেষণা চলছিল এত দিন। দক্ষিণ আফ্রিকার একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, তাঁরা এমন এক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যা দিয়ে কম সময়ে ও কম খরচে নির্ভুল ভাবে এইচআইভি ভাইরাস চিহ্নিত করা যাবে।
এত দিন রোচে প্লাজমা স্পট কার্ডে রক্তের ফোঁটা ফেলে রোগ ধরা হত। এ বার প্লাজমা পেপার কার্ড নামে নতুন এক ডিভাইস তৈরি করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার টাফ্টস ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। ‘ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স’ জার্নালে এই গবেষণার খবরও ছাপা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, রোচে স্পট কার্ডে রক্তের ফোঁটা ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই পরীক্ষা করতে হত। এ জন্য রোগীকে বার বার ক্লিনিকে আসতে হত। কিন্তু প্লাজমা পেপার কার্ডে রক্তের ফোঁটা সংরক্ষণ করে রাখা যাবে অনেক দিন। চিকিৎসকেরা সময় নিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে পারবেন। রোগীরও হয়রানি কম হবে। তা ছাড়া নতুন ডিভাইসে অনেক কম সময়ে নির্ভুল ভাবে রোগ চিহ্নিত করা যাবে বলেও দাবি বিজ্ঞানীদের। তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, ভাইরাসের মিউটেশন বা রাসায়নিক বদল হচ্ছে কি না, শরীরে তা কতটা ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে, সে তথ্যও পাওয়া যাবে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিতে এখন ক্যানসারের চিকিৎসাতেও আশার আলো দেখা গিয়েছে। ক্যানসার সারিয়ে সুস্থ হচ্ছেন বহু মানুষ। এডসের চিকিৎসা এখনও সেই পর্যায়ে না গেলেও ধীরে ধীরে এইচআইভিকে রোখার উপায়ও হাতে আসছে গবেষকদের। হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস বা এইচআইভি এক বার মানব শরীরে প্রবেশ করলে তা আক্রমণ করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি ব্যবস্থাকে। এই ভাইরাস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এমন ভাবে তছনছ করে দেয় যে, সামান্য অসুখও তখন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যেতে পারে। এখনও পর্যন্ত এই রোগ সম্পূর্ণ ভাবে নিরাময় করার মতো কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করা যায়নি। তবে আগামী দিনে সাফল্য পাওয়া যাবে বলেই আশা বিজ্ঞানীদের।