সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং মুর্শিদাবাদে অশান্তির পরে বিজেপি-শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার অভিযোগে ইতিমধ্যেই সরব নানা সংগঠন। এই পরিস্থিতিতে বাংলার শ্রমিকদের নিরাপত্তার দাবিতে সোমবার ওড়িশা এবং গুজরাতের বিজেপির দুই মুখ্যমন্ত্রী যথাক্রমে মোহন মাঝি ও ভূপেন্দ্র পটেলকে চিঠি লিখলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। পাল্টা সরব হয়েছে বঙ্গ বিজেপি।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীরের অভিযোগ, “ভারতের নাগরিক, গরিব নিরীহ বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের নির্যাতন করছে পুলিশ। এমনকি, দেশছাড়া করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” ওড়িশার সঙ্গেই গুজরাতের সুরাত-সহ লাগোয়া এলাকায় এই ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে বলে তাঁর অভিযোগ। শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকার অধিকার রক্ষার জন্য ওড়িশা ও গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীরা যাতে পদক্ষেপ করেন, সেই আর্জি জানিয়েছেন বহরমপুরের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ।
পাল্টা সরব হয়েছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, “উনি (অধীর) আগে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখুন। সেখানে বিজেপির সরকার নেই। সেখানকার একটি ‘টেক্সটাইল হাবে’ বাংলার প্রচুর শ্রমিক কাজ করেন। প্রতিদিন সেখানে পুলিশি তল্লাশি চলছে।”
অধীরের মতোই একই অভিযোগে সরব হয়েছে বিভিন্ন সংগঠনও। সিটু অনুমোদিত ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নে’র তরফে আসাদুল্লাহ গায়েনেরও অভিযোগ, গুজরাতে অন্তত দু’শো পরিযায়ী শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠন পরিযায়ী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে নানা বার্তা দিচ্ছে। ধৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে পদক্ষেপ করুক পশ্চিমবঙ্গ সরকার।” সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের শ্রমিক সংগঠন এআইসিসিটিইউ-র রাজ্য সম্পাদক বাসুদেব বসুর অভিযোগ, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, অসমের মতো বিজেপি-শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে প্রশাসনের মদতে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আক্রমণ ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটি হেল্প ডেস্কও খুলেছে ওই সংগঠন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)