চুলের বৃদ্ধি ও নতুন গজানোর জন্য প্রোবায়োটিক খাওয়া প্রয়োজন? ছবি: ফ্রি পিক।
চুলে চিরুনি বোলালেই গোছাগোছা চুল উঠে আসছে? মাথা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে! কী করবেন বুঝতে পারছেন না?
একরাশ ঘন সুন্দর চুল পেতে পরিচর্যার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেতে বলেন পুষ্টিবিদরা। সেই খাদ্য তালিকায় শুধু প্রোটিন নয়, ভিটামিন এবং খনিজও জরুরি। যার অভাব পূরণ সম্ভব সব্জি ও ফল দিয়ে। তবে, এই তালিকায় প্রোবায়োটিক থাকলে কি বাড়তি লাভ হবে?
প্রোবায়িটক কী?
আমাদের শরীরে যেমন খারাপ ব্যাক্টেরিয়া আছে, তেমনই ভাল ব্যাক্টিরিয়া আছে। এই ভাল ব্যাক্টিরিয়া হজমশক্তি বাড়ায়। খাদ্য বিপাকে সাহায্য করে। প্রোবায়োটিক শরীরে উপকারী ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতেই বিশেষ ভূমিকা নেয়। ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর কমপ্লিমেন্টারি অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ হেলথ’ বলছে দই-সহ একাধিক গ্যাঁজানো খাদ্যে প্রোবায়োটিক মেলে, এটি এক ধরনের অণুজীব। আদতে প্রোবায়োটিক ইস্ট অথবা ব্যাক্টিরিয়া, যা শরীরের পক্ষে ভাল।
প্রোবায়োটিক স্বাস্থ্যকর। কিন্তু এতে কি চুলও গজায়?
গবেষণা যা বলছে
আধুনিক গবেষণা বলছে, শরীরের পক্ষে উপকারী প্রোবায়োটিক চুলের জন্যও ভাল। চুলের বৃদ্ধিতেও এর ভূমিকা রয়েছে। প্রোবায়োটিক পরিপাকতন্ত্রকে ভাল রাখতে সাহায্য করে। ফাংশনাল ফুডস ইন হেলথ অ্যান্ড ডিজিজ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণা। এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ১২ সপ্তাহ ধরে দৈনিক দু’বার প্রোবায়োটিকে সমৃদ্ধ খাবার খেতে বলা হয়েছিল। তাতেই দেখা গিয়েছে, চুল গজানো ও বৃদ্ধির পাশাপাশি খুশকির সমস্যাও দূর হয়েছে এতে। ‘হেলিয়ান’ নামে একটি জার্নালেও এর ফলাফল সংক্রান্ত একটি গবেণষা প্রকাশ পায়। সেখানেই স্পষ্ট প্রোবায়োটিকের চুলের উপর ইতিবাচক প্রভাবের কথা।
প্রোবায়োটিক-চুলের সম্পর্ক
১. উপকারী ব্যাক্টিরিয়া হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি, বিভিন্ন খাবার থেকে বায়োটিন, ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন ডি, আয়রণ, জিঙ্কের মতো খনিজ শোষণেও সাহায্য করে। চুল মজবুত করতে ও বৃদ্ধিতে এই ধরনের ভিটামিন ও খনিজ বিশেষ সহায়ক।
২. উদ্বেগ কমাতেও ভূমিকা রাখে প্রোবায়োটিক। আবার উদ্বেগের সঙ্গে চুল ঝরার সম্পর্ক রয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, চুল পড়ার সঙ্গে উদ্বেগ জড়িত। বিশেষত ‘অ্যালোপেসিয়া অ্যারিয়াটা’-র সঙ্গে। তবে উদ্বেগ কমলে তা চুলের স্বাস্থ্যের জন্যই ভাল।
৩. প্রোবায়োটিক মাথার তালুর প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে। এতে খুশকি ও অন্যান্য সমস্যাও কমে। মাথার তালুতে কোনও সমস্যা না থাকলে, চুলের ঝরে পড়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনই চুলের বৃদ্ধিও দ্রুত হয়।
৪. প্রোবায়োটিক শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। চিকিৎসকরা বলছেন, ‘অ্যালোপেশিয়া অ্যারিয়েটা’-সহ চুলের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলেও। এতে চুলের ফলিকল দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। যার জেরে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেওয়া সম্ভব।
কী ভাবে প্রোবায়োটিক খাবেন?
১. ফারমেন্টেড বা গ্যাঁজানো খাবার প্রাকৃতিক ভাবেই এই উপাদান থাকে। যেমন টক দই, এতে থাকে ল্যাক্টো ব্যাসিলাস নামে উপকারী ব্যাক্টিরিয়া। এ ছাড়া ইয়োগার্ট, কিমচি, টেম্পে (গ্যাঁজানো সোয়াবিন)-সহ একাধিক খাবারে প্রোবায়োটিক মেলে। প্রতি দিনের খাদ্য তালিকায় এই ধরনের খাবার রাখলেই প্রোবায়োটিক পাওয়া সম্ভব।
২. এ ছা়ড়া ক্যাপসুল, গুঁড়ো হিসাবেও প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায়। বাজারচলতি প্রোবায়োটিক পানীয় খাওয়া যেতে পারে।
৩. শ্যাম্পু থেকে ক্রিম, প্রোবায়োটিকে সমৃদ্ধ প্রসাধনীও রয়েছে বাজারে। পাশাপাশি, সরাসরি চুলের যত্নে টক দই ব্যবহার করা যেতে পারে।
তবে সংবেদনশীল ত্বক হলে প্রোবায়োটিক ব্যবহারে চুলকানি বা প্রদাহ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তা বাদ দেওয়া ভাল।
তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, চুল ঝরার সমস্যা রোধে ও চুলের বৃদ্ধিতে শুধু প্রোবায়োটিক যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত জল খাওয়া, ঘুমানো ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ। পাশাপাশি, চুলের যত্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy