কত ক্ষণ হাঁটলে ওষুধ ছাড়াই রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকবে? প্রতীকী ছবি।
বাড়তি ওজন, কোলেস্টেরল, রক্তে শর্করা, হৃদ্রোগের মতো খলনায়কদের জব্দ করতে হাঁটার কোনও বিকল্প নেই। কিন্তু, হাঁটাহাঁটির অভ্যাসকে নিয়মমাফিক করাতেই আপত্তি অনেকের। অথচ নিয়ম মেনে রোজ হাঁটলে অনেক ক্রনিক অসুখই সারতে পারে ম্যাজিকের মতো। তার মধ্যে একটি হল টাইপ ২ ডায়াবিটিস। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)জানিয়েছে, , প্রতি দিন নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট সময় ধরে হাঁটলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
পরিবর্তিত খাদ্যাভাস এবং জীবনশৈলীর আমূল বদলের জন্যই ডায়াবেটিস বাসা বাঁধছে বেশির ভাগ মানুষের শরীরেই। কেবল বয়স্করা নয়, ৩০ বছরের উপরে যুবক-যুবতীরাও আক্রান্ত ডায়াবিটিসে। আক্রান্তদের খাদ্যাভাস এবং জীবনশৈলীর পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সংগ্রহ করে আইসিএমআর জানিয়েছে, অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার বা জাঙ্ক ফুডে অভ্যস্ত এবং কায়িক পরিশ্রম কম করেন যাঁরা, তাঁদেরই শরীরে জাঁকিয়ে বসছে মধুমেহ রোগ। সে ক্ষেত্রে ডায়াবিটিস থেকে মুক্তি পেতে হলে হাঁটাহাঁটি করাই সবচেয়ে ভাল ব্যায়াম বলে মনে করছেন আইসিএমআরের গবেষকেরা। তার পিছনে যুক্তিও দিয়েছেন তাঁরা।
ডায়াবিটিস রোগীদের কেন হাঁটাহাঁটি করা জরুরি?
রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে পেটের মধ্যে থাকা ফ্যাট ভাঙতে থাকে। আইসিএমআরের গবেষকেদের ব্যাখ্যা, ফ্যাট ভেঙে ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি করে, যা রক্তবাহী নালিগুলিতে জমা হয়ে রক্ত সঞ্চালন কমিয়ে দেয়। ফলে রক্তবাহী নালি সঙ্কুচিত হতে থাকে। মূলত চারটি অঙ্গ— মস্তিষ্ক, হার্ট, কিডনি, লিভারে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে শরীরে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা দেখা যায়। এর থেকে স্ট্রোক হতে পারে, হৃদ্যন্ত্র বিকলও হতে পারে। চোখের ক্ষেত্রে রেটিনোপ্যাথি কিংবা অন্ধত্বও আসতে পারে। অনেক সময় পায়ের স্নায়ু অবশ হয়ে পায়ের অসাড়তা বা নিউরোপ্যাথি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নিয়মিত হাঁটলে শরীরের পেশিগুলি সচল থাকবে এবং রক্ত সঞ্চালন সঠিক থাকবে। রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতাও কমবে।
কী ভাবে ও কত ক্ষণ হাঁটবেন?
হাঁটাহাঁটির সবচেয়ে ভাল সময় হল ভোরবেলা। একটু তাড়াতাড়ি উঠে হাঁটার অভ্যাস করলে বিশুদ্ধ অক্সিজেন পাওয়া যায়, শরীর-মনের ক্লান্তিও কাটে। ডায়াবিটিসের রোগীদের ধীরেসুস্থে হেলেদুলে হাঁটলে হবে না। প্রতি দিন ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা হাঁটলে ভাল। একটানা হাঁটুন। হাঁপিয়ে গেলে কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিন, আবার হাঁটুন।
হিসেব বলছে, গড়ে ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটার বেগে এক ঘণ্টা হাঁটতে পারলে টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ কমে যাবে। যদি ঘণ্টায় ৩ থেকে ৫ কিলোমিটার বেগে হাঁটা যায়, তা হলে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমবে প্রায় ২৪ শতাংশ। শুধু হাঁটলেই হবে না। পরিমিত খাবার খেতে হবে। খাবারে শাকসব্জির পরিমাণ বাড়াতে হবে। পরিশ্রম করা, নিয়মিত হাঁটা, চিন্তা দূর করা, আনন্দে থাকা, উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার না খাওয়া ইত্যাদি মেনে চললেই জটিলতা কম হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy