সন্তানের আনন্দ যেমন জরুরি, তেমনই গুরুত্বপূর্ণ হল সুরক্ষা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পুজো মানেই হইচই, হুল্লোড়। নতুন পোশাক, ভূরিভোজ, আড্ডা। পুজোর সময় ঠাকুর দেখার উন্মাদনা ছোট-বড় সকলের মধ্যেই থাকে। তবে বাড়ির খুদে সদস্যটির ঠাকুর দেখার আগ্রহ অনেক বেশি থাকে। নতুন পোশাক পরে ভিড়ের মধ্যে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে ঠাকুর দেখাতে কোনও ক্লান্তি থাকে না তার। বরং ক’টা নতুন পোশাক হল, কোন দিন কত ঠাকুর দেখা হল, কোথায় কোথায় যাওয়া হল সে দিকেই মনোযোগ থাকে।
বাড়ির খুদেকে নিয়ে যদি ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা থাকে, তা হলে বাবা-মাকে কিছু দিকে খেয়াল রাখতেই হবে। এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “এক বছরের নীচে বয়স হলে একদমই ভিড়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না। শিশুকে নিয়ে বেরোতে হলে ভিড় এড়িয়েই চলতে হবে। খুব ভাল হয় যদি খুদেকে মাস্ক পরানো যায়। কিন্তু খুদেরা মাস্ক পরতে চায় না। তাই ব্যাগে রেখে দিন। খুব ভিড় জায়গায় গেলে পরিয়ে দিন, পরে আবার খুলে দেবেন। আর রাস্তার খাবার একদমই খাওয়ানো যাবে না। বাইরের জল, ফলের রস, রঙিন শরবত, আইসক্রিম একদমই নয়।”
বাড়ির খুদেটিকে নিয়ে যখন ঠাকুর দেখতে যাবেন, তখন কিছু বিষয় মাথায় রাখুন। আপনার সন্তানের আনন্দ যেমন প্রয়োজন, তেমন তার সুরক্ষাও খুব জরুরি। যাতে ভাল ভাবে ঠাকুর দেখা উপভোগ করতে পারেন, তার জন্য কিছু জিনিস অবশ্যই সঙ্গে রাখুন।
বাবা-মায়েরা কী কী রাখবেন সঙ্গে?
১) পুজোয় ভ্যাপসা গরমই থাকবে। তাই শিশুকে হালকা সুতির পোশাক পরান। সঙ্গে জল অবশ্যই রাখতে হবে। গরমে শরীর আর্দ্র রাখা খুব জরুরি। ঘণ্টায় ঘণ্টায় জল খাওয়াতে হবে শিশুকে। না হলেই তার শরীর খারাপ হবে।
২) শিশুর পরার জন্য অতিরিক্ত একটি জামা সঙ্গে রাখুন। ঘামে ভিজে গেলে সঙ্গে সঙ্গে জামা বদলে দিন। বৃষ্টি হলেও জামা কাজে লাগবে। ভিজে জামাকাপড়ে শিশুকে বেশি ক্ষণ রাখবেন না।
৩) রাস্তার খাবার শিশুকে খাওয়াবেন না। সঙ্গে শুকনো খাবার রাখুন। উৎসবের সময়ে বাইরের খাবার মানেই তেলমশলার ছড়াছড়ি। খুদেকে সে সব না খাওয়ানোই ভাল। তার চেয়ে বিস্কুট, কেক বা তার পছন্দের কিছু খাবার ব্যাগে রাখতে পারেন। কাজে লেগে যাবে।
৪) সব জায়গায় হাত ধোয়ার জল পাবেন না, তাই সঙ্গে জলের বোতল, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার, তোয়ালে রাখতে হবে। সঙ্গে অবশ্যই ওআরএস রাখবেন।
৫) শিশুর হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের ধাত থাকলে সঙ্গে ইনহেলার ও প্রয়োজনীয় ওষুধ অবশ্যই রাখতে হবে।
বর্ষাকাল মানেই হরেক রকম রোগের প্রকোপ। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে হাঁচি-কাশি কিংবা জ্বরের মতো উপসর্গ লেগেই থাকে। ছোটদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। ফলে যে কোনও সংক্রমণ তাদের আগে আক্রমণ করে। এমনিও বিভিন্ন রকম ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ভাইরাল জ্বর, কনজাঙ্কটিভাইটিসে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। তাই শিশুদের সাবধানে রাখতেই হবে। এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলছেন, “বাড়িতে কারও কনজাঙ্কটিভাইটিস হলে কিংবা পথেঘাটে কোনও রোগীর মুখোমুখি হলে চেষ্টা করুন নিরাপদ দূরত্বে থাকার। শিশুর যদি জ্বর আসে তা হলে প্যারাসিটামল দেওয়া যেতে পারে। তবে চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা না করে কোনও রকম অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াবেন না।” শিশুর অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে বাড়তি সচেতন থাকুন। এমন কোনও খাবার সন্তানকে খাওয়াবেন না, যেগুলি থেকে অ্যালার্জি হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy