Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Caregivers Depression

মানসিক রোগীর পরিচর্যাকারীও হতে পারেন অবসাদের শিকার! কী লক্ষণ দেখে সাবধান হবেন?

মানসিক রোগীদের যত্ন নেওয়া সহজ নয়। এর জন্য লাগে ধৈর্য, সহনশীলতা এবং সহানুভূতি। তবে, নিজের যত্ন না নিলে তাঁরা নিজেরাই অবসাদের শিকার হতে পারেন।

মানসিক রোগীর পরিচর্যাকারীও হতে পারেন অবসাদের শিকার।

মানসিক রোগীর পরিচর্যাকারীও হতে পারেন অবসাদের শিকার। — প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৪ ১৮:০২
Share: Save:

মানসিক ব্যাধি আজকাল বেড়ে চলেছে। দীর্ঘ দিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষদের সঙ্গে মানিয়ে চলা কিন্তু সহজ নয়। অবসাদগ্রস্ত মানুষের স্বামী-স্ত্রী, বাবা-মা, সন্তান বা ভাই-বোন, যিনি বা যাঁরা সবসময় সঙ্গে থাকেন, তাঁদের নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।

মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত ব্যাক্তির মধ্যে সবসময় মানসিক ভারসাম্য থাকে না। অল্পেতে রেগে যাওয়া, চিৎকার, সারা দিন হতাশাগ্রস্ত হয়ে থাকা, বা সারা দিন কাঁদা, অকারণ ভয় পাওয়া, অসম্ভব সন্দেহবাতিক— এগুলি মানসিক ব্যাধির ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ ঘটনা। স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া বা অন্যান্য কঠিন মনোরোগে আক্রান্ত ব্যাক্তিদের ক্ষেত্রে সমস্যা হয় আরও বেশি।

মানসিক রোগের চিকিৎসা হতে পারে সময়সাপেক্ষ।

মানসিক রোগের চিকিৎসা হতে পারে সময়সাপেক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ দিন ধরে এই ধরনের মানসিক রোগীর যত্ন নেওয়া অসম্ভব ধৈর্যের বিষয়। যাঁরা এই ধরনের মানসিক রোগীর সেবা করে থাকেন, তাঁদের মধ্যেও এক ধরনের অবসাদ, হতাশা, বিরক্তি, উদ্বেগ তৈরি হওয়া খুব সাধারণ ব্যাপার। অবসাদের কারণগুলি নীচে দেওয়া হল:

সময়: মানসিক রোগ দীর্ঘস্থায়ী ব্যাধি। এর থেকে মুক্তি পেতে অনেক সময় লাগে। বহু দিন ধরে চিকিৎসা চালানোর প্রয়োজন হয়। এত দিন ধৈর্য ধরে সেবা করা খুবই ক্লান্তিকর হতে পারে।

অনিশ্চয়তা: মানসিক অসুস্থতার নিরাময় কখনওই নিশ্চিত নয়। রোগীর অবস্থা কখন কী ভাবে পরিবর্তিত হবে, তা-ও বলা যায় না। এতে আরও চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

সামাজিক বিচ্ছিন্নতা: পরিচর্যাকারীরা প্রায়শই নিজেদের জন্য সময় বার করতে পারেন না বা নিজের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে মনোনিবেশ করতে পারেন না। এর ফলে তাঁরা সামাজিক ভাবে বিচ্ছিন্ন বোধ করতে পারেন এবং একাকীত্বেও ভুগতে পারেন।

অর্থনৈতিক সমস্যা: মানসিক রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল হতে পারে।পরিচর্যাকারীরা প্রায়শই তাঁদের প্রিয়জনের যত্নের খরচ বহন করার জন্য অর্থনৈতিক চাপের সম্মুখীন হন।

অপরাধবোধ: শত চেষ্টাতেও রোগের নিরাময় না হলে, অনেক সময় পরিচর্যাকারীরা অপরাধবোধে ভুগতে থাকেন। তাঁরা মনে করতে পারেন যথেষ্ট ভাল ভাবে যত্ন নিতে না পারাই রোগ নিরাময় না হওয়ার কারণ।

অবসাদের লক্ষণ:

১) দুঃখ, হতাশা এবং কোনও কিছুতেই আনন্দ বোধ না করা
২) সর্ব ক্ষণ ক্লান্তি বোধ হওয়া
৩) ঘুমের অসুবিধা বা অতিরিক্ত ঘুমের প্রবণতা
৪) ক্ষুধা বোধের পরিবর্তন এবং ওজনবৃদ্ধি বা হ্রাস
৫) মনোনিবেশ করতে অসুবিধা
৬) সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা
৭) হীনম্মন্যতা
৮) অপরাধবোধ
৯) মৃত্যুচিন্তা বা আত্মহত্যার প্রবণতা

প্রতিরোধ ও চিকিৎসা:

মানসিক রোগীদের পরিচর্যাকারীদের অবসাদের ঝুঁকি কমাতে এবং চিকিৎসা করাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:

সামাজিক সমর্থন: পরিবার, বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে সমর্থন চাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আত্মগ্লানিতে না ভোগা উচিত, রোগীর রোগ নিরাময় না হওয়ার দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে সে ভাবে কোনও লাভ হবে না। নিজের যত্ন নেওয়া: মানসিক রোগীর পরিচর্যাকারীদের নিজের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা তার মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ধাপ। এ ক্ষেত্রে যোগ, ধ্যান বা অন্য কৌশলগুলি অনুশীলন করার চেষ্টা করা যেতে পারে।

সহায়তা চাওয়া: লজ্জা না পেয়ে সাহায্য চাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের সদস্য, বন্ধু, দরকার হলে পেশাদারদের সহায়তা গ্রহণ করা উচিত।

বিরতি: পরিচর্যাকারীদের কিছুটা সময় বিরতি বার করে নিজের ভাল লাগার বিষয় নিয়ে সময় কাটানো গুরুত্বপূর্ণ।

পেশাদারদের সাহায্য: যদি অবসাদের লক্ষণগুলি গুরুতর হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়,তবে পেশাদারের সাহায্য নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

মানসিক রোগীদের যত্ন নেওয়া সহজ নয়। এটি সময়সাপেক্ষ কাজ। তবেপরিচর্যাকারীরা নিজেদের যত্ন না নিলে অবসাদের শিকার হতে পারেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Depression anxiety Mental Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy