কেমোথেরাপি চলাকালীন কী কী নিয়ম মানতে হবে? ছবি: ফ্রিপিক।
ক্যানসার শব্দটির সঙ্গেই যেন আতঙ্ক জুড়ে গিয়েছে। এই রোগ প্রথম পর্যায়ে ধরা পড়লে অস্ত্রোপচারে নির্মূল করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অসুখ যদি আরও ডালপালা মেলে, তখন কেমোথেরাপি, রেডিয়োথেরাপি করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। কেমোথেরাপি করে শরীরের ভিতর ক্যানসার-আক্রান্ত কোষগুলিকে নষ্ট করে দেওয়া হয় ঠিকই, কিন্তু এর সঙ্গেই কিছু সুস্থ কোষও বিনষ্ট হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় রক্তের শ্বেতকণিকা। ফলে শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ শক্তি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। অল্পেই দুর্বলতা, সংক্রামক অসুখবিসুখ সহজেই হানা দেয়। তাই কেমোথেরাপির চিকিৎসা চলার সময়ে একটু বেশিই সতর্ক থাকতে হবে রোগীকে। জেনে নিন, কী কী নিয়ম মানলে সুস্থ থাকা যাবে।
পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। হাত ধুয়ে খাবার খাওয়া উচিত। বাইরে থেকে ফিরলে ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে অথবা স্যানিটাইজ় করতে হবে। সঙ্গে সব সময়ে স্যানিটাইজ়ার রাখা ভাল।
প্রতি দিন স্নান করতে হবে। দিনে অন্তত দুই থেকে তিন বার ব্রাশ করা জরুরি। কেমোথেরাপির সময়ে অনেকেরই মুখের ভিতর ফুস্কুড়ি বা জিভে ঘা হয়। সে ক্ষেত্রে সবসময়ে খাওয়ার পরেই মুখ কুলকুচি করতে হবে। মুখে ঘা হলে অ্যান্টিসেপ্টিক মাউথওয়াশ ব্যবহার করে সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অতিরিক্ত গরম চা, কফি, বেশি ঝালমশলা ও নুন দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
কেমোথেরাপিতে ক্যানসারের কোষ ধ্বংসকারী ওষুধ রক্তের মাধ্যেমে শরীরে প্রবেশ করে। এই ওষুধের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। খিদে কমিয়ে দেয়, ঘুম নষ্ট হতে পারে, কিছু খেলেই বমি বমি ভাব হয়। তাই এই সময়ে খাবার খেতে হবে পরিমিত। একবারে ভারী খাবার খেলে বমি হয়ে যেতে পারে। হাতের কাছে আদা কুচি বা পুদিনা পাতা রাখতে পারেন। বমি ভাব হলে ওষুধ না খেয়ে আদা বা পুদিনা পাতা চিবোলে সমস্যা দূর হবে। পুদিনা পাতার রস হজমশক্তি বাড়াবে, বেশি ভাজাভুজি খাওয়ার ইচ্ছা চলে যাবে।
সংক্রমণ ও জ্বরের প্রবণতা বাড়ে এই সময়ে। স্বাদ-গন্ধের অনুভূতিও চলে যেতে পারে সাময়িক ভাবে। জ্বর হলেই নিজে থেকে ওষুধ খাবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও রকম ওষুধ খাওয়া বা সাপ্লিমেন্ট নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
কেমোথেরাপি চলার সময়ে মুখের অভ্যন্তরের লালাগ্রন্থির কাজ কিছুটা ব্যাহত হয় বলে মুখের লালা নিঃসরণ কমে যায়। তাই খাবার গিলতে কষ্ট হয়। তাই এই সময়ে পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে। বাড়িতে তৈরি শরবত, টাটকা ফলের রস বার বার খেতে হবে। কিন্তু দোকান থেকে কেনা প্যাকেটজাত ফলের রস বা বেশি চিনি দেওয়া পানীয় একেবারেই খাওয়া ঠিক হবে না। তামাকজাত নেশা বন্ধ করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে, রোজকার ডায়েটে টাটকা শাকসব্জি, ফল, গ্রিন টি, ছোট মাছ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy