কোন রোগে রক্ত জমাট বাঁধছে মস্তিষ্কে? ফাইল চিত্র।
শারীরিক অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে বিনোদ কাম্বলির। ৫২ বছরের প্রাক্তন ক্রিকেটারের মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধছে বলে জানা গিয়েছে। ঠাণের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে কাম্বলির। তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে এখনও বিশদ জানা না গেলেও, হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে শরীরে সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়েছে তাঁর। টান ধরছে পেশিতে। এর আগেও তাঁর এক বার স্ট্রোক হয়েছিল। সে লক্ষণও ধরা পড়েছে।
মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে কোনও কারণে রক্তক্ষরণ ঘটলে অক্সিজেন সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে। এই কারণে মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে যে ধরনের শারীরিক অবনতি দ্রুত শুরু হয়, সেটাই হল স্ট্রোক। দেহের রক্তের মাত্র দুই শতাংশ মস্তিষ্ক ব্যবহার করে। কিন্তু মস্তিষ্কের কোষ অত্যন্ত সংবেদনশীল, সেই কারণে অক্সিজেন বা শর্করা সরবরাহে সমস্যা হলে দ্রুত এই কোষগুলো নষ্ট হয়ে যায়। তখন রক্ত জমাট বাঁধতে থাকে। নানা কারণে এমন হতে পারে।
এই বিষয়ে স্নায়ুরোগ চিকিৎসক অনিমেষ কর জানিয়েছেন, বিনোদ কাম্বলির শারীরিক অবস্থা যা জানানো হয়েছে, তাতে তাঁর শরীরে পটাশিয়াম-সোডিয়ামের ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম মিলেই তৈরি হয় মানবদেহের ইলেক্ট্রোলাইটস পরিবার। এ সব উপাদানের পরিমাণ কম-বেশি হলেই ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। এই ইলেক্ট্রোলাইট পরিবারের কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্নায়ু, পেশি ও হার্টের পরিচালনায় বড় ভূমিকা রয়েছে ইলেক্ট্রোলাইটের। তাই এদের পরিমাণে যদি অসামঞ্জস্য থাকে, তা হলে হার্টের রোগ, স্ট্রোক, এমনকি জীবনহানি অবধি হতে পারে।
অনেক সময়ে বেশি স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেলে শরীরে খনিজ উপাদানের ভারসাম্য নষ্ট নয়। রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কম হলে তাকে বলে হাইপোনেট্রিমিয়া। তখন পেশিতে টান ধরা, পেশির অসাড়তা, খিঁচুনি, রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা হতে পারে। মনের উপরেও তার প্রভাব পড়ে। রোগীর চিন্তাভাবনা গুলিয়ে যাবে, রোগী তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়বেন, তাঁর আচরণে বদল আসবে। আবার পটাশিয়ামের মাত্রা কমে গেলে যে রোগ হয় তাকে বলে হাইপোক্যালিমিয়া। দীর্ঘ দিন ধরে পটাশিয়ামের মাত্রা কম হলে পক্ষাঘাত, রক্ত জমাট বাঁধার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কার্ডিয়োভাস্কুলার রোগের অন্যতম বড় কারণই হল হাইপোক্যালিমিয়া। কাম্বলির এই কারণেও রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, স্থূলতা, ডায়াবিটিস, রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব শরীরে খনিজ উপাদান ও হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে। এগুলিও কিন্তু স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এখন আর কেবল বয়সকালেই যে স্ট্রোক হচ্ছে তা নয়, কম বয়সেও হানা দিচ্ছে এই অসুখ। তবে এর উপসর্গ দেখা দেয় আগেই। অত্যধিক শারীরিক দুর্বলতা, হাঁটাচলার সময়ে শরীরের ভারসাম্য না থাকা, জিভের জড়তা, কথা বলার সময়ে মুখ এক দিকে বেঁকে যাওয়া— এই সব লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy