কলেরার টিকা তৈরি করেছে ভারত বায়োটেক। ছবি: ফ্রিপিক।
পোলিওর টিকার মতো কলেরার টিকাও মুখে নেওয়া যাবে। অর্থাৎ খাওয়ার ওষুধের মতোই। হিলেম্যান ল্যাবরেটরির সহযোগিতায় কলেরার এই প্রতিষেধক তৈরি করেছে ভারত বায়োটেক। তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থার। কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থার অনুমোদন পেলে এই টিকা দেশের বাজারে নিয়ে আসা হবে বলে জানানো হয়েছে সংস্থার তরফে।
কলেরার নতুন টিকার নাম হিলচল (বিবিভি১৩১)। এটি একটি ‘ওরাল ভ্যাকসিন’। টিকাটির প্রক্রিয়াকরণ থেকে শুরু করে বাজারে আনার জন্য হিলেম্যান ল্যাবেটরির সাহায্য নিয়েছে ভারত বায়োটেক। টিকার কথা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে ভারত বায়োটেকের তরফে। যদিও এখনও পর্যন্ত শুধু প্রাণীদেহেই পরীক্ষা করা হয়েছে এই টিকাটি। তবে, প্রথম ডোজ় নেওয়ার পরই দেখা গিয়েছে, কলেরার সংক্রমণ কমানোর ক্ষমতা রয়েছে এই প্রতিষেধকের। ভারত বায়োটেকের তরফে দাবি করা হয়েছে, এই টিকা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়িয়েছে, তেমনই উন্নত করেছে রোগ প্রতিরোধক প্রতিক্রিয়া বা ইমিউন রেসপন্সও।
কলেরার এই প্রতিষেধক খাওয়ানো হবে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ১৪ দিনের ব্যবধানে দু’টি ডোজ় দেওয়া হবে প্রতিষেধকের। যদিও এই টিকা এখনও মানবদেহে পরীক্ষা করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফে কিছু জানানো হয়নি।
দেশে একটা সময়ে কলেরা মহামারির মতো ছড়াত। এই রোগ এখন অনেকটাই দমন করা গেলেও, পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। বর্ষাকাল এলেই কলেরার সংক্রমণ বেড়ে যায় অনেক জায়গাতেই। ভিব্রিও কলেরি নামক একটি ব্যাক্টিরিয়ার প্রভাবে এই রোগ ছড়ায়। পানীয় জলের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। কলেরার সংক্রমণ হলে জ্বর, ওজন কমে যাওয়া, আকস্মিক তীব্র জলশূন্যতা, মাথা ঘোরানো, বমিভাব, হজমের সমস্যা, নিম্ন রক্তচাপের মতো বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। একবার এই ব্যাক্টিরিয়া মানুষের শরীরে ঢুকলে তার উপসর্গ দেখা দিতে সময় লাগতে পারে দুই থেকে তিন দিন। এই ব্যাক্টিরিয়া এক ধরনের এন্টেরোটক্সিন তৈরি করে, যা আচমকা শরীরে জলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে পেটের রোগ, বমি ও জলশূন্যতায় মৃত্যুও হতে পারে রোগীর।
ভারত বায়োটেক জানিয়েছে, কলেরার প্রতিষেধক বাজারে চলে এলে এই রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকটাই কমে যাবে। সংস্থার দাবি, প্রতিষেধকটি যদি সার্বিক ভাবে চালু করা যায়, তা হলে ২০২৩ সালের মধ্যে কলেরার প্রকোপ ৯৮ শতাংশ কমে যাবে। প্রতিষেধকটির প্রায় ২০ কোটি ডোজ় তৈরির ভাবনা রয়েছে টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থার। বিশ্ব জুড়ে কলেরার এই প্রতিষেধক ছড়িয়ে দিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে অনুমোদনের আবেদনও পেশ করেছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy