Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Effects of Sugar Free

ডায়াবিটিসের রোগীদের কি কৃত্রিম চিনি খাওয়া উচিত? কী কী শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে?

চা-কফি, রোজের রান্নায় দেদার কৃত্রিম চিনি মেশাচ্ছেন? দোকান থেকে কেনা ডায়েট পানীয়তেও কিন্তু প্রচুর পরিমাণে কৃত্রিম চিনি থাকে। রোজ খেতে শুরু করলে কী কী হতে পারে?

Are Artificial Sweeteners Safe for People With Diabetes

কৃত্রিম চিনি ভাল না খারাপ? ছবি: ফ্রিপিক।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৪ ১৩:১৬
Share: Save:

রান্নাবান্না থেকে চা-কফি, ডায়াবেটিকদের সবেতেই ভরসা কৃত্রিম চিনি। রক্তে শর্করার মাত্রা যাতে না বেড়ে যায়, সে জন্যই দোকান থেকে কৃত্রিম চিনি কিনে খান ডায়াবিটিসের রোগীরা। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, চিনির বদলে কৃত্রিম চিনি খাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু এটি যদি বেশি পরিমাণে রক্তে মেশে, তা হলে ভালর বদলে খারাপই হবে বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দাবি করেছে, কৃত্রিম চিনি টাইপ ২ ডায়াবিটিসের কারণ হতে পারে। শুধু তা-ই নয়, বেশি পরিমাণে রক্তে মিশলে হার্টের অসুখ হওয়ারও সম্ভাবনা আছে। মেডিক্যাল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’-এর গবেষণাও সে কথাই বলছে।

অনেকেই ভাবেন, চিনির বদলে কৃত্রিম চিনি খেলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যাওয়ার ভয় থাকে না। তাই ‘আর্টিফিশিয়াল সুইটনার’-এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। বাজারে বিভিন্ন রকম কৃত্রিম চিনি পাওয়া যায়, যার মধ্যে সুক্রালোজের ব্যবহারই বেশি। বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, সামান্য পরিমাণে কৃত্রিম চিনি খেলে ততটা ক্ষতি হয় না। কিন্তু সারা দিনে যদি মুঠো মুঠো কৃত্রিম চিনি খাওয়া হয়, তা হলে এর খারাপ প্রভাবই পড়বে শরীরে। ডায়াবিটিসের রোগীরা কেবল নন, ওজন কমাতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরাও এখন কৃত্রিম চিনি খাওয়া শুরু করেছেন। চা, কফি, শরবত সবেতেই কৃত্রিম চিনি মেশাচ্ছেন। তা ছাড়া বাজারে যে ডায়েট পানীয় পাওয়া যায়, তাতেও প্রচুর পরিমাণে কৃত্রিম চিনি মেশানো থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

কৃত্রিম চিনি ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এতে পুষ্টিকর উপাদানও নেই। মূল উপাদানগুলি হল— অ্যাসপার্টেম, সুক্রোজ়, সুক্রালোজ়, স্যাকারিন, নিওটেম এবং স্টিভিয়া। যে কোনও প্রক্রিয়াজাত খাবার, ডায়েট পানীয়, প্যাকেটজাত খাবারে কৃত্রিম চিনি মেশানো থাকে। এখন তো আবার দাম কমাতে কৃত্রিম চিনিতে ভেজালও মেশানো হচ্ছে। দেখা গিয়েছে, সিলিকা-সহ নানা ধরনের ক্ষতিকর উপাদান মিশছে কৃত্রিম চিনিতে যা শরীরে ঢুকলে লিভার ও কিডনির রোগের ঝুঁকি বাড়বে। তাই গবেষকেরা পরামর্শ দিচ্ছেন, মিষ্টি জাতীয় কিছু খেতে ইচ্ছা করলে কৃত্রিম চিনি দেওয়া খাবারের বদলে ফল খাওয়া ভাল।

সাধারণ চিনির তুলনায় কৃত্রিম চিনির মিষ্টত্ব অনেক বেশি। কৃত্রিম চিনিতে যে সুক্রালোজ় থাকে, তা চিনির তুলনায় অনেক গুণ বেশি মিষ্টি হয়। এই উপাদান রক্তে মিশতে শুরু করলে তা ক্যানসারের মতো মারণরোগের কারণও হতে পারে। হার্টের রোগ, মাইগ্রেন, এমনকি স্নায়ুর বিভিন্ন অসুখের কারণও হতে পারে কৃত্রিম চিনি। কৃত্রিম চিনি ত্বকেরও ক্ষতি করে। নিয়মিত খেতে থাকলে ত্বক নিষ্প্রাণ হয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে বাড়তে পারে উদ্বেগ। মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর উপরেও খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে কৃত্রিম চিনি।

পুষ্টিবিদেদেরও পরামর্শ, কৃত্রিম চিনির বদলে গুড়, নারকেলের চিনি খেতে পারেন। কৃত্রিম চিনি দেওয়া মিষ্টি বা পানীয়ের বদলে খেজুর খান। আয়রন, ফাইবার, পটাশিয়াম, কপার, ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিন বি৬-এর গুণে ভরপুর খেজুর শরীরের জন্য খুব উপকারী। তা ছাড়া কিশমিশ খাওয়া যেতে পারে। কিশমিশে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, আয়রন, ক্যালশিয়াম এবং বোরন। যা ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্যও উপকারী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE