সাধারণত ২৮ থেকে ৩০ দিন পর পর মেয়েদের ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৩০-৩৫ দিনও হতে পারে। তবে তার চেয়ে বেশি দেরি হলেই সেটাকে অনিয়মিত বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। অনেকেই আছেন যাঁদের দু’-তিন মাসে এক বার ঋতুস্রাব হয়। ঋতুস্রাব অনিয়মিত হলে মহিলাদের নানা রকম শারীরিক সমস্যা হয়। যেমন ৪-৫ দিনের বদলে ৭ দিনেরও বেশি রক্তক্ষয় হতে পারে। তলপেটে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হতে বা পেটের পেশিতে টান লাগতে পারে। বমির প্রবণতাও বেড়ে যেতে পারে।
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের অনেক কারণ থাকতে পারে। হঠাৎ খুব ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম , জরায়ুতে সমস্যা কিংবা আরও জটিল কোনও শারীরিক সমস্যা ইত্যাদি। তাই অনিয়মিত ঋতুস্রাব হলে তার সঠিক কারণ জানা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:
কী কী কারণে এমনটা হতে পারে?
১) হরমোনের হেরফের:
মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, শরীরচর্চার অভাবে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। অনেকেই থাইরয়েডের সমস্যায় ভোগেন। আবার পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের সমস্যাও থাকে বহু মহিলার। সেই কারণেও দু’টি ঋতুচক্রের ব্যবধান এগিয়ে বা পিছিয়ে যেতে পারে।
২) ঋতুচক্রের ব্যবধান কম হওয়া:
আবার বহু মহিলাই রয়েছেন যাঁদের দু’টি ঋতুচক্রের মধ্যে ব্যবধান ২১ দিনের কম। সে ক্ষেত্রে এক মাসে দু’বার ঋতুস্রাব হওয়া স্বাভাবিক। তবে সকলের ক্ষেত্রে যে হিসাব মিলবে, তা না-ও হতে পারে। প্রত্যেকের শরীরে গঠন আলাদা। কার ক্ষেত্রে কোনটি স্বাভাবিক, তা একমাত্র চিকিৎসকেরাই নির্দিষ্ট করে বলে দিতে পারেন।
৩) ডিম্বস্ফোটনের সময়ে রক্তপাত:
একটি ঋতুচক্র শেষ হয়ে আরও একটি শুরু হওয়ার মাঝের কয়েকটি দিনকে ডিম্বস্ফোটনের সময় বলে ধরে নেওয়া হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যা ‘ফার্টাইল উইন্ডো’ নামে পরিচিত। এই সময়টাতেও বহু মহিলার রক্তপাত হয়। এর সঙ্গে ঋতুস্রাবের কোনও সম্পর্ক নেই।
আরও পড়ুন:
৪) জন্মনিরোধকের প্রভাব:
প্রথম বার জন্মনিরোধক ওষুধ খেতে শুরু করলে কিংবা ডিভাইস শরীরে প্রতিস্থাপন করলে হঠাৎ রক্তপাত হতে পারে। আবার, এই ধরনের প্রতিরোধকের ব্যবহার বন্ধ করে দিলেও একই রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন মহিলারা।
৫) জরায়ুর সমস্যা:
এ ছাড়া জরায়ুতে ফাইব্রয়েড, সিস্ট বা টিউমার থাকলে একই মাসে দু’বার ঋতুস্রাব দেখা দিতে পারে। আবার, বয়ঃসন্ধিতে ঋতুচক্র শুরু সময়ে কিংবা রজোনিবৃত্তিকালেও অনিয়মিত ঋতুচক্র দেখা দিতে পারে।