বরফের চাদরে ঢাকা লেকের এক পাশে ছোট্ট একটুখানি গর্ত। সেই ছোট্ট জায়গা দিয়েই কয়েক জন বন্ধু আদুল গায়ে নেমে পড়ছেন বরফজলে। কোনও স্টান্ট বা চ্যালেঞ্জ নয়, তরুণ প্রজন্মের কাছে এই কনকনে বরফজলে ঝাঁপ দেওয়া অনেকটা থেরাপির মতো। ইদানীং সমাজমাধ্যমে চোখ রাখলে প্রায়শই দেখা যায় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা বাথটবে এমন বরফজলে গা ডুবিয়ে বসে রয়েছেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, বরফজলে স্নান করার অভ্যাসে শরীর এবং মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেললেও, তা সকলের জন্য উপযুক্ত নয়। বিশেষ করে বয়স্ক এবং শিশুদের ক্ষেত্রে তা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আরও পড়ুন:
বরফজলে ঝাঁপ দিলে কী লাভ হয়?
১) শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়
বরফগলা জল দেহে সঠিক ভাবে রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালন ভাল হলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন পৌঁছে যায় সহজেই।
২) পেশির ব্যথা বা প্রদাহ কমে
শরীরচর্চা করেই হোক বা অন্য যে কোনও কারণে, দেহে প্রদাহ হলে তা নির্মূল করতে পারে এই কনকনে ঠান্ডা জল। শরীরচর্চা করার পর পেশিতে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। সামান্থার ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয় না। পেশির এই ব্যথা নির্মূল করতে পারে বরফ গলা জল।
৩) অবসন্ন মন তরতাজা করে
পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবনের চাপ সামাল দিতেই কি সামান্থা এমন কনকনে জলে স্নান করছেন? চিকিৎসকেরা বলছেন, এমন ঠান্ডা জলে স্নান করলে এক প্রোটিনের ক্ষরণ বাড়ে। যা মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
৫) প্রতিরোধ ক্ষমতা মজবুত করে
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উদ্দীপক হিসাবে কাজ করে ঠান্ডা। অনেকেই মনে করেন, কনকনে ঠান্ডা জলে স্নান করলে চট করে ঠান্ডা লাগা, সংক্রমণজনিত সমস্যা বা ফ্লু-এর মতো রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
আরও পড়ুন:
বরফজলে স্নান করলে কী ধরনের ঝুঁকি থেকে যায়?
১) সারা শরীর অবশ হয়ে যেতে পারে। কনকনে ঠান্ডা জলে ৫ থেকে ১০ মিনিট ডুবে বসে থাকলে আঙুল, হাত, পা-সহ অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়া করার ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।
২) বাথটব বা বরফ জমা লেকের জলে কিছু ক্ষণ ডুব দেওয়ার পর কোল্ড শকে চলে যেতে পারেন কোনও ব্যক্তি। শ্বাসকষ্ট, ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া, হৃদ্স্পন্দনের গতিও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
৩) বাইরের আবহাওয়ার সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে শরীরের মধ্যেই তাপ সঞ্চার করতে পারে। কিন্তু ঠান্ডা জলে বেশ কিছু ক্ষণ ডুবে থাকলে, স্বাভাবিক এই প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটে। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে ‘হাইপোথারমিয়া’ বলা হয়। যার ফলে দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে চলে যেতে পারে।