কাজ করতে করতে ঢুলে পড়ছিলেন। অথচ, বাড়ি ফিরে যেই বিছানায় শুতে গেলেন, অমনি ঘুম কোথায় পালিয়ে গেল! যত রাজ্যের কাজ, আজগুবি চিন্তাভাবনা মাথায় ভিড় করে আসতে শুরু করে ঠিক এই সময়েই। হাবিজাবি ভাবতে ভাবতে আবার ফোনে হাত চলে যায়। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে চোখ বুলিয়েই ঢুকে পড়েন ই-কর্মাস সাইটগুলোয়। ব্যস! তার পর ঘুম বাবাজি পগারপার।
কিন্তু রাতের পর রাত এই ভাবে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটলে শরীর তো খারাপ হবেই, শেষে ইনসমনিয়া বা অনিদ্রাজনিত সমস্যাতেও ভুগতে হতে পারে। তখন ঘুমপাড়ানি ওষুধই ভরসা। তবে যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, এই ধরনের সমস্যা দূর করতে পারে কূর্মাসন। সংস্কৃতে ‘কূর্ম’ শব্দটির অর্থ হল কচ্ছপ। এই আসন অভ্যাস করার সময়ে দেহের ভঙ্গি অনেকটা এই প্রাণীটির মতোই হবে। এই ভঙ্গি অভ্যাস করা সহজ নয়। তবে কূর্মাসনের সহজ ধাপও রয়েছে। শিখে নিন পদ্ধতি।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে করবেন?
· প্রথমে ম্যাটের উপর পিঠ, কোমর টান টান করে বসুন। পা দু’টি সামনের দিকে ছড়িয়ে রাখতে হবে। শ্বাস-প্রশ্বাস যেন স্বাভাবিক থাকে।
· দুই হাঁটু সামান্য ভাঁজ করে রাখুন। ঊরু এবং হাঁটুর অবস্থান হবে অনেকটা পর্বতের চূড়ার মতো, অর্থাৎ ত্রিভুজাকৃতির।
· দুই পায়ের পাতা মাটি থেকে তুলে রাখতে হবে। কিন্তু গোড়ালি যেন মাটি স্পর্শ করে থাকে।
· এ বার নিতম্ব, কোমরের পেশি থেকে শরীরের উপরিভাগ টেনে সামনের দিকে নিয়ে আসুন। দুই হাঁটুর মধ্যে যেন যথেষ্ট ব্যবধান থাকে। কোমর থেকে শরীরের উপরিভাগ ঠিক ওই জায়গায় আসবে।
· এ বার দু’টি হাত দু’টি হাঁটুর তলা দিয়ে গলিয়ে দু’দিকে ছড়িয়ে দিন। ধীরে ধীরে হাঁটু দু’টি মাটির কাছাকাছি নামিয়ে আনতে চেষ্টা করুন। পুরো শরীরটাকেই সেই অনুযায়ী টেনে আনতে হবে।
· শরীরের উপরিভাগ এতটাই নামিয়ে আনতে হবে, যেন থুতনি মাটি স্পর্শ করে থাকে।
· দু’দিকে প্রসারিত দু’টি হাতের উপর ছড়ানো থাকবে দু’টি পা। একেবারে মাটির সমান্তরালে আনতে না পারলে ত্রিভুজাকৃতি অবস্থানেও রাখতে পারেন।
· এই ভাবে অন্ততপক্ষে ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত থাকুন। আবার ফিরে যান প্রথম অবস্থায়। এই ভাবে পাঁচ বার পর্যন্ত অভ্যাস করতে পারেন কূর্মাসন।
আরও পড়ুন:
কেন করবেন?
মেরুদণ্ড, পেট, নিতম্ব, হ্যামস্ট্রিং এবং কাঁধের পেশি মজবুত হয় কূর্মাসনে। এই সব অংশে ব্যথা-বেদনা থাকলে, তাতেও আরাম মেলে। রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সাহায্য করে এই আসন। শ্বাসযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং হজম সংক্রান্ত গোলমাল নিয়ন্ত্রণে থাকে নিয়মিত কূর্মাসন অভ্যাস করলে।
আরও পড়ুন:
সতর্কতা:
ঘাড়, হ্যামস্ট্রিং, কাঁধে চোট, আঘাত লেগে থাকলে এই আসন করতে যাবেন না। লাম্বার স্পাইনে চোট থাকলেও তা গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। সায়াটিকা, হার্নিয়া, স্লিপ ডিস্কের সমস্যায় এই আসন করা নিষিদ্ধ। অন্তঃসত্ত্বারাও পেট মুড়ে এই আসন করতে পারবেন না।